নাটোরে লবণ সিন্ডিকেট নিয়ে উদ্বিগ্ন চামড়া ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ | ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০০

নাটোর প্রতিবেদক
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজার নাটেরের চকবৈদ্যনাথ মোকাম -যাযাদি
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চামড়ার বাজার নাটোরের শহরের চকবৈদ্যনাথ মোকাম। এখানে দেশের ৩৬টি জেলা থেকে ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া আসে। লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাতের পর চার মাস এই মোকামেই সংরক্ষিত থাকে সেই কাঁচা চামড়া। দীর্ঘ এই সময় চামড়া সংরক্ষণে প্রয়োজন হয় বিপুল পরিমাণ লবণ। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই সংরক্ষণ উপাদানটি ঘিরে সক্রিয় হয়ে ওঠে লবণ সিন্ডিকেট। এই লবণ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি মৌসুমি ব্যবসায়ী, ঈদের দিন কাঁচা চামড়া সংগ্রহকারী এবং চামড়ার আড়ৎদার। আসন্ন কোরবানি ঈদে লবণের এই সিন্ডিকেট ভাঙতে ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। অন্যদিকে চাহিদার তুলনায় লবণের সরবরাহ বেশি রয়েছে- এমন তথ্য জানিয়ে পণ্যটির দাম বাড়বে না বলে আশ্বস্ত করেছে নাটোর জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া চামড়া সংগ্রহে সক্ষমতা বাড়াতে মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষকে বিনামূল্যে লবণ সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন ও সিসিক। নাটোর বিসিকের উপব্যবস্থাপক দিলরুবা জানান, বর্তমানে নাটোর জেলায় লবণের চাহিদা ৭৫ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে মজুত আছে ১০০ মেট্রিক টন। এক সপ্তাহ আগে প্রতিবস্তা (৫০ কেজি) লবণের দাম ছিল ৮৮০-৯০০ টাকা। বর্তমানে প্রতি মণ লবণ ৮৩০-৮৪০ টাকা। চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের দুই সপ্তাহ আগে লবণের দাম কমাটা একদিক দিয়ে যেমন স্বস্তিদায়ক অপরদিকে উদ্বেগেরও। কেননা, ঈদের দু'য়েক দিন আগেও হঠাৎ করে লবণের দাম বৃদ্ধির রেকর্ড রয়েছে। কী পরিমাণ কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ করা হবে, তা ব্যবসায়ীরা নির্ধারণ করেন শিল্প মন্ত্রণালয় চামড়ার দাম বেঁধে দেওয়ার পর। ফলে লবণ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মূলত ঈদের দু'য়েক দিন আগেই। তাই ঈদের দুই সপ্তাহ আগে লবণের মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধি তেমন প্রভাব ফেলে না। চামড়ার আড়তদার লুৎফর রহমান বলেন, যেহেতু এখন কোরবানি মৌসুম তীব্র গরমের মধ্যে শুরু হয়, সেহেতু চামড়া সংরক্ষণে প্রচুর লবণের প্রয়োজন। বলা হচ্ছে, এবার লবণের সরবরাহ বেশি। কিন্তু লবণের দাম কাঙ্ক্ষিত হারে কমছে না। ফলে বাবসায়ীরা শুরুতেই বড় ধাক্কা খাচ্ছে। লবণের সিন্ডিকেট ভেঙে দিলে ব্যবসায়ীরা কিছুটা উপকৃত হবে। নাটোরের জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা জানান, লবণ ব্যবসায়ী ও চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে। চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত লবণ থাকায় আমরা আশা করছি, দাম বৃদ্ধিজনিত কোনো সংকট সৃষ্টি হবে না। এ ছাড়া এ বছরই প্রথম চামড়া সংগ্রহে সক্ষম মাদ্রাসা ও এতিমখানায় জেলা প্রশাসন ও বিসিকের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে লবণ সরবরাহ করা হবে।