সারিয়াকান্দি যমুনায় বেড়েছে পানি, ফিরছে নাব্য

প্রকাশ | ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি বাড়ায় যাত্রী পারাপারের জন্য অপেক্ষারত নৌকার সারি -যাযাদি
বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। বন্ধ হওয়া নৌ-ঘাটগুলো সচল হতে শুরু করেছে। এতে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী যাত্রী ও মাঝিদের মধ্যে স্বস্তি ফিরছে। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ঈদুল ফিতরের আগে থেকেই সারিয়াকান্দিতে যমুনার পানি বাড়তে শুরু করে। কয়েকদিন এ অবস্থা অব্যাহত ছিল। তবে গত বুধবার সকালে পানি কিছুটা কমেছে। পাউবো জানায়, গত শুক্রবার সারিয়াকান্দির মথুরা পয়েন্টে এ পানির উচ্চতা ছিল ১১.২৭ মিটার, শনিবার ছিল ১১.৮৭ মিটার। সে হিসেবে গত শুক্রবার দুপুর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত পানির উচ্চতা বৃদ্ধি হয় ৬০ মিটার পর্যন্ত। সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানির বিপৎসীমা ১৬.৭০ মিটার। সে হিসেবে পানির উচ্চতা বিপৎসীমার ৪.৮৩ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক মাস ধরে এ উপজেলার যমুনা নদীতে নাব্য সংকট চলছিল। পুরো যমুনা নদীজুড়ে অসংখ্য ডুবোচরের সৃষ্টি হয়। এসব ডুবোচরে নৌকা আটকে যেত। এ ছাড়া নাব্য সংকটে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল আলতাফ আলীর নৌ-ঘাট, হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া নৌ-ঘাট, হাটশেরপুর নৌ-ঘাট, নিজ বলাইল নৌ-ঘাট এবং চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের আমতলী নৌ-ঘাটসহ কয়েকটি রুটের নৌকা চলাচল। উপজেলার সবচেয়ে ব্যস্ততম সারিয়াকান্দি কালিতলা নৌ-ঘাটেও দেখা দিয়েছিল নাব্য সংকট। নৌযান চলাচল করতে না পারায় বিপাকে পড়েছিলেন চরবাসী। তবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব বন্ধ হয়ে যাওয়া নৌ-ঘাটগুলো প্রাণ ফিরে পেয়েছে। বাধা ছাড়াই যমুনায় নৌকা চলাচল করছে অনায়াসে। কাজলা চরের বাসিন্দা আনিস বলেন, 'নদীতে পানি কম থাকায় আমাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হতো। জমিতে ফসল নিয়ে এপারে আসা যেত না সময়মতো। কারণ নদীতে পানি কম থাকায় নৌকা মাঝেমধ্যে ডুবোচরে আটকে যেত। তখন আবার অন্য উপায়ে কৃষকের ফসল বিক্রির জন্য হাটে আনতে হতো। এতে খরচ দ্বিগুণ হয়ে যেত। নদীতে পানি বাড়ায় এখন আর এ সমস্যা হচ্ছে না।' ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের আজম ব্যাপারী বলেন, এটা তো অসময়ে বেড়ে গেছে, যাদের ধান এখন কাটেনি তারা আবার সমস্যায় পড়ে যাবে যদি এরকম পানি বেড়ে যায়। তাই অনেকে আগেই ধান কেটে নিচ্ছে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিতপরল নৌ-ঘাটের মাঝি আলতাফ আলী বলেন, যমুনায় পানি না থাকায় গত কয়েকমাস ধরেই ঘাটটি বন্ধ ছিল। গত কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নৌ-ঘাটটি আবারও সচল হয়েছে। কালিতলা নৌ-ঘাটের মাঝি আমিনুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই যমুনায় চলাচল করতে গিয়ে নৌকা ডুবোচরে আটকে যেত। তখন যমুনায় চলাচল খুবই কষ্টকর ছিল। এখন যমুনায় পানি বাড়ায় মোটামুটি বাধাবিঘ্ন ছাড়াই চলাচল করা যাচ্ছে। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, উজানে (উত্তরাঞ্চল) ভারী বৃষ্টির জন্য যমুনার পানি কিছুটা বেড়েছে। আরও কয়েকদিন পানি ওঠানামা করবে। মে মাস থেকে একেবারে স্থায়ীভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করেছে। এখন কোথাও নাব্যতা সংকট থাকবে না।