শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১
ঘূর্ণিঝড় 'রেমাল'

কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বে থেকেও অফিসে আসেননি তিনি, অবশেষে শোকজ

তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
  ৩১ মে ২০২৪, ০০:০০
কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বে থেকেও অফিসে আসেননি তিনি, অবশেষে শোকজ

বরগুনার তালতলীতে ঘূর্ণিঝড় 'রেমালের' জরুরি তথ্য সংগ্রহ এবং বিতরণের জন্য কন্ট্রোলরুমের দায়িত্ব থাকলেও তা পালন করেননি এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন। এর ফলে জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কোনো তথ্যই পায়নি সাধারণ মানুষ। সে কারণে ওই কর্মকর্তাকে শোকজ করেছে প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী। কর্তৃপক্ষ তাকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলেছে।

বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. হুমায়ূন কবীর। এর আগে গত ২৭ মে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী অলি আখতার হোসেন ও বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. হুমায়ূন কবীর পৃথক দু'টি শোকজ নোটিশ দেন উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেনকে।

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে এ উপজেলা লন্ডভন্ড হয়ে যায়। সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটিও বাতিল করা হয়। রেমালের গতিবিধি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ, পূর্বাভাস ও জলোচ্ছ্বাস সংক্রান্ত তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করার জন্য একটি কন্ট্রোলরুম চালু করে উপজেলা প্রশাসন। পর্যায়ক্রমে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর প্রধানকে কন্ট্রোলরুমের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গত ২৬ মে দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কন্ট্রোলরুমের দায়িত্ব দেওয়া হয় উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন ও তার সহকারী হিসাব রক্ষণ মাসুদ সিকদারকে। ওইদিন তারা রাত ১০টা পর্যন্ত অফিসেই আসেননি। কন্ট্রোলরুমে দেওয়া নম্বরে একাধিকবার তথ্য জানার জন্য ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। দুপুর ২ থেকে রাত ১০টা কন্ট্রোলরুমের দায়িত্ব পালন ব্যাহত হয়েছে। এতে ঘূর্ণিঝড়ের কোনো তথ্যই পায়নি সাধারণ মানুষ। পরে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ওই প্রকৌশলী কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে ঢাকায় ছিলেন।

এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় 'কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বে থাকলেও অফিসেই আসেননি প্রকৌশলী' শিরোনামে নিউজ প্রকাশিত হলে বিষয়টি নজরে আসে এলজিইডি কর্তৃপক্ষের। পরে তাকে অসদাচরণের জন্য কৈফিয়ত তলব করেন এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী। সেখানে উলেস্নখ করেন, 'উপজেলা প্রশাসনের আদেশ উপেক্ষা করে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ২৬ মে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে ঢাকায় অবস্থান করেন। আপনি ও আপনার কার্যালয়ের অন্য কর্মচারীরাও কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কোনো তথ্যই পায়নি সাধারণ মানুষ। আপনার এমন দায়িত্বহীন কার্যকালাপের জন্য বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রচার হলে এলজিইডি ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। আপনি সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৩(খ) অনুযায়ী অসদাচরণের সামিল ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এই কার্যকলাপের জন্য বিধি অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে না কেন তার সন্তোষজনক জবাব আগামী ৭ দিনের ভেতরে প্রদান করার নির্দেশ দেওয়া হয়।' এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'শোকজপত্র পেয়েছি। যথাযথভাবে জবাব দেব।' নির্বাহী প্রকৌশলী এস. এম. হুমায়ূন কবীর বলেন, 'প্রধান প্রকৌশলী উপজেলা প্রকৌশলীকে শোকজ করেছেন। আমিও তাকে শোকজ করেছি। পৃথক দু'টি শোকজের জবাব সাত দিনের মধ্যে চাওয়া হয়েছে। জবাব পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে