এবার কোরবানিতে গাংনীর হাট মাতাবে 'কালো পাহাড়'

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০০

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী (মেহেরপুর)
মেহেরপুরের গাংনীতে প্রবাসীর স্ত্রী চায়না বেগমের লালন-পালন করা গরু 'কালো পাহাড়' -যাযাদি
কালো কুচকুচে আর বেশ উঁচু। নাম 'কালো পাহাড়'। না এটি কারো নাম নয়। প্রবাসীর স্ত্রী চায়না বেগমের বাড়িতে পালন করা একটি গরুর নাম। এবার হাট মাতাবে এ কালো পাহাড়। চায়না বেগমের দাবি, এটিই মেহেরপুরের গাংনীর সবচেয়ে বড় গরু, যার দাম চাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে ব্যাপারিরা গরুটির দাম বলছেন ১২ লাখ টাকা। গরুটি বিক্রি করে আবারো একটি বাছুর কিনে পালবেন আর গরু পালন করেই গড়বেন সন্তানের ভবিষ্যৎ। এমনি প্রত্যাশা চায়না বেগমের। মেহেরপুরের গাংনীর রায়পুর গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মিনারুল ইসলামের স্ত্রী চায়না বেগম। বছর দশেক আগে স্বামী প্রবাসী হয়েছেন। স্বামীর দেওয়া হাত খরচের টাকা জমিয়ে একটি বাছুর কেনেন। দুই বছর আগে কিনে আনা এই 'কালো পাহাড়'কে নিজ সন্তানের মতো পালন করেন। ভাত, কাঁচা ঘাস আর খড় খেতে দেন গরুটিকে। নিয়মিত গোসলসহ প্রয়োজনীয় যত্ন নেন তিনি। তার এ কাজে সহযোগিতা করেন ছেলে সাদ্দাম। চায়না বেগম জানান, ছোট বেলা থেকেই পশু পালন ছিল বেশ শখের। স্বামী সংসারের কাজ সামাল দিয়ে এখনো সেই কাজটি করেন তিনি। স্বামীর আয়ের উপর ভরসা না করেই পশু পালন করে সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এই গৃহবধূ। কান্না বিজড়িত কণ্ঠে চায়না বেগম জানান, 'সন্তানের মতো করেই গরুটিকে পালন করা হয়। নাম ধরে ডাক দিলেই এগিয়ে আসা ছাড়াও একটু চোখের আড়াল হলেই ডাকাডাকি করে। তারপরও চোখের জলে বিদায় দিতে হবে কালো পাহাড়কে।' প্রতিবেশী মকলেছুর রহমান জানান, গৃহবধূ চায়না অতি পরিশ্রমি নারী। পশু পালন পুরুষ মানুষের জন্য কষ্টকর হলেও চায়না বেগম বেশ দক্ষতার সঙ্গে লালন-পালন করছেন। রাত-দিন পশুটিকে সন্তানের মতো করে আদর-যত্নে বড় করেছেন। গৃহবধূ আরজিনা জানান, চায়না আর তার ছোট ছেলে পরিশ্রম করে একটা গরু লালন-পালন করছেন দেখে তারাও আগামীতে গরু মোটাতাজা করবেন। গরু পালনে অনেক লাভ, তাই তিনিও দুটি বাছুর গরু কিনে বড় করবেন বলে জানান। একই কথা জানালেন গৃহবধূ আমেনা আলীম। গাংনী উপজেলা ভেটেনারি সার্জন আরিফুল হক জানান, চায়না বেগমের একটি বড় গরু আছে, সেটা তিনি শুনেছেন। মাঠকর্মীরাও তাকে পরামর্শ দিচ্ছেন। অন্য গৃহবধূদেরও গরু পালনের আহ্বান জানান এই কর্মকর্তা।