পূর্বধলায় দুই জীবিত ব্যক্তিকে মৃতের সার্টিফিকেট!

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০০

পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
নেত্রকোনার পূর্বধলায় জীবিত দুই ব্যক্তিকে মৃতের সার্টিফিকেট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার দুই ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ফলে তাদের নামের বরাদ্দকৃত বয়স্ক ভাতাও বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভুক্তভোগীদের একজন প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগীদের দাবি- সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার, সমাজসেবা অফিসার মিলে তাদের মৃত দেখিয়ে তাদের স্থলে অপরজনকে ভাতাভোগীর সুবিধা করে দিয়েছেন। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানদের দাবি- তাদের ভুলের কারণে এমনটি হয়েছে। ভুক্তভোগীরা হলেন, খলিশাউড় ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের গড়ুয়াকান্দা গ্রামের মৃত জহুর আলীর ছেলে হযরত আলী (৭১)। অপরজন হলেন হোগলা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের জামিরাকান্দা গ্রামের মৃত সুরুজ আলী ফকিরের স্ত্রী জহুরা খাতুন (৭৭)। হযরত আলী লিখিত অভিযোগে দাবি করেন- তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ উপকারভোগী হিসেবে বয়স্কভাতা পেতেন। গত দুই সেশনে তার মোবাইল একাউন্টে টাকা না আসায় বিষয়টি সমাজসেবা অফিসে খোঁজ নেন। সেখানে সমাজসেবা অফিসার জানান, খলিশাউড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কমল কৃষ্ণ সরকারের দেওয়া প্রত্যয়ন মোতাবেক তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। পরবর্তীতে তার নামে বরাদ্দকৃত বয়স্কভাতা অন্য উপকারভোগীর নামে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। অপর ভুক্তভোগী জহুরা খাতুনের অভিযোগ, তিনিও নিয়মিত বয়স্কভাতা ভোগী ছিলেন। ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমাজসেবা অফিসে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন- তাকেও ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আকন্দ খোকনের স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নে মৃত দেখিয়ে ভাতা বন্ধ করে দিয়ে অপর আরেকজনের নামে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়টি তিনি তার ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছেন। খলিশাউড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কমল কৃষ্ণ সরকার জানান, একই গ্রামের হযরত আলী নামে দুই ব্যক্তির এক ব্যক্তি মারা গেলে ভুলবশত জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখানো হয়েছে। এই ভুল সংশোধনের জন্য ইতোমধ্যে সমাজসেবা অফিসে কাগজ পাঠানো হয়েছে। হোগলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম আকন্দ খোকন বলেন, 'আমার অজান্তে ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ভুলবশত এমনটি করেছে। তবে ভুল সংশোধনের জন্য ইতোমধ্যে আমি কাগজপত্র নিয়ে সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করেছি এবং অতি দ্রম্নতই এই সমস্যার সমাধান হবে।' উপজেলা সমাজসেবা অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, 'সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা মৃতু্য সনদ ইসু্য করে প্রতিস্থাপনের সুপারিশ পাঠানোর প্রেক্ষিতে ভাতাভোগী দুইজনকে মৃত দেখিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। আমরা যেহেতু প্রকৃত বিষয়টি জানতে পেরেছি, কয়েকদিনের মধ্যে সংশোধন করব।' ইউএনও খবিরুল আহসান জানান, 'জীবিত ব্যক্তিকে মৃতের সার্টিফিকেট দিয়ে তার ভাতা কেটে অন্যজনের নামে প্রতিস্থাপনের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে, ঘটনার সত্যতা সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'