গাজীপুরের কাপাসিয়া বাজার এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর শতবর্ষী খেয়াঘাটে কচুরিপানা জটের কারণে খেয়া নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে নদীর ঘাটের ৪৫ মাঝিসহ বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
সরেজমিন গেলে খেয়ার মাঝি রবিউল ইসলাম (৪০) জানান, নদীতে কচুরিপানার কারণে এই ঘাটে নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে।
কাপাসিয়া খেয়া ঘাটের নৌকার মাঝিরা বলেন, কচুরিপানা জটের কারণে শীতলক্ষ্যা নদীর বরমী থেকে চরসিন্দুর পর্যন্ত বরমী, সিংশ্রী, বরামা, রায়েদ, পেলাইদ, গোসিংগা, খালের ঘাট, তালতলা, নারায়নপুর, কাপাসিয়া, সাফাইশ্রী, ইকুরিয়া, রানীগঞ্জ, তারাগঞ্জ, চরসিন্দুর ঘাটে নৌকা চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তারা আরও বলেন, প্রতিটি ঘাটেই ৩০-৪০টি করে খেয়া নৌকা চলাচল করে থাকে। এতে হাজারো মাঝি দিন রাত নৌকা পারাপারের কাজ করে থাকেন। খেয়া নৌকা চালাতে না পারার কারনে তাদের রুজি-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে।
নৌকার মাঝি কাজল মিয়া, মোতালিব, ছাত্তার মিয়া বলেন, 'আমরা যারা নৌকা পারাপার করে থাকি, তারা চার মাস ধরে ঠিকমতো কাজ করতে পারছি না। পৌষ মাস থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত খেয়া নৌকা চলাচল প্রায়ই বন্ধ থাকে।'
ডেন্টিস্ট এমদাদুল হক জানান, 'আজকে দেখেছি, ইজারা ঘর বন্ধ। নদীর মাঝখানে বাঁশ বোঝাই নৌকা আটকে আছে। খেয়া নৌকাগুলো নদীর উত্তর ঘাটে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। মানুষজন চলাচলে খুবই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।'
শিক্ষক বোরহান উদ্দিন বলেন, এক সময় এই নদীতে পালতোলা খেয়া নৌকা চলত। এখন কোনো নৌকাই চলে না। এতে জনদুর্ভোগ বেড়ে গেছে। অনেক শিক্ষার্থীর স্কুল-কলেজে আসা-যাওয়া বন্ধ গেছে। কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ কে এম লুৎফর রহমান বলেন, প্রশাসন থেকে ফান্ড দিয়ে কচুরিপানা জট সরানো সম্ভব নয়। এসব সরাতে বিআইডবিস্নউটিএ'র সহযোগিতা প্রয়োজন।
বিআইডবিস্নউটিএ নরসিংদীর ঘোড়াশাল বন্দর ও পরিবহণ কর্মকর্তা নূর স্বপন জানান, 'শীতলক্ষ্যা নদীর নারায়ণগঞ্জ থেকে চরসিন্দুর পর্যন্ত নদীর ক্যানেল চলাচলে উপযোগী রয়েছে। চরসিন্দুর থেকে বরমী পর্যন্ত নৌচলাচল বন্ধের বিষয়টি দেখতে হবে। এটা আমাদের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।'
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নরসিংদীর নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, নদীতে ঘের দিয়ে যারা মাছ চাষ করে, তারা প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা ব্যবহার করে থাকেন। ফলে নদীতে সেগুলোর প্রভাব পড়ে। ঘের দিয়ে মাছ চাষ সম্পূর্ণ অবৈধ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ঘের মালিকদের দন্ড দেওয়া হবে।