আজকের যায়যায়দিন

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে অনুমোদনহীন ব্যাটারি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে মাশালস্নাহ-আলহামদুলিলস্নাহ নামের একটি খামারের ৮টি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার গজরা ইউনিয়নের ডুবগি গ্রামে। এ ঘটনায় ১৭ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মতলব উত্তর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত খামারি জসিম উদ্দিন লিটন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ব্যাটারি কারখানা সংলগ্ন ক্ষেত থেকে ঘাস কেটে গরুকে দেন খামারি জসিম উদ্দিন লিটন। ওই ঘাস খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে ৮টি গরু। গরুর অবস্থা খারাপ দেখে খামারেই ৩টি গরু জবাই করেন ও ৫টি গরু কসাইর কাছে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করে দেন। এর আগেও একই কারণে কয়েকটি গরু মারা যাওয়ায় কারখানাটি বন্ধ করে দেয়। সম্প্র্রতি আবারও চালু করায় এমন ঘটনা ঘটেছে।

খামার মালিক জসিম উদ্দিন লিটন বলেন, 'পাঁচ বছর ধরে খামার করেছি। কোনদিন অসুবিধা হয়নি। এই প্রথম ব্যাটারি কারখানা সংলগ্ন ক্ষেত থেকে ঘাস খাওয়ানোর কারণে গরুগুলো অসুস্থ হয়েছে। এতে আমার ১৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাকি গরুগুলো নিয়ে চিন্তায় আছি। এদিকে কারখানা মালিক সোহেল বলেন, 'সামান্য পরিবেশ দূষণ হলেও হতে পারে। এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া অন্য সব কাগজপত্র আছে। যেহেতু মানুষের ক্ষতি হয়, সেহেতু কারখানাটি বন্ধ করে দেব।'

উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, 'খবর পাওয়া পর খামারে যাই। ঘাসের মধ্যে বিষাক্ত মিশ্রিত গ্যাস ছিল। যার কারণে গরুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে।'

মতলব উত্তর থানার ওসি আলমগীর হোসেন রনি বলেন, 'এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'

চাঁদপুরে ফের দেখা মিলল রাসেলস ভাইপারের

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার এখলাসপুর ইউনিয়নে আবারও বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপারের (চন্দ্রবোড়া) দেখা মিলেছে। পরে সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে স্থানীয়রা।

গত মঙ্গলবার সকালে উপজেলার এখলাসপুর ইউনিয়নের নয়ানগর বটতলা এলাকা থেকে সাপটিকে ধরা হয়। এর আগে গত ১৬ মে একই ইউনিয়নের বোরচর এলাকা থেকে একই প্রজাতির আরেকটি সাপ উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, বেশ কয়েকদিন ধরে উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিম চরাঞ্চল বোরচরে সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। কিন্তু এবার পূর্ব পাড়ে দেখা মিলল রাসেলস ভাইপার সাপের।

তারা আরও জানান, মঙ্গলবার দুপুরে এখলাসপুর নয়ানগর বটতলা এলাকার মেঘনা নদীর পাড়ে রাসেলস ভাইপার সাপটিকে দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে তারা সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা হুমায়ুন মিয়াজি বলেন, 'ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে মেঘনা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় সাপটি বালুর মাঠে চলে আসে। সাপটি যখন চলে যাচ্ছিল তখন আমি লোকজনকে ডাক দিলে তারা এসে সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।'

এখলাসপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম মুন্না ঢালী বলেন, 'আমি খবরটি পেয়েছি। কয়েকদিন ধরে আমাদের ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় সাপ ধরা পড়ছে। আমরা এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি।'

মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) হাসিবুল ইসলাম বলেন, চন্দ্রবোড়া বা উলু বোড়া ভাইপারিডি পরিবারভুক্ত একটি অন্যতম বিষধর সাপ। এই সাপ সবচেয়ে বেশি বিষাক্ত ও এর অসহিষ্ণু ব্যবহার এবং লম্বা বহির্গামী বিষদাঁতের জন্য অনেক বেশি লোক দংশিত হন। বিষক্রিয়ায় রক্ত জমা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অত্যধিক রক্তক্ষরণে অনেক দীর্ঘ যন্ত্রণার পর মৃতু্য হয়।

তিনি জানান, সাপ সাধারণত ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। তবে চন্দ্রবোড়া সাপ ডিম পাড়ার পরিবর্তে সরাসরি বাচ্চা দেয়। এরা বছরের যে কোনো সময় প্রজনন করে। একটি স্ত্রী সাপ গর্ভধারণ শেষে ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। তবে কোনো কোনো চন্দ্রবোড়া সাপের ৮০টি পর্যন্ত বাচ্চা দেওয়ার রেকর্ড আছে।

এটি বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে পাওয়া গেলেও মতলব উত্তর পদ্মা ও মেঘনা নদী অববাহিকা অবস্থিত হওয়ায় এ সাপটি এখন পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে চর অঞ্চলের মানুষকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বলে জানান এই চিকিৎসক।