নানা আয়োজনে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে পালিত হয়েছে বুদ্ধ পূর্ণিমা। এ উপলক্ষে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা বর্ণাঢ্য শোভযাত্রা বের করে। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী এবং বিভিন্ন নারী-পুরুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত খবর- লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি জানান, বান্দরবানে লামায় পালিত হয়েছে প্রার্থনা আর ধর্মীয় মঙ্গল কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা এ দিনটি উদযাপন করছে। বুধবার সকালে ইয়াংছা জীনামেজু অনাথ আশ্রমের উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। এ সময় উপজেলা ইয়াংছা জীনামেজু অনাথ আশ্রম থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে ইয়াংছা বাজার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জীনামেজু বৌদ্ধ বিহার গিয়ে সমবেত হয়। এরপরই বিহার প্রাঙ্গণে শুরু হয় সম্মলিত প্রার্থনা। এ ছাড়াও পঞ্চশীল ও অষ্টশীল গ্রহণের পরে বৌধিবৃক্ষ মূলে চন্দন জল প্রদানসহ নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করেন ভক্তরা। এ দিকে সকাল থেকেই উপজেলা কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার, সাবেক বিলছড়ি বৌদ্ধ বিহারে, চাম্পাতলী বৌদ্ধ বিহার ও ছাগলখাইয়া বৌদ্ধ বিহারসহ উপজেলাতে ৬৯টি বৌদ্ধ বিহারে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন করা হয়েছে। ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ নারী-পুরুষরা ইহকাল ও পরকালের শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেয়। এ সময় ধর্মনির্দেশনা প্রদান করেন লামার চাম্পাতলী বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত উপুইঞাওয়াছা মহাথের। এতে সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থোয়াইনুঅং চৌধুরীসহ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নর-নারী এবং দায়ক-দায়িকারা উপস্থিত ছিলেন। প্রতি বছর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে নানা আয়োজনে বৌদ্ধ পূর্ণিমা পালন করে আসছে। মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি জানান, খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টায় মানিকছড়ি ভিক্ষু সংঘের উদ্যোগে বিভিন্ন বিহারের অধ্যক্ষ, ধর্মীয় গুরু ও শতশত দায়ক-দায়িকাদের অংশগ্রহণে রঙ-বেরঙের বৌদ্ধ পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুনসহ মানিকছড়ি গিরি মৈত্রী সরকারি ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। পরে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে মানিকছড়ি বাজার হয়ে মহামুনি বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে ধর্মীয় আলোচনা সভায় মিলিত হয়। সভায় ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত ধর্মানন্দ থেরোর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ভদন্ত ইন্দ্রবংশ ভিক্ষুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন ভদন্ত উত্তমা মহাথের, ভদন্ত পাইন্ডিতা মহাথের, ভদন্ত বিজয়ানন্দ মহাথের, ভদন্ত সত্যজিৎ থের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মংপ্রু সাইন বাহাদুর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কুমার সুইচিং প্রু সাইন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান চলাপ্রু মারমা নিলয়, মারমা উন্নয়ন সংসদের উপজেলা সভাপতি নিপ্রম্নঅং মারমা, সহ-সভাপতি কংজপ্রম্ন মারমা, কলেজিয়েট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মংশেপ্রম্ন মারমা, মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা মিতালি চৌধুরী, ইউপি সদস্য অংগ্য মারমা ও উলাচাই মারমা প্রমুখ। শেষে মানব জাতির শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। রাজস্থলী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি জানান, রাঙ্গামাটির রাজস্থলী কেন্ত্রীয় মৈত্রী বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন করছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। বুধবার সকালে পূর্ণিমা তিথি উপলক্ষে রাজস্থলী মৈত্রী বৌদ্ধ বিহারে দেশনালয়ে এলাকাবাসীর আয়োজনে বর্ণাঢ্যর্ যালি, ত্রিশরণসহ পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধ মূর্তি দান, সঙ্ঘ দান, অষ্ট পরিষ্কার দান, পিন্ডু দান, মধু দানসহ নানাবিধ দানের কার্য সম্পাদনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। ধর্মদেশনা দেন, বিহারের অধ্যক্ষ ধর্মানন্দ মহাথেরো। এ সময় দেব মনুষ্য সুখ-শান্তি মঙ্গল কামনায় পূজনীয় ভিক্ষুরা সূত্রপাত করেন। উলেস্নখ্য, বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহা-পরিনির্বাণ এ ত্রি-স্মৃতি বিজড়িত বুদ্ধ পূর্ণিমা। তাই দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যময় বলে মনে করেন তারা।