শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

বিজয়নগরে লিচুর ভালো ফলন ২০ কোটি টাকা বিক্রির আশা

বাহারুল ইসলাম মোলস্না, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
  ২৯ মে ২০২৪, ০০:০০
বিজয়নগরে লিচুর ভালো ফলন ২০ কোটি টাকা বিক্রির আশা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে এবারও লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। তবে বাগান মালিকরা জানিয়েছেন, ফলন ভালো হলেও তীব্র গরমের কারণে লিচুর সাইজ একটু ছোট হয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, গরমের কাছে কিছু কিছু বাগানের লিচুর সাইজ ছোট হয়েছে। তবে যাদের বাগানে গাছে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা আছে, তাদের বাগানের লিচুর সাইজ ঠিক আছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, এ বছর বিজয়নগর উপজেলায় ৪৩০ হেক্টর জায়গায় লিচুর আবাদ করা হয়েছে। উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে রয়েছে প্রায় ৯০০টির মতো বাগান। এ বছরও লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। ২০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি করা যাবে বলে ধারণা করছেন তারা।

জেলার ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা উপজেলা বিজয়নগর। এখানকার লাল মাটি লিচু চাষের জন্য উপযোগী। মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় বিজয়নগরের লিচুর কদর রয়েছে দেশজুড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ৫০ বছর আগে থেকে বিজয়নগর উপজেলায় লিচুর চাষ করা হয়। ফলন ভালো হওয়ায় ও বাজারের লিচুর দাম ভালো পাওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে বাগানের সংখ্যা। স্থানীয়রা লিচুর চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

বিজয়নগর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিষ্ণুপুর, কাঞ্চনপুর, কাশিমপুর, সিঙ্গারবিল, আদমপুর, কালাছড়া, মেরাশানী, সেজামুড়া, কামালমুড়া, হরষপুর, মুকুন্দপুর, নোয়াগাঁও, অলিপুর, কাশিনগর, ছতুরপুর, বক্তারমুড়া, রূপা, শান্তামুড়া, কামালপুর, কচুয়ামুড়া, গোয়ালনগর, ভিটিদাউপুর ও পত্তন এলাকায় লিচুর বাগান রয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলার প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতেই একটি-দুটি করে লিচুর গাছ আছে। যাদের বাড়িতে একটু জায়গা আছে, তারা প্রত্যেকে লিচুর গাছ লাগান। এসব গাছে পাটনাই, বোম্বে, চায়না থ্রি, চায়না-২ ও এলাচি জাতীয় লিচুর ফলন হয়।

উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে পরিচিত আউলিয়া বাজার। এ ছাড়াও সিঙ্গারবিল, হরষপুর, চম্পকনগর বাজারে বিক্রি হয় অধিকাংশ লিচু। এসব বাজার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিলস্না, নরসিংদী, ভৈরব, নোয়াখালী, চাঁদপুর, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, শায়েস্তাগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল, ফেনী ও রাজধানী ঢাকার ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে লিচু কিনে নিয়ে যান।

উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের কচুয়ামুড়া গ্রামের বাসিন্দা ইকবাল হুসাইন টিটু বলেন, তার দুটি বাগানে ৪৩টি লিচু গাছ রয়েছে। এ বছর খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে লিচুর সাইজ একটু ছোট হয়েছে। এ বছর তিনি তিন লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতে পারেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সেজামুড়া গ্রামের বাগান মালিক আসাদ ভূঁইয়া বলেন, তার ছয়টি বাগানে ১২৪টি গাছ আছে। গাছে এ বছর লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু গরমের তাপে লিচু একটু ছোট হয়েছে, তবে ছোট হওয়ায় তাদের কোন ক্ষতি হয়নি। তিনি আশাবাদী, এ বছর ১০ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতে পারবেন।

বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাব্বির আহমেদ বলেন, উপজেলায় এ বছর ৪৩০ হেক্টর জায়গায় লিচুর আবাদ হয়েছে। উপজেলায় ৯০০টি লিচুর বাগান আছে। এ বছর প্রায় ২০ কোটি টাকার লিচু বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বাগান মালিকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। তবে জনবলের অভাবে বাগান মালিকদের পর্যাপ্ত সহযোগিতা দেওয়া যায়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে