চতুর্থ ধাপে উপজেলা নির্বাচন

সব প্রস্তুতি শেষ, কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
বরগুনার তালতলীতে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে যাচ্ছেন প্রিজাইডিং অফিসাররা -যাযাদি
আজ ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ও শেষ ধাপের ভোটগ্রহণ। এরই মধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে ব্যালটবাক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম। তবে আজ বুধবার সকালে ভোটের আগে কঠোর নিরাপত্তায় কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে ব্যালট পেপার। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট- ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, আজ দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ও শেষ ধাপের ভোটগ্রহণ। উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নির্বাচনী সরঞ্জাম বুঝে নিয়েছেন প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা। সেগুলোকে নিরাপত্তা দিয়ে কেন্দ্রে নিয়ে গেছেন আনসার ও পুলিশ সদস্যরা। ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তায় পুলিশ ওর্ যাবের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রশাসনিক সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট এক লাখ ৫২ হাজার ৪৭৮ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৬ হাজার ২৭৩ জন, নারী ভোটার ৭৬ হাজার ২০৪ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন মাত্র একজন। ৬৩টি কেন্দ্রের ৪৩৫টি বুথে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনের ভোট গ্রহণের জন্য উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার মোট ৬৩টি ভোট কেন্দ্রের জন্য ৭০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৪৩৫ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৮৭০ জন পুলিং অফিসারকে নিয়োগ করা হয়েছে। এদিকে ভোটের দিন পুরো নির্বাচনী এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা থাকবে বলে জানিয়েছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও মীর মো. আল কামাহ তমাল। তিনি বলেন, নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ করা হচ্ছে। ভোটগ্রহণের দিন সকালে ব্যালট পেপার পৌঁছে দেওয়া হবে। নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত থাকবেন ৮ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, ১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ১১৭ জন পুলিশ, ৩ পস্নাটুনর্ যাব, ৩ পস্নাটুন বিজিবি ও ৯২০ জন আনছার সদস্য। এছাড়া টহলে থাকবে পুলিশ,র্ যাব ও ব্যাটালিয়ান আনছারের এস্ট্রাইকিং ফোর্স। তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি জানান, বরগুনার তালতলীতে নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। আজ সকালে কেন্দ্রে যাবে ব্যালট পেপার। এর আগে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী প্রচারণা গত সোমবার মধ্য রাতে শেষ হয়েছে। এদিকে ১২টি ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার নির্বাচন কার্যালয় হতে এই সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। পরে নির্বাচনের জন্য ব্যালট বাক্সসহ অন্যান্য নির্বাচনী সরঞ্জাম ভোটকেন্দ্রগুলোতে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের পাহারায় নিয়ে গেছেন। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ, অর্থাৎ শেষ ধাপের নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা গত সোমবার মধ্য রাতে শেষ হয়েছে। প্রচারের শেষ দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সক্রিয় ছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। ছুটেছেন প্রার্থীদের দ্বারে দ্বারে। দিয়েছেন বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রম্নতি। প্রার্থীরা রাত থেকেই মাইকিং ছাড়াই ভোটারদের বাড়িঘরে গিয়ে দেখা-সাক্ষাৎ করছেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হচ্ছেন- বর্তমান চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির, সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান। ৭ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলা। তাই ভোটারদের বাড়ি ঘুরে দেখা করে ভোট চাইতে গিয়ে প্রার্থীদের দমফাটা অবস্থা। এদিকে তিনজন ভাইস চেয়ারম্যান ও দুইজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ৩৩ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ ১২টি, অধিক গুরুত্বপূর্ণ ৬টি ও সাধারণ কেন্দ্র ১৫টি। এসব কেন্দ্রে ৭টি মোবাইল টিম, স্টাইকিং টিম, স্পেশাল মোবাইল টিম ও ৪ পস্নাটুন বিজিবি ও আনসার টিম কাজ করবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুপমা বলেন, কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার হবে। এর আগে অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে। নির্বাচনের দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৭ ইউনিয়নে ৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করবেন। তাছাড়া অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের হিসেবে আমি ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রয়েছেন। নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি বুঝিয়ে দেন। প্রতিটি কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্তরা নির্বাচনী সরঞ্জামাদি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভোট কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে। এবার নির্বাচনে উপজেলার ৭৩ ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৯৪ হাজার ৭৫ জন। অবাধ-নিরপেক্ষ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সহকারী রিটার্নিং অফিস কর্তৃক প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং, পোলিং অফিসার ছাড়াও সার্বিক নিরাপত্তাসহ আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনে বিজিবি,র্ যাব, পুলিশ, স্ট্রাইকিং ফোর্স, আনসার ভিডিপি সদস্য, গ্রাম পুলিশ মোতায়েনসহ সংশ্লিষ্ট অন্য জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাৎক্ষণিক আইনগত সহায়তা প্রদান ও ম্যাজিস্ট্রেরিয়াল দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও নিয়োজিতরা তাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করবেন। ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, আজ বুধবার ভৈরব উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার ভৈরব সহকারী রিটার্নিং আফিসারের কার্যালয় থেকে এখানকার ৯২টি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারদের সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে নির্বাচনী দ্রব্যাদি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা ওইসব প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও নিরাপত্তাকর্মী নিয়ে যার যার কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। তবে ব্যালট পেপার আজ সকালে সব কেন্দ্রে সরবরাহ করা হবে। নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সহকারী রিটার্নিং আফিসার ও ইউএনও শাকিলা বিনতে মতিন এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদুয়ান আহমেদ রাফি ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা প্রলয় কুমার সাহা। নির্বাচনে ৯২টি ভোট কেন্দ্রের প্রতিটি কেন্দ্রে ২ জন পুলিশ, ১২ জন আনসার সার্বক্ষণিক থাকবে। তাছাড়া পুলিশ ওর্ যাবের মোবাইলটিম থাকবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ৩ পস্নাটুন বিজিপি নির্বাচনী এলাকায় টহল দেবে। সঙ্গে থাকবেন ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিট্রেট। ভৈরব উপজেলায় ২ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪২ জন ভোটার ৯২টি কেন্দ্রের ৬০১টি বুথে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনে ৪ জন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) ৪ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।