আজ লোহাগড়ার 'ইতনা গণহত্যা দিবস'

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২৪, ০০:০০

লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি
নড়াইলের লোহাগড়ার ইতনা গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ -যাযাদি
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামের '৭১-র ২৩ মে একটি ভয়াল দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী লোহাগড়া উপজেলার পূর্বাঞ্চলের ইতনা গ্রামে একের পর এক ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শিশুসহ হত্যা করে হিরু মাস্টার, সফি উদ্দিন মোল্যা, তবি শেখ, হাদি সিকদার, নালু খাঁসহ ৩৯ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে। নিহতদের লাশ ঘর-বাড়ির জ্বলন্ত আগুনে ফেলে দিয়ে উলস্নাস করে। মুক্তিযুদ্ধে লোহাগড়া উপজেলার মধুমতী নদী তীরবর্তী পাশাপাশি দুই গ্রাম ইতনা ও চরভাট পাড়া। এই দুই গ্রামে বসেই মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর ওপর আক্রমণের নানা পরিকল্পনা করত। ভৌগোলিক ও কৌশলগত কারণে আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা এই দুই গ্রামে অবস্থান করে পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালাতেন। পাকিস্তানি বাহিনী গানবোট করে ১৯৭১ সালের ২৩ মে ভোরে ফজরের আজানের সময় ইতনা গ্রামে ইতিহাসের এক জঘন্যতম গণহত্যা চালায়। গণহত্যায় শিশুসহ ৩৯ জন নারী-পুরুষ হত্যার শিকার হয়। ইতনা গ্রাম প্রেতপুরীতে পরিণত হয়। নিহতদের কবর দেওয়ার মতো কোনো মানুষ ইতনা গ্রামে ছিল না। পরে নিহতদের আত্মীয়-স্বজন ৩৯ জনকে গ্রামেই গণকবর দিয়ে প্রাণ ভয়ে অন্যত্র পালিয়ে যান। নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায় ১৯৭১ সালে ২৩ মে ইতনা গ্রামে সংগঠিত গণহত্যার ইতিহাস অবিস্মরণীয় ঘটনা। ১৯৯৪ সালের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ২৩ মের বীর শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে ইতনা গণগ্রন্থাগারের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষক ফিরোজ আহম্মদের উদ্যোগে ইতনা গ্রামের দু'টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে গণহত্যায় নিহতদের নামের তালিকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকে প্রতিবছর ২৩ মে ইতনা গণগ্রন্থাগারের উদ্যোগে ইতনা গণহত্যা দিবস পালিত হয়ে আসছে। এ বছরও গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে ইতনা গণগ্রন্থাগারের উদ্যোগে আজ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।