অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রম্নত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। আঞ্চলিক অফিস ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত খবর-
চট্টগ্রাম অফিস জানিয়েছে, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) ক্যাম্পাসে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
সিভাসু শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ও পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) প্রফেসর ড. আশরাফ আলি বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ফুড সায়েন্স ও টেকনোলজি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. ফেরদৌসী আকতার, ফিশারিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শেখ আহমাদ-আল-নাহিদ, বঙ্গবন্ধু শিক্ষক ফোরামের সভাপতি ও পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, প্রফেসর ড. কবিরুল ইসলাম খান এবং প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নূরুল আবছার খান।
ইবি প্রতিনিধি জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অনুষদ ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডক্টর আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সংগঠনটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডক্টর এমতাজ উদ্দীন, অধ্যাপক ডক্টর মিজানূর রহমান, অধ্যাপক ডক্টর তোজাম্মেল হোসেন ও অধ্যাপক ডক্টর কাজী আখতার হোসেন এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডক্টর ওয়ালীউলস্নাহ ও অধ্যাপক ডক্টর তপন কুমার জোদ্দার ছিলেন।
এ ছাড়া শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ডক্টর পরেশ চন্দ্র বর্মন, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডক্টর রেজওয়ানুল ইসলামসহ বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষক নেতা ও বিভাগের প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষক ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডক্টর মামুনুর রহমান।
রাবি প্রতিনিধি জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ওমর ফারুক সরকারের সঞ্চালনায় ছিলেন সভাপতি অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাঊদ, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম-২, অধ্যাপক মো. আমিরুল ইসলাম, অধ্যাপক মানিকুল ইসলাম, অধ্যাপক মো. সোমেন হাসান প্রমুখ।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় একটি বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সব স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসমূহের চাকরিতে ১ জুলাইয়ের পর যোগদান করলে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত হবে। হঠাৎ করেই এমন একটি প্রজ্ঞাপন জারির ফলে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
বেরোবি প্রতিনিধি জানান, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. গাজী মাজহারুল আনোয়ার, অধ্যাপক ড. আবু রেজা মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক শাহজামান তপু, সহযোগী অধ্যাপক হারুন অর রশীদ, সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল লতিফ, সহযোগী অধ্যাপক শেখ মাজেদুল হক ও সহকারী অধ্যাপক আব্দুলস্নাহ আল মাহবুব প্রমুখ।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. বিজন মোহন চাকীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আগামী ১ জুলাই থেকে যোগদানকৃতদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করার যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। এ ধরনের বৈষম্য বাংলাদেশের সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। প্রত্যয় স্কিমটি নামে সর্বজনীন হলেও আদতে সর্বজনীন নয়। সরকারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান?সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগকে এই প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে একে সর্বজনীন বলার সুযোগ নেই। স্কিমটি যদি সত্যিই সর্বজনীন হয়ে থাকে তবে একে অধিকতর সর্বজনীন করার জন্য সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগকেও এর আওতায় আনা হোক। তা না হলে তড়িঘড়ি করে জারি করা এই অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক স্কিম অবিলম্বে বাতিল করা হোক।
পবিপ্রবি প্রতিনিধি জানান, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) কৃষি অনুষদীয় ভবনের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
পবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জেহাদ পারভেজ তার বক্তব্যে বলেন, 'এ ধরনের প্রজ্ঞাপন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক। এ বিষয়ে পবিপ্রবিসহ বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সোচ্চার রেয়েছেন। কোনোভাবেই এ প্রজ্ঞাপন মেনে নেওয়া হবে না।'
বক্তব্য প্রদান করেন অধ্যাপক ড. হেমায়েত জাহান, অধ্যাপক ড. জুয়েল হাওলাদার, অধ্যাপক ড. মামুন-উর রশিদ, অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আমিন ও অধ্যাপক খাদিজা খাতুনসহ অন্য শিক্ষকরা।
বক্তারা দাবি করেন, 'অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন একটি বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন। এ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এ প্রজ্ঞাপন জারি থাকলে ভবিষ্যতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে আগ্রহী হবে না।' এ সময় মানববন্ধনে তারা দাবি আদায়ে আরও কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।