মাধবদীতে সেতুর পাইলিংয়ের কারণে বিদ্যালয়ের ভবন ধসের শঙ্কা

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০০

মাধবদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি
নরসিংদীর মাধবদীতে পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মাণাধীন সেতুর পাইলিংয়ের গর্তের হুমকির মুখে নুরালাপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভবন -যাযাদি
নরসিংদীর মাধবদীতে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মাণাধীন সেতুর পাইলিংয়ের জন্য গর্তের ফলে নুরালাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই তলা ও তিন তলা ভবন ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে শঙ্কায় আছে বিদ্যালয়টির কমিটি, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসী। দ্রম্নত ব্যবস্থা না নিলে নদীতে বিলীন হতে পারে স্কুলের মূল ভবন। জানা যায়, কয়েক বছর আগে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের খনন কাজের সময় বিদ্যালয় সংলগ্ন নুরালাপুর ও গদাইরচর গ্রামের মধ্যে সংযোগ সেতুটির পিলারের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে সেতুটি ধসে যায়। পরে কয়েক দফায় সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা শেষ না করেই চলে যায়। সর্বশেষ গত বছর পুনরায় সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলে নুরালাপুর উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সেতু সংলগ্ন স্কুলের টিনশেড বিল্ডিংটি ভেঙে দিতে বলে। তখন স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সেতুর কাজ করার কথা জানায়। পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে স্কুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে মর্মে টিনশেড বিল্ডিং ভাঙার অনুমতি পায়। পরে সেখানে সেতুর পাইলিংয়ের কাজে গর্ত করে সেতু নির্মাণ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু হঠাৎ শোনা যাচ্ছে বর্তমানে কর্মরত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিও কাজ ফেলে চলে গেছে। এ অবস্থায় গত কয়েকদিন আগের বৃষ্টিতে স্কুলের বিদ্যালয়টির মূল ভবনের ফাউন্ডেশনের পিলারের নিচ থেকে মাটি ধসে নদীতে পড়ে যায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেকোনো সময় ভবনটি হেলে পড়তে পারে। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে ভবনটি ধসে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করছে সবাই। এ বিষয়ে নুরালাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস কামাল জানান, প্রথম যখন সেতুটি ভেঙে পড়ে তখন সেতুর কাজ করার সময় স্কুলের টিনশেড বিল্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে তৎকালীন চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম ফয়সাল গাছের গুঁড়ি দিয়ে প্রোটেকশন দেন। কিছুদিন পর অজ্ঞাত কারণে সেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ রেখে চলে যায়। এখন আবার যখন নতুন করে কাজ করতে আসে তখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বর্তমান চেয়ারম্যানসহ স্কুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কাজ করবেন বলে জানান। সিদ্ধান্ত হওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অরক্ষিতভাবে পাইলিংয়ের জন্য টিনশেড বিল্ডিং ভেঙে গর্ত করে। কিন্তু বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও কাজ রেখে চলে যায়। গত রেমালের ঝড়-বৃষ্টির সময় টিনশেড বিল্ডিং ধসে দুইতলা বিল্ডিং পর্যন্ত মাটি সরে গেছে। বর্তমানে দুই তলা বিল্ডিংটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নুরালাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আইনুল হক জানান- 'সেতু নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আসলে আমরা স্কুলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে সেতুর কাজ করতে বলি। পরে বর্তমান চেয়ারম্যান আরিফ হোসেন সেতুর কাজ শেষে নিজে স্কুলের টিনশেড বিল্ডিংটি করে দেবেন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করবেন বলেন। এখন আবারও সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন যেহেতু বৃষ্টির মৌসুম, যেকোনো সময় স্কুলের দুইতলা ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যদি দ্রম্নত ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে ভবনটি একাংশ ভেঙে পড়তে পারে। সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রম্নত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই।'