প্রতীক পেয়ে প্রচারণার মাঠে প্রার্থীরা

চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচন

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
৫ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ। গত সোমবার এই ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দের পরপরই জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত- নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চতুর্থ ধাপে ৫ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই উপজেলায় তিনটি পদে চেয়ারম্যান চার, ভাইস চেয়ারম্যান চার ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী দুইজনের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীদের মধ্যে রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ পেয়েছেন আনারস প্রতীক, আনোয়ার হোসেন রানা এলএলবি পেয়েছেন মোটর সাইকেল, নজিবুলস্নাহ মজনু পেয়েছেন ঘোড়া প্রতীক, মাহমুদ আশরাফ মামুন পেয়েছেন দোয়াত কলম। এ ছাড়াও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের মধ্যে দুলাল চন্দ্র মহন্ত পেয়েছেন মাইক, শুভ আহমেদ পেয়েছেন টিউবওয়েল, ইলিয়াস আলী পেয়েছেন তালা, আমিনুল ইসলাম জুয়েল চশমা প্রতীক। এ ছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের মধ্যে শ্রাবণী আক্তার বানু পেয়েছেন হাঁস ও খালেদা বেগম পেয়েছেন কলস প্রতীক। প্রতীক বরাদ্দের পরপরই নির্বাচনী প্রচারে নেমেছেন প্রার্থীরা। শুরু করেছেন জনসংযোগ। পোস্টার টানানোর পাশাপাশি চলছে প্রচার-প্রচারণা। তীব্র গরম উপেক্ষা করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন তারা। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রম্নতি। নিজ প্রতীকের পোস্টার টানানোর পাশাপাশি মাইকেও চলছে প্রচার-প্রচারণা। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দোয়া ও সমর্থন চাচ্ছেন ভোটারদের কাছে। পাড়া-মহলস্নায় মতবিনিময়ে ব্যস্ত সময়ও পার করছেন প্রার্থীরা। এদিকে চায়ের আড্ডা থেকে শুরু করে যানবাহনের যাত্রীরাও মেতেছেন উপজেলা নির্বাচনের আলোচনায়। সব মিলিয়ে নন্দীগ্রামে সর্বত্রই এখন বইছে নির্বাচনের হাওয়া। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচার চলবে ৩ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত। এরপর ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বাবু হক জানান, নন্দীগ্রাম উপজেলায় মোট ভোটার এক লাখ ৫৭ হাজার ১৯০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৮ হাজার ৩৪৯ জন ও নারী ভোটার ৭৮ হাজার ৮৪০ জন। এ ছাড়া একজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন। এই উপজেলায় ৪৯টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে মোট ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে আমরা বদ্ধপরিকর। গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি জানান, প্রতীক নিয়েই প্রচারণায় নেমেছেন গফরগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চতুর্থ ধাপে চেয়ারম্যান পদে চূড়ান্ত পর্যায়ে তিনজন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জেলা রিটার্নিং অফিসার ও ময়মনসিংহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাহ্‌ফুজুল আলম মাসুম গত সোমবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করেন। এরপর প্রার্থীরা শুরু করেছেন নির্বাচনী প্রচারণা। নিজ নিজ প্রতীকের পোস্টার টানানোর পাশাপাশি মাইকেও চলছে প্রচার-প্রচারণা। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে এবারও নির্বাচনী মাঠে এগিয়ে আছেন সদ্য বিদায়ী সফল উপজেলা চেয়ারম্যান ও গফরগাঁও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশরাফ উদ্দিন বাদল। জানা গেছে, গফরগাঁও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার মোট ভোটার তিন লাখ ৮৭ হাজার ৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৯৭ হাজার ২৩৬ এবং মহিলা ভোটার এক লাখ ৮৯ হাজার ৮৩৮ জন। মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১১৯টি। চেয়ারম্যান পদে আশরাফ উদ্দিন আনারস প্রতীক, আফজালুর রহমান মোটর সাইকেল এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জামানত হারানো আলোচিত-সমালোচিত প্রার্থী মোহাম্মদ আবুল হোসেন ঘোড়া প্রতীক পেয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে আতাউর রহমান উড়োজাহাজ, এএসএম মজিবুর রহমান তালা, এসএম শফিক উদ্দিন চশমা, এ কে এম মাহতাব উদ্দিন সাদেক টিয়া পাখি, এনামুল হক মাইক, রাসেল বক্স টিউবয়েল এবং বুলবুল আহম্মেদ পালকি প্রতীক পেয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রেশমা আক্তার প্রজাপ্রতি, শাহনাজ পারভীন পদ্ম ফুল, নূরজাহান সিরাজী ববি কলস এবং রেহনুমা তারান্নুম দিতি ফুটবল প্রতীক পেয়েছেন। প্রতীক পেয়েই প্রার্থীরা ছুটে আসেন নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের কাছে। নিজস্ব লোকবল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন নির্বাচনী ময়দানে। গত দুই মেয়াদে গফরগাঁও উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত দলীয় প্রার্থী আশরাফ উদ্দিন বাদল। ভোটের মাঠে এবার তিনি দলীয় পরিচয় ব্যবহার না করলেও তিনিই যে আওয়ামী লীগের পছন্দের প্রার্থী, তা এখন ভোটারদের কাছে পরিষ্কার। টানা দুইবারের উপজেলা চেয়ারম্যান থাকায় তিনি উপজেলা পরিষদের উন্নয়ন কাজ করে গেছেন পরিকল্পনামাফিক। ভোটের ময়দানে আশরাফ উদ্দিন বাদলের লড়াইটা সে জন্য অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে। অপর দুই প্রার্থীর রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিক পরিচয় একবারে তলানিতে। তাদের কেউ ভোটারদের আলোচনায় আসতে পারছেন না। ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, বগুড়ার ধুনট উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ১১ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সোমবার বগুড়া জেলা প্রাশাসক কার্যালয়ে রিটার্নিং অফিসার ওই প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেন। জানা গেছে, চেয়ারম্যান পদে তিনজন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হাই খোকন মোটর সাইকেল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক টিআইএম নুরুন্নবী তারিক ঘোড়া এবং সাবেক এমপির ছেলে ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল সনি আনারস প্রতীক নিয়ে। এ ছাড়া পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন রিপন তালা, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক চপল মাহমুদ টিউবওয়েল ও সাবেক ছাত্র নেতা অমৃত কুমার লিটন মাইক প্রতীক নিয়ে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ধুনট উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পপি রানী সাহা কলস, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজনীন নাহার হাঁস, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য সুলতানা জাহান সেলাই মেশিন, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি সীমা আক্তার প্রজাপতি এবং এলাঙ্গী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক রেবেকা সুলতানা ফুটবল প্রতীক নিয়ে। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ধুনট উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নে মোট ভোটার রয়েছে দুই লাখ ৫৫ হাজার ৩২৪ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ২৬ হাজার ৬৩৪ জন এবং মহিলা ভোটার এক লাখ ২৮ হাজার ৬৮৭ জন। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে তিনজন। ধুনট থানার ওসি সৈকত হাসান বলেন, এই উপজেলার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য সদস্যরাও নিয়োজিত থাকবে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও আশিক খান জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতিক বরাদ্দ দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (রাজস্ব্য) সোহাগ চন্দ্র সাহা। গত সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক, সোহাগ চন্দ্র সাহার কার্যালয়ে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান পেয়েছেন আনারস মার্কা, তাজওয়ার মো. ফাহিম নাইন্টি পেয়েছেন ঘোড়া মার্কা ও নিজামুল হাসান (শিশির) পেয়েছেন মোটর সাইকেল মার্কা। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. আ. রাজ্জাক পেয়েছেন মাইক মার্কা, মো. ওয়ায়েস কুরুনি পেয়েছেন টিউবওয়েল মার্কা, মো. আফতাবুজ্জামান প্রিন্স পেয়েছেন তালা মার্কা, মো. আইনুল হক চৌধুরী পেয়েছেন চশমা মার্কা ও গোলাম ফিরোজ কবির পেয়েছেন টিয়া। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. পারুল বেগম পেয়েছেন বৈদু্যতিক পাখা মার্কা, শিউলি বেগম পেয়েছেন ফুটবল মার্কা, মোছা. শাবানা বেগম পেয়েছেন কলস মার্কা ও মোছা. শেফালী বেগম পেয়েছেন প্রজাপতি মার্কা। ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৫ জুন।