শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১

রাজশাহীতে বোরোর ফলন ও দামে কৃষকের মুখে হাসি

প্রতি মণ বিক্রি ১২-১৩শ' টাকা
বদরুল হাসান লিটন, রাজশাহী
  ২৫ মে ২০২৪, ০০:০০
রাজশাহীর বাগমারায় বোরো ধান মাড়াইয়ে ব্যস্ত রয়েছেন কৃষক-কৃষাণীরা -যাযাদি

বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। জ্যৈষ্ঠ মাসজুড়ে পুরোদমে থাকবে এই সোনালি ফসল কাটা-মাড়াই ও ঘরে তোলার ব্যস্ততা। এরই মধ্যে রাজশাহী জেলায় ৬০ শতাংশ জমির ধান ঘরে তুলেছেন কৃষকেরা।

রাজশাহী জেলায় এবার গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে আবাদের লক্ষ্যমাত্রাও। এবার ভালো ফলন পাচ্ছেন কৃষকেরা। সেই খুশির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে আশানুরূপ বাজারদর।

হাট-বাজারে এখন নতুন ধান। অনেকে চাষের খরচের পাওনা মেটাতে জমি থেকে মাড়াইয়ের পরপরই ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। রাজশাহীর বাজারে নতুন ধান প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকায়। শুক্রবার জেলার বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর হাটে এ দামে ধান বিক্রি হয়েছে। তবে জমি থেকে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকা মণ দরে।

রাজশাহীর কৃষকেরা বলছেন, রবিশস্য তুলতে দেরি হওয়ায় এবার বোরো আবাদের সময় কিছুটা দেরি হয়েছে। অধিকাংশ চাষি দেরিতে ধান লাগিয়েছিলেন। এর মধ্যে ছিল গরমের নেতিবাচক প্রভাব। পানির সংকটে রোপণ নিয়ে ছিল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। তবে সব উদ্বেগ-অনিশ্চয়তা কাটিয়ে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি জমিতে ধান আবাদ হয়েছে। এখন ফসল ঘরে তোলায় শেষ মুহূর্তের ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

বাগমারা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের কৃষক ও গভীর নলকূপ মালিক আজাদ আলী জানিয়েছেন, এবার প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অনেকের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আবার নতুন করে বীজতলা তৈরি করে রোপণ করতে দেরি হয়েছে। পাশাপাশি বৃষ্টি না হওয়ায় উৎপাদন খরচও বেড়েছে। এ বছর সার ও কীটনাশকের দামও বেশি। উৎপাদন ভালো হলেও লাভ নিয়ে কিছুটা শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ভালো দাম পেলে আমরা লাভবান হব। রাজশাহী কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা বলেন, গত এক দশকে জেলায় বোরো উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। এবার এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকায় এবার আবাদ বেশি হয়েছে। ইতোমধ্যেই ৬০ শতাংশের বেশি ধান কৃষকের ঘরে ওঠে গেছে।

উম্মে সালমা জানান, চলতি মৌসুমে ৭০ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে, যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৭০ মেট্রিক টন ধান। যা ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আবাদ হয়েছিল ৬৮ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি, যেখানে উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ৩২ হাজার ৪৩৯ মেট্রিক টন। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে বোরো আবাদ বেড়েছে ১ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে। সেখানে উৎপাদন বাড়ছে ১৩ হাজার ৬৩১ মেট্রিক টন।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬৫ হাজার ৮৩৪ হেক্টর জমিতে দুই লাখ ৭১ হাজার ১৭১ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬৬ হাজার ৭৩২ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৮৯ হাজার ৯৮৮ মেট্রিক টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬৬ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৮৬ হাজার ৯৮৩ মেট্রিক টন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে