নমুনা সংগ্রহকারীদের আয় সাড়ে চার লাখ

বৈরী আবহাওয়াতেও হালদায় থেমে নেই ডিম সংগ্রহ

প্রকাশ | ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম মৎস্য প্রজননক্ষেত্র ঘোষিত মৎস্য হ্যারিটেজ হালদা নদী থেকে কার্প জাতীয় মা মাছের দ্বিতীয় দফায় পাওয়া অল্প সংখ্যক নমুনা ডিম থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা আয় করছেন সংগ্রহকারীরা। এ যেন বিন্দু থেকে সিন্ধুর জন্ম প্রবাদটি বাস্তবে শতভাগ সত্যে রূপান্তরিত হয়েছে। চলতি মাসের ২৭ তারিখ সোমবার বৈরী আবহাওয়ায় দুপুরে জোয়ারের সময় ডিম সংগ্রহকারীদের জালে অল্প পরিমান ডিম ধরা পড়ে। ওইদিন অনেকেই পরিমাণে একেবারে কম বিধায় তা সংরক্ষণ না করে নদীতেই ফেলে দেন। কিন্তু মাছুয়াঘোনা হ্যাচারি এলাকার শতাধিক ডিম সংগ্রহকারী তা নদীতে না ফেলে কিংবা নষ্ট না করে সব একত্র করে মাছুয়াঘোনা হ্যাচারির কুয়ায় সংরক্ষণ করেন। তাদের তথ্যমতে, সেদিন ১২০ কেজির বেশি ডিম সংরক্ষণ করেন কুয়ায়। ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে বিদু্যৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় পানির মোটর ও লাইটের ব্যবস্থা না থাকলেও তারা চার্জ লাইট, মোমবাতি জালিয়ে ও পাশের পুকুর থেকে কুয়ায় পানির ব্যবস্থা করেন। পরিশেষে কঠোর পরিশ্রম তাদের সফলতার মুখ দেখায়। ১২০ কেজি ডিম থেকে পান তিন কেজি রেণু। আর এর থেকে আয় করেন কেজি দেড় লাখ করে সাড়ে চার লাখ টাকা। যদিও ডিম সংগ্রহকারীর ১০টি গ্রম্নপের শতাধিক সদস্য বিভিন্ন খরচ শেষে পেয়েছেন গড়ে আড়াই হাজার টাকা করে। এতেই খুশি তারা। অন্তত নমুনা ডিম বলে অনেকে নষ্ট কিংবা ফেলে দিলেও ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারা তা সংরক্ষণ করতে পেরেছেন। গ্রম্নপের প্রধান হোছেন, আব্দুল কাদের, আবু তৈয়ব, শফি, জাফর, আবুল কালাম, আব্দুল কাইয়ুম প্রকাশ করিম, মন্নান সওদাগর, ইলিয়াছ ও শওকত জানান, 'ডিম খোদা প্রদত্ত প্রাকৃতিক একটা নেয়ামত। অল্প পরিমাণ পেলেও যদি সবাই একত্র করে কুয়ায় সংরক্ষণ করি, তাহলে সমস্যা কোথায়। ডিমের ধরনও ভালো ছিল। ডিম ছাড়ার জোঁ না থাকলেও সেদিন পরিবেশ অনুকূলে ছিল।' এ সময় ডিম সংগ্রহকারীরা আধুনিক হ্যাচারির ব্যবস্থা থাকায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এদিকে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, সব কুয়ায় ডিম সংরক্ষণ হলে কর্তৃপক্ষ যে গুরুত্ব দেয়, সামান্য হলে সে গুরুত্ব দেন না কর্তৃপক্ষ। একটি গভীর নলকূপ ও সৌর বিদু্যতের ব্যবস্থা করলে ডিম সংগ্রহকারীরা উপকৃত হবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.বি.এম মশিউজ্জামান বলেন, গভীর নলকূপের বিষয়ে ইতোমধ্যে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বলা হয়েছে। সৌর বিদু্যতের বিষয়টা দেখবেন। এদিকে সোমবার থেকে অমাবস্যার জোঁ শুরু হচ্ছে। বজ্রসহ বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল তথা পরিবেশ অনুকূলে থাকলে পুরোদমে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে বলে আশা করছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। তারা ডিম সংগ্রহের জন্য নৌকা, বাঁশের ভোরকা, জাল, বালতি নিয়ে প্রস্তুত রয়েছেন।