শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

চাঁদপুরে ১১ রেল স্টেশনের ৫টিই বন্ধ পরিত্যক্ত রেললাইন অবৈধ দখলে

চাঁদপুর প্রতিনিধি
  ২৮ মে ২০২৪, ০০:০০
চাঁদপুরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ও বেদখল হওয়া রেললাইন -যাযাদি

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের চাঁদপুর অংশে ৫১ কিলোমিটারের মধ্যে স্টেশন রয়েছে ১১টি। এর মধ্যে সচল আছে ৬টি। লোকবলের অভাবে বাকি ৫টি রেল স্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। একসময় বাণিজ্যিকভাবে মাল পরিবহণের জন্য ট্রেন থাকলেও এখন বন্ধ। মাল পরিবহণের ওই রেললাইনগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকায় এখন অবৈধ দখলে।

সম্প্রতি সদর উপজেলার রেল এলাকা ঘুরে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

রেলওয়ে চাঁদপুর স্টেশন মাস্টারের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, একসময় চাঁদপুর-লাকসাম, চট্টগ্রাম, ভৈরব ও সিলেটের মধ্যে ৮টি ট্রেন চলাচল করেছে। কিন্তু এখন মাত্র দুটি ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে দুটি ট্রেনই চাঁদপুর-চট্টগ্রামের মধ্যে চালু রয়েছে। একটি হচ্ছে আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস এবং অপরটি হচ্ছে সাগরিকা এক্সপ্রেস। বাকি লোকাল ৬টি ট্রেনই এক দশকেরও বেশি বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে সাগরিকা এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।

চাঁদপুর অংশে রেল স্টেশন রয়েছে লাকসামের দিক থেকে- চিতষী, মেহার, শাহরাস্তি, ওয়ারুক, হাজীগঞ্জ, বলাখাল, মধুরোড, শাহতলী, মৈশাদী, চাঁদপুর কোর্ট ও চাঁদপুর স্টেশন। এর মধ্যে কার্যক্রম চালু আছে চিতষী, মেহার, হাজীগঞ্জ, মধুরোড, চাঁদপুর কোর্ট ও চাঁদপুর স্টেশন।

মৈশাদী রেল স্টেশন এলাকার বাসিন্দা মির্জা জাকির বলেন, আমাদের মৈশাদী রেল স্টেশনে কখনই সরকারি লোকবল ছিল না। যখন লোকাল ট্রেন চলাচল করেছে, তখন স্বেচ্ছাশ্রমে টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা ছিল। এখন স্টেশন আছে জনবল নেই। এখন দুটি ট্রেন চলাচল করে এর মধ্যে সাগরিকা এক্সপ্রেসে মৈশাদী স্টেশন থেকে যাত্রী চলাচল করতে পারছে। টিকিট কিনতে হয় ট্রেনে উঠার পরে।

পরিত্যক্ত রেললাইনগুলো হচ্ছে- চাঁদপুর শহরের চিত্রলেখা মোড় থেকে জেলা খাদ্যগুদাম পর্যন্ত এবং চাঁদপুর স্টেশন থেকে পদ্মা ও যমুনা ওয়েল কোম্পানির ডিপো পর্যন্ত।

পরিত্যক্ত রেললাইন এলাকার বাসিন্দা মোস্তফা বেপারী বলেন, গত প্রায় ২০ বছর দুটি ওয়েল স্টেশনে ট্রেনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল আসে না। এখন নদী পথে আসে।

শহরের জামতলা এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী শাহজাহান বলেন, 'আমি এই এলাকায় দীর্ঘ বছর ব্যবসা করি। একসময় সার, কীটনাশকসহ অনেক পণ্যই মালবাহী ট্রেনে আসত। এখন মালবাহী ট্রেনের পণ্য পরিবহণ বন্ধ রয়েছে। যে কারণে এখানকার রেললাইন পরিত্যক্ত এবং অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে।

চাঁদপুর স্টেশন মাস্টার (ভারপ্রাপ্ত) সোয়াইবুল সিকদার বলেন, চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের ৫১ কিলোমিটার অংশে ১১টি স্টেশন। এর মধ্যে ৬টি চলমান এবং লোকবল সংকটে বাকি ৫টি বন্ধ রয়েছে। তবে সবগুলো স্টেশন অবকাঠামোগত কোনো সমস্যা নেই।

তিনি আরও বলেন, পরিত্যক্ত রেললাইন বলতে এসব লাইনগুলোতে পণ্য পরিবহণ হয়েছে। এর মধ্যে জেলা খাদ্যগুদাম এখন নদী ও সড়ক পথে পণ্য পরিবহণ করছে। আর পদ্মা ও যমুনা ওয়েল কোম্পানি লিমিটেড নদী পথে জ্বালানি পরিবহণ করছে। খাদ্য গুদাম এবং ওয়েল কোম্পানি আবারও পণ্য পরিবহণের জন্য আবেদন করলে লাইনগুলো চালু করা হবে। তবে দীর্ঘ বছর লাইনগুলো ব্যবহার না করায় কোনো কোনো স্থানে অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে