আজকের যায়যায়দিন

ইঞ্জিন ও কর্মী সংকটে বন্ধ রাখা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে স্পেশাল ট্রেনটি আগামী ১২ জুন থেকে আবারও চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। তবে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে স্পেশাল ট্রেন হিসেবেই এটি চালু হবে। চলবে ঈদের পরের দিন পর্যন্ত।

রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) সরদার সাহাদাত আলী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে স্পেশাল ট্রেনটি আবারও বিশেষ ট্রেন হিসেবে চলাচলের পরিকল্পনা রয়েছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১২ জুন থেকে পুনরায় চালু হতে যাওয়া বিশেষ ট্রেনটি চলবে ১ সপ্তাহ।

এর আগে, গত ২৮ মে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সহকারী প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা (এসিওপিএস) কামাল আখতার হোসেন সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ট্রেন বন্ধের নির্দেশনা জারি করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রেলওয়ের মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে কক্সবাজার স্পেশাল-৩ ও ৪ ট্রেনটি ১০ জুন পর্যন্ত চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যান্ত্রিক বিভাগ থেকে ইঞ্জিন ও লোকোমাস্টারের সংকট থাকার কথা জানানো হয়। এ জন্য কক্সবাজার বিশেষ ট্রেন ২৯ মে পর্যন্ত চলছে। ৩০ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বাতিল করা হয়েছে।

ট্রেনটি বন্ধ ঘোষণা করার পরপরই সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে যাত্রীরা যখন স্পেশাল ট্রেনে নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন, তখন বাস সার্ভিসে যাত্রী সংকট দেখা দেয়। এতে বাস মালিকরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যাত্রীপ্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া কমাতে বাধ্য হন। তারপরও যাত্রী না পাওয়ায় মালিকরা রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে 'ম্যানেজ' করে ফেলেছে বলে এই রুটে চলাচল করা যাত্রীদের অনেকেই মনে করেন।

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ের ডিজি সরদার সাহাদাত আলী বলেন, 'কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনটি বন্ধের কারণ হিসেবে বিভিন্ন মহলের কথায় বাসমালিকদের দ্বারা ম্যানেজ হয়ে ট্রেনটি বন্ধ করা হয়েছে- এমন দাবি করা হয়েছে। বিষয়টি আসলে ঠিক নয়। রেলওয়ে অতি গুরুত্বপূর্ণ সেবামাধ্যম। কোনো কিছুর বিনিময়ে রেলসার্ভিস বন্ধ করে আরেকপক্ষকে আয়ের সুযোগ কখনো দেব না।'

উলেস্নখ্য, প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রায় ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নতুন করে তৈরির পর ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ডিসেম্বর থেকে দুই ধাপে ঢাকা থেকে কক্সবাজার রুটে দুটি বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন চালু করে রেলওয়ে। কিন্তু চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের জন্য কোনো আলাদা ট্রেন যুক্ত করেনি কর্তৃপক্ষ। কারণ হিসেবে অজুহাত দেখানো হয় ইঞ্জিন ও লোকবল সংকটের।

পরে ঈদযাত্রা স্বস্তি ও আরামদায়ক করতে গত ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম-পটিয়া-কক্সবাজার রুটে প্রথমবারের মতো ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। প্রথম পর্যায়ে ঈদের দিন বাদ দিয়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। তবে সাধারণ যাত্রীর চাহিদার কথা বিবেচনা করে দফায় দফায় সময় বর্ধিত করে আগামী ১০ জুন পর্যন্ত ট্রেনটি চলাচলের কথা ছিল। ঈদ পরবর্তী ১৭ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত এ ট্রেন ফের চলাচলের অনুমতি দেওয়া হলেও সময় বাড়িয়ে ২০ মে পর্যন্ত চলতে থাকে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন। পরে দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়িয়ে ১০ জুন পর্যন্ত করে পরিবহণ বিভাগ। কিন্তু এর আগেই গত ৩০ মে থেকে ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যায়।