শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১
ডিসির কাছে অভিযোগ

কালীগঞ্জে জেল-জরিমানায়ও কমছে না কৃষিজমি ভরাট

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  ৩০ মে ২০২৪, ০০:০০
কালীগঞ্জে জেল-জরিমানায়ও কমছে না কৃষিজমি ভরাট

গাজীপুরের কালীগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের একাধিক অভিযান এবং জেল জরিমানার পরেও কমছে না অবৈধভাবে কৃষিজমি বালু ও মাটি দিয়ে ভরাট। রাতের আঁধারে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ব্যক্তি মালিকানা থেকে শুরু করে বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানি ড্রাম্প ট্রাক ও ভেকু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে বালু ভরাট করছে। এবার বিষয়টি নিয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামের হান্নান সরকারের ছেলে ভুক্তভোগী বেনজীর সরকার।

বেনজীর সরকার বলেন, 'উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের পিপুলিয়া মৌজার রেল লাইনের উত্তর পাশের কৃষিজমিগুলো থেকে মাটি কেটে বাঁধ নির্মাণ ও বালু দিয়ে ভরাট করছে বাংলা মার্কসহ বেশ কিছু হাউজিং কোম্পানি। জমিগুলো বেলাই বিলের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে এবং বর্ষাকালে বিলের পানি দিয়ে কৃষিজমির সেচ কাজ করা হয়। কিন্তু হাউজিং কোম্পানি বাঁধ নির্মাণ করায় পানির অভাবে আমার ও বেশ কিছু জমির মালিকের ধানসহ অন্য ফসল চাষাবাদ ব্যাহত হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'এ কাজে আমি ন্যায়সঙ্গত বাধা দেই এবং আমাদের কালীগঞ্জ উপজেলার ভূমি সহকারী কমিশনারকে মৌখিকভাবে জানাই। এরপরও বাঁধ নির্মাণ ও বালু ভরাট কাজ বন্ধ হচ্ছে না। তাই আমি জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। আমি চাই ডিসি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক কৃষি জমিতে বাঁধ নির্মাণ ও বালু ভরাট বন্ধ করে আমাদের কৃষি জমিতে চাষাবাদ করার সুযোগ করে দেবেন।'

সরেজমিনে দেখা গেছে, টঙ্গী-কালীগঞ্জ-ঘোড়াশাল আঞ্চলিক সড়কের পাশে বেলাই বিলে বাঁধ নির্মাণ করে বালু দিয়ে ভরাট করছে বাংলা মার্ক, নর্থ সাউথ, তেপান্তর গ্রম্নপ। এছাড়াও নাগরী ইউনিয়নের গলান এলাকায় ভাইয়া গ্রম্নপ, সিআইভিআইসি নামের হাউজিং কোম্পানিগুলো ড্রাম্প ট্রাক ও ভেকু দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করে বালু ভরাট করছে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এক রিট আবেদনের শুনানি করেন। শুনানিতে বলা হয়, কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় খাল-বিল, নদী-পুকুর, কৃষিজমি-জলাশয় ভরাট এবং অবৈধ দখলের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করা হলো। আদালতের ওই নির্দেশ অমান্য করেই বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানি কালীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় কৃষিজমি ও জলাশয় ভরাট কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।

বাংলা মার্কের পরিচালক ইরফান বাপ্পী বলেন, 'আমাদের কোনো হাউজিং কোম্পানি না, আমাদের কোম্পানি হচ্ছে বাংলা মার্ক এগ্রো। কৃষক বা কৃষি নিয়ে আমাদের কাজ। হয়রানি করার জন্য বেনজীর নামের এক লোক বাংলা মার্কের বিরুদ্ধে অহেতুক অভিযোগ করেছে। অথচ তার নামে সেখানে কোনো জমি নেই।'

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, 'আমি মাসখানেক হয় এ উপজেলায় যোগদান করেছি। কিন্তু যখনই কৃষিজমি থেকে মাটি কাটার খবর পেয়েছি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তখনই অভিযান পরিচালনাসহ জেল-জরিমানা করেছি। নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত আছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে