শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

বর্ষায় হাওড়বাসীর সঙ্গী কাঠের দাঁড়-বৈঠা

আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ০১ জুন ২০২৪, ০০:০০
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সৌলরী গ্রামে চলছে বৈঠা তৈরির কাজ -যাযাদি

বর্ষাকাল নদীতে পানি বাড়লে রাস্তা পস্নাবিত হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় হাওড়াঞ্চলের অনেক গ্রামের। সে সময়ে যোগাযোগের এক মাত্র মাধ্যম ছোট-বড় নৌকা। এতে প্রয়োজন হয় বৈঠা ও দাঁড়ের।

তাই প্রতি বছরের মতো এবারও আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় কাঠের তৈরি বৈঠা এবং দাঁড়ের চাহিদা বেড়েছে। এসব বিক্রি করে কারিগরেরা ভালো মুনাফা পাচ্ছেন।

জানা যায়, প্রতি সাতজন কারিগর মিলে দিনে বিভিন্ন সাইজের ৮০ থেকে ৯০টি বৈঠা তৈরি করতে পারেন। ছোট বড় আকার ভেদে ২০০ থেকে ৮০০ টাকায় এগুলো বিক্রি হয়। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের ব্যস্ততাও বেড়েছে। আজমিরীগঞ্জ বাজার, কাকাইলছে ও চৌধুরীবাজার এবং কিশোরগঞ্জের মিঠামইন বাজার থেকে কাঠের বাকলা কিনে এনে তারা নিজেরাই এগুলো তৈরি করেন।

উপজেলার কাকাইলছেও ইউনিয়নের সৌলরী গ্রামে বেশির ভাগ বাড়িতে প্রতিযোগিতা করে বৈঠা তৈরির কাজ চলছে। এখানের তৈরি বৈঠা দেশের বিভিন্ন স্থানের মাঝিদের চাহিদা পূরণ করছে।

সৌলরী গ্রামের আলকেছ মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কযেকজন লোক ছোট করাত দিয়ে কাঠ কেটে বৈঠা তৈরির জন্য সাইজ করছেন। হাতুড়ি ও বাটালের শব্দ কানে লাগে বাড়ির আঙিনায় যাওয়ার পরই। নিপুণ হাতে তারা বৈঠা ও দাঁড় তৈরি করছিলেন।

আলকেছ মিয়া জানান, 'ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি বাপ-দাদারা এ ব্যবসা করছেন। আমাদের বর্তমান প্রজন্মও আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে।'

তিনি আরও জানান, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপারীরা এ গ্রামে এসে দাঁড় ও বৈঠা কিনে নিয়ে যান। সব খরচ শেষে যা মুনাফা মিলে তা দিয়েই কারিগরদের সংসার চলে। আলকেছ মিয়া প্রতি বছর সাত থেকে আট হাজার বৈঠা তৈরি করে থাকেন।

কারিগর সাকিম আলী ও সেবুল মিয়া জানান, 'তারা বৈঠা ও দাঁড়ের ফিনিশিং কাজে ২০টি বৈঠার জন্য সাড়ে ৩০০ টাকা মজুরি নেন।

ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, সৌলরী গ্রামের কয়েকটি বাড়ি ছাড়া সবাই বৈঠা তৈরির পেশায় নিয়োজিত। বৈঠা তৈরির আয় দিয়ে তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন এবং তাদের তৈরি বৈঠা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝিদের চাহিদা পূরণ করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে