বোনকে বাঁচাতে গিয়ে পানিতে ডুবে প্রাণ গেল শিশুর

প্রতিপক্ষের হামলায় দুই জেলায় ২ জন নিহত দুই জেলায় ২ জনের আত্মহত্যা

প্রকাশ | ২৫ মে ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বোনকে বাঁচাতে গিয়ে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃতু্য হয়েছে। এদিকে নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় দুইজনের মৃতু্য হয়েছে। এ ছাড়া মৌলভীবাজার ও বাগেরহাটে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ দুইজনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি জানান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে খালাত বোনকে বাঁচাতে গিয়ে ডোবার পানিতে ডুবে সাদিয়া আকতার (৯) নামে এক শিশুর মৃতু্য হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার কোচাশহর ইউনিয়নের আরজি শাহপাড়া নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। সাদিয়া মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের জগদিশপুর গ্রামের স্বাধীন মিয়ার কন্যা এবং স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। স্থানীয়রা জানান, বাবা-মা ঢাকায় থাকায় সাদিয়া মন্ডলের মোড়ে নানা বাটু ব্যাপারীর বাড়িতে থাকত। বেলা ১১টায় নানার স'মিল এলাকায় খেলতে এসে তার সঙ্গে থাকা খালাত ছোট বোন হঠাৎ পানিভর্তি একটি ডোবায় পড়ে যায়। সাদিয়া তাকে বাঁচানোর জন্য ডোবায় নেমে পড়ে এবং খালাত বোনকে বাঁচালেও সে পানিতে তলিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃতু ঘোষণা করেন। কোচাশহর ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোনার দুর্গাপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় মাসরুল মিয়া (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে তার ছোটভাই মাসুম মিয়া (১৭)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চন্ডীগড় ইউনিয়নের একতা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকেই থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে পুরো এলাকাজুড়ে। নিহত মাসরুল মিয়া উপজেলার চন্ডীগড় ইউনিয়নের পাথারিয়া গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাজারে নাঈম ও রায়হান তারা দুই ভাই ধারালো অস্ত্র ছুরি দিয়ে অতর্কিতভাবে মাসরুল মিয়াকে আঘাত করে পরে মাসুমকে। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাসরুলকে মৃত ঘোষণা করে। এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ওসি উত্তম চন্দ্র দেব জানান, 'মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতের আটকের চেষ্টা চলছে।' স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার জানান, মৌলভীবাজারে ইসলামী ব্যাংকের এক কর্মচারীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে জেলা শহরের গোবিন্দ্র শ্রী এলাকার একটি ভাড়াটিয়া বাসা থেকে তার লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন তারা। ব্যাংকের ওই কর্মচারীর নাম নুরুল আজাদ সুমন (২২)। মৃত সুমন চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া গ্রামের মরহুম হাশেম মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে। সে ব্যাংকে চাকরি করাকালে দীর্ঘদিন যাবৎ ওই বাসায় বসবাস করে আসছে। মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম নজরুল বিষয়টি নিশ্চিত করে শুক্রবার বলেন, 'নিহত সুমন ইসলমী ব্যাংক, মৌলভীবাজার শাখার একজন কর্মচারী। গতকাল রাতে তার লাশ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পেয়ে আমরা মর্গে পাঠিয়েছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছে।' বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারী এলাকায় নিত্য গোপাল বিশ্বাস (৭৮) নামে একজন বৃদ্ধ পেটের পীড়া সাইতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে চিতলমারী হাসপাতাল থেকে খুলনায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে তার মৃতু্য হয়। বৃদ্ধের ছেলে খোকন বিশ্বাস জানান, তার বাবা নিত্যা গোপাল বিশ্বাস দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্ট ও পেটের পীড়ায় ভুগতে ছিলেন। এ অবস্থায় বৃস্পতিবার সকাল ৮টায় সবার অগোচরে ঘরে থাকা বিষপান করেন। বিষয়টি দেখতে পেয়ে দ্রম্নতই তাকে চিতলমারী হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। চিতলমারী থানার ওসি ইকরাম হোসেন জানান, উপজেলার চরবানিয়ারী গরীবপুর এলাকার বৃদ্ধ নিত্য গোপাল বিশ্বাস অসুস্থতার কারণে ঘরে থাকা বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে এই মর্মে তার ছেলে খোকন বিশ্বাস বৃহস্পতিবার রাতে চিতলমারী থানায় লিখিতভাবে জানান। রাতেই থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল করেছে। পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। হাওরাঞ্চল প্রতিনিধি জানান, কিশোরগঞ্জের ইটনায় জমি নিয়ে বিরোধে ছানু মিয়া (৬৫) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার উপজেলার থানেশ্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ছানু মিয়া থানেশ্বর গ্রামের মৃত পাগারদি মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন ছানু মিয়ার ছেলে লিটন, মেয়ে সোমা ও ভাতিজা বাবুল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ছানু মিয়ার সঙ্গে জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিবেশি মুক্ত মিয়ার বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে বৃহস্পতিবারে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষের লোকজন ছানু মিয়াকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে তাড়াইল সরকারি হাসপাতালে পরে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃতু্য হয়। সহকারি পুলিশ সুপার (অষ্টগ্রাম সার্কেল) সামুয়েল সাংমা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্তদের আটক করতে পুলিশি অভিযান চলছে।