চিরিরবন্দরে ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে পুড়ছে ফল ও ফসল

প্রকাশ | ০২ জুন ২০২৪, ০০:০০

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার এল এইচ বি ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে কৃষকের জমির পাকা ধান, ভুট্টা,আম, লিচু, কলা, মরিচ ও কচুর ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে দিশেহারা কৃষক। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন, আমাদের এলাকার প্রায় অর্ধশত কৃষকের জমির পাকা ধান কাটার সময় হয়েছে। এসময় গত মঙ্গলবার রাতে 'উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের হযরতপুর গ্রামের এল এইচ বি ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ধান, মরিচের ক্ষেত, কচুর ক্ষেত, কলা বাগান, আম ও ভুট্টার ক্ষেত পুড়ে গেছে। প্রায় ১৫ বিঘা জমির পাকা ধান, প্রায় ১০ বিঘা জমির মরিচ ও কচু, প্রায় দুই বিঘা জমির ভুট্টা, প্রায় শতাধিক গাছের আম, লিচু, কলা ও পেয়ারা নষ্ট হয়ে গেছে।' হযরতপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল আলিম বলেন, 'ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে একরাতে আমার দশ কাটা জমির পাকা ধান পুড়ে গেছে। আমার ধানসহ আশপাশের অনেকের ধান, ভুট্টা মরিচ ও কচু ক্ষেত পুড়ে গেছে। ভাটার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও আমরা এর কোনো সমাধান পাইনি। ভাটার মালিক যদি আমাদের ক্ষতিপূরণ না দেন তাহলে আমরা তো মাঠে মারা যাব।' কৃষক নাজমুল হক বলেন, 'ভাটার বিষাক্ত গ্যসে মরিচ ও কচু ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে, আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে ৫০ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারতাম। কিন্তু আর হলো না। ভাটার ধোঁয়ায় মরিচের ফুল-ফল সব মাটিতে ঝরে পড়েছে। মরিচের পাশে কচুও নষ্ট হয়ে গেছে।' কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, 'আমার এক বিঘা জমির ধান ভাটার কালো ধোঁয়ায় পুড়ে গেছে। দুই-একদিনে ধান কাটব, এমন সময় ধানগুলো পুড়ে গেছে। ভাটার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। মালিক খালি সময় দেন আজ আসবেন কাল আসবেন, কিন্তু আসেন না। এখন ধানগুলো কাটতে পারছি না।' এল এইচ বি ভাটার মালিক লোকমান হাকিম বলেন, 'আমি বিষয়ের তেমন কিছু জানি না। আমার পরিবারের দুইজন সদস্য অসুস্থ। তাই তাদের নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি।' চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোহরা সুলতানা বলেন, 'কৃষকদের পক্ষ থেকে এমন কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। কৃষকরা অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়াম্যান ও চিরিরবন্দর, খানসামা উপজেলার ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি ময়েনউদ্দিন শাহ্‌ বলেন, 'আমি বিষয়টা অবগত আছি। বিষয়টা দেখব।'