শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১
প্রক্রিয়াজাত ব্যবস্থা গড়ে তোলার দাবি

গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে মধুমাসের ফল কাঁঠাল

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
  ৩০ মে ২০২৪, ০০:০০
মেহেরপুরের গাংনীতে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে জাতীয় ফল কাঁঠাল -যাযাদি

জাতীয় ফল কাঁঠাল। ফলের রাজা হিসেবেও সবার কাছে সমাদৃত। এটি শুধুমাত্র একটি মৌসুমী ফলই নয়- পুষ্টিগুণে ভরপুর ও অর্থকরী ফসল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। মেহেরপুরের গাংনীর সর্বত্র এখন কাঁঠাল গাছ ঝুলন্ত কাঁঠালে ছেঁয়ে আছে। কোন কোন এলাকায় আগাম জাতের কাঁঠাল পাঁকতে শুরু করেছে। পাঁকা কাঁঠালের মিষ্টি গন্ধে কীট পতঙ্গ ভিড় করছে গাছে গাছে। আর সেই আনন্দে বাগান মালিকরা গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত। তবে কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করণের কোন সুবিধা না থাকায় এ এলাকার মানুষ চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কাঁঠাল গাছগুলো ফলে ফলে ভরে গেছে। প্রতিটি গাছে ১০০ থেকে ২০০ পর্যন্ত ফল ধরেছে। বছর দশেক আগেও আম কাঠালের বাগান ছিল। এখন শুধু আমের বাগান রয়েছে। এখানকার অধিকাংশ কাঁঠাল গাছ বাগানভিত্তিক না। বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার দুই ধারে, স্কুল-কলেজ চত্বরে প্রচুর কাঁঠাল গাছের দেখা মেলে। অভাবের কারণে অনেকে কাঁঠালের গাছ বিক্রি দিচ্ছে। আসবাবপত্র প্রস্তকারী ও ব্যবসায়ী এসব নামমাত্র মূল্যে কিনে ফায়দা লুটছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা জানান, হাট-বাজারগুলোতে পাঁকা কাঁঠাল উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই আছেন প্রতি বছরই প্রায় এক থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকার কাঁঠাল বিক্রি করেন। দুই থেকে তিন মাস কাঁঠালের ভরা মৌসুম। এ সময় পাইকার ও শ্রমিক শ্রেণির লোকদের বাড়তি আয়ের সুযোগ হয়। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাঁঠালের ফলনও ভালো হয়েছে। তাই অনেক কম দামে কাঁঠাল পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, কৃষিপণ্য কাঁঠাল মূলত একটি মৌসুমী সুস্বাদু ফল। কাঁঠালের বিচি তরকারীতেও সমান জনপ্রিয়। এলাকায় কোন কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করার ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত ব্যবস্থা গড়ে তুললে এ উপজেলার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবে।

এদিকে, বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানান, নওগাঁর বদলগাছীতে শোভা পাচ্ছে মধু মাস জ্যৈষ্ঠের বেশ জনপ্রিয় পুষ্টিগুণ সম্পন্ন রসালো ফল কাঁঠাল। যদিও কাঁঠালপাকতে সময় বাকি রয়েছে। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি এলাকার গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে রসালো ফল কাঁঠাল। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাড়ির পাশে, রাস্তার ধারে, জঙ্গলের ভেতরে থাকা গাছে ধরেছে প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল। গাছের গোঁড়া থেকে আগা পর্যন্ত শোভা পাচ্ছে সর্বোচ্চ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ফল।

এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফল। কাঁঠাল গাছের কাঠ আসবাবপত্র তৈরির জন্য সমাদৃত। কাঁঠাল পাতা বিভিন্ন প্রাণির পছন্দের খাদ্য। তুলনামূলকভাবে বিশালাকার এই ফলের বহির্ভাগ পুরু এবং কান্টকাকীর্ণ, অন্যদিকে অন্তরভাগে একটি কান্ড ঘিরে থাকে অসংখ্য রসালো কোয়া।

উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের মুঞ্জ চৌধুরী বলেন, তার ২০টি কাঁঠাল গাছে সমানতালে কাঁঠাল ধরেছে। তিনি এবার ৫০ হাজার টাকার কাঁঠাল বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে না পড়ায় কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে।

উপজেলার আধাইপুর গ্রামের কামরুল জানান, তার নিজের ১০টি কাঁঠাল গাছ আছে। প্রচুর কাঁঠাল ধরেছে। এ বছর তার কাঁঠাল বিক্রির আশা ৩০ হাজার টাকার।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাবাব ফারহান বলেন, এ উপজেলায় তেমন একটা কাঁঠালের বাগান নেই তবে দিন দিন বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় এবার উপজেলায় কাঁঠাল ভালো হয়েছে। দিন দিন উপজেলার মানুষের মধ্যে কাঁঠালের চারা রোপণের আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলায় কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে