শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

রেমালের প্রভাবে চাঁদপুরে বিলীন কবরস্থান, ঝুঁকিতে সড়ক

পাইগাছায় ক্ষতিগ্রস্ত ৪শ' ঘর মারা গেছে ২৪০ গবাদিপশু
স্বদেশ ডেস্ক
  ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০
ঘুর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে লন্ডভন্ড খুলনার পাইকগাছা -যাযাদি

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে চাঁদপুরে বিলীন হয়ে গেছে গণকবরস্থান। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে সড়ক ও মসজিদ। এদিকে খুলনার পাইগাছার ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪শ' ঘরবাড়ি, মারা গেছে ২৪০ গবাদিপশু। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-

চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের আখনেরহাট এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব ও মেঘনার ঢেউয়ের কারণে এলাকার একটি গণকবরস্থান বিলীন হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও আখনের হাট জামে মসজিদের সামনের অংশ ভেঙে পড়েছে। ফলে মসজিদ ও সড়কটি ঝুঁকির মধ্যে আছে।

ওই এলাকায় গিয়ে মসজিদ, স্থানীয় লোকজনের চলাচলের একমাত্র সড়ক ও গণকবরস্থান ভেঙে পড়ার দৃশ্য দেখা যায়।

মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আবদুলস্নাহ জানান, 'ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবের কারণে স্থানীয়ভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেই সঙ্গে আমাদের মসজিদের পশ্চিম অংশে মেঘনা নদীর পাড়া এলাকায় বহু অংশ ভেঙে পড়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বাড়লে যে কোনো সময় মসজিদটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা আছে।'

আখনের হাট জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নেছার আখন্দ জানান, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে মসজিদের সামনের অংশ ভেঙে পড়েছে। মসজিদের উত্তর পাশসংলগ্ন আখনের হাটের সঙ্গে সংযুক্ত সড়কটিতে কমপক্ষে এলাকার ৫ হাজার লোকের যাতায়াত। প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার লোকজন ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। এলাকার এই ঝুঁকিপূর্ণ সড়কটি এই মুহূর্তে বালিভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধ না করা গেলে স্থানীয় লোকজনের চলাচল বন্ধ হয়ে পড়বে।

স্থানীয় গ্রাম পুলিশ আলমগীর হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ভাঙনের পর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত জামিল সৈকত জানান, 'ঘূর্ণিঝড়ের পরে চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান লোকজনের ঘর ভেঙেছে এমন তথ্য জানিয়েছেন। তবে আখনের হাট এলাকার সড়ক এবং মসজিদ এলাকার ভাঙনের কথা বলেননি। তবে এখন যেহেতু জানতে পেরেছি, ভাঙন প্রতিরোধ ও মেরামতের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি জানান, খুলনার পাইগাছায় লতা ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ১৩ স্থানে ভেঙে গেছে ওয়াপদা, চারশ' ঘরবাড়িসহ ২৪০ গবাদি পশু মারা গেছে। আহত হয়েছে ৩ ব্যক্তি।

লতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজল কান্তি বিশ্বাস জানান, 'রেমালের আঘাতে আমার ইউনিয়নে ১৩টি স্থান ভেঙে যায়। এ সময় আমি সব ইউপি সদস্য ও নিজ নিজ এলাকাবাসীর সহযোগিতায় স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ভাঙা স্থানের বাঁধ কোনোমতে আটকেছি। এখনো ঝুঁকিতে রয়েছে ওই বাঁধ।'

ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যমতে, রেমালের তান্ডবে ৯টি ওয়ার্ডে গোয়ালের চাল ওড়ে ৩৭ গরু, ১০৫ ছাগল, ৯৭ ভেড়াসহ ২৪০টি গবাদিপশু মারা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪শ' ঘরবাড়ি, ৫শ' গাছপালা। আহত হয়েছে ৩ ব্যক্তি। অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দুটি মসজিদ ও একটি মন্দির। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো- ওয়াজেদ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লতা জামে মসজিদ, হালদার চক জামে মসজিদ, কাঠামারী মিলন মন্দির। আহতরা হলেন- সচিয়ারবন্দ গ্রামের নৃপেন বিশ্বাসের ছেলে তরুণ বিশ্বাস, হানিরাবাদ গ্রামের বক্স গাজীর ছেলে রুস্তম গাজী একই এলাকার লালু মীরের ছেলে ইসমাইল মীর।

লতা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলাম বলেন, ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢোকার কারণে তার ১৫টি ভেড়া মারা গেছে। এমনিভাবে অনেক গবাদিপশু মারা গেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে