তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের হাওড় অধু্যষিত ইটনা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে এ উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান চৌধুরী কামরুল হাসানসহ পাঁচজন চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন। চৌধুরী কামরুল হাসান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি টানা গত দুই মেয়াদের উপজেলা চেয়ারম্যান। এবার কাপ-পিরিচ প্রতীকে লড়ছেন তিনি। তার সম্পদ ও টাকার পরিমাণ অন্য চার প্রার্থীর চেয়ে বেশি বলে দেখা গেছে হলফনামায়।
তিনি এমএসসি পাস। এবার কৃষি, বাড়ি ও দোকান ভাড়া বাবদ বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন চার লাখ ৬৫ হাজার ৩০০ টাকা। গতবার ছিল দুই লাখ ৯০ হাজার ৭৭৩ টাকা। এবার সম্মানী ভাতা, ব্যাংকে জমা, জীবন বীমাসহ দেখানো হয়েছে ৭৬ লাখ ১৭ হাজার ৯৫১ টাকা। গতবার দেখানো হয়েছিল ৩১ লাখ ১৮ হাজার ৭৫ টাকা। বেড়েছে প্রায় ৪৫ লাখ টাকা। নিজের কাছে উপহারস্বরূপ গতবারের মতো এবারও আছে ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার।
নিজ এলাকায় উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়াসহ ৮ একর ৪৭ দশমিক ২৫ শতাংশ জায়গা রয়েছে তার। গতবার ছিল ৮ একর। কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া দুই শতাংশ জায়গার ওপর হাউজ বিল্ডিংয়ের ঋণে নির্মিত ভবন গতবার এবং এবারও দেখানো হয়েছে। ইটনার থানেশ্বর এলাকায় পৈতৃক টিনের বাড়ি আগের মতোই দেখানো হয়েছে। ঢাকার কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল প্রকল্পে তিন কাঠা জমি গতবারের মতোই এবরাও আছে। তবে এবার সাভারে শূন্য দশমিক শূন্য ৪১২৫০ অযুতাংশ জায়গা দেখানো হয়েছে। তবে গতবার কক্সবাজারের চ্যাপ্টখালীতে ৭ লাখ টাকা মূল্যের ১০ শতাংশ জায়গা দেখানো হয়েছিল, যা এবার নেই। এবার হাউজ বিল্ডিংয়ের ঋণ দেখানো হয়েছে ১২ লাখ টাকা, যা গতবার ছিল না। গতবারের মতো এবারও স্ত্রীর নামে বিয়ের উপহার হিসেবে দেখানো হয়েছে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার। স্ত্রীর নামে নিজ এলাকায় এক দশমিক ৮৯ একর এবং কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বিন্নাটি এলাকায় ৩৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ জমি দেখানো হয়েছে। শূন্য দশমিক ২২ বোরের একটি রাইফেল ও শূন্য দশমিক ৩২ বোরের পিস্তল গতবারও ছিল, এবারও আছে।
এদিকে ইটনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খলিলুর রহমান এবার আনারস প্রতীকে দাঁড়িয়েছেন। তার পেশা ও কৃষি থেকে বার্ষিক আয় দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা। স্ত্রীর শিক্ষকতা থেকে বার্ষিক আয় দুই লাখ টাকা। প্রার্থীর কাছে নগদ ও ব্যাংকে জমা আছে ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৪৭০ টাকা। তবে কৃষি ব্যাংকে ঋণ আছে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা। উপহার হিসেবে স্বর্ণালংকার আছে ১০ তোলা। কৃষিজমি ৩ দশমিক ০৩ একর। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ২০ শতাংশের বসতবাড়িতে চৌচালা টিনের ঘর।
এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কাউছার খান মিলকী মোটর সাইকেল প্রতীকে দাঁড়িয়েছেন। তার বার্ষিক আয় দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা। নগদ আছে ১৩ লাখ টাকা। ১০ তোলা স্বর্ণালংকার এবং জেলা শহরে ০৫ অযুতাংশ জায়গা আছে। তার নামে একটি হত্যা মামলা হলেও অভিযোগপত্র থেকেই তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল।
অপর আওয়ামী লীগ নেতা স্নাতক পাস প্রার্থী ফেরদৌস ঠাকুরের প্রতীক টেলিফোন। তার বার্ষিক আয় দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা। নগদ, সঞ্চয়পত্র ও সঞ্চয় স্কিম বাবদ আছে ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ফ্রিজ, টিভি, ওয়াশিং মেশিনসহ ইলেকট্রনিকসামগ্রী আছে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকার। আসবাব আছে ৫ লাখ টাকার। পৈতৃক সূত্রে অকৃষি জমি আছে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। স্ত্রীর নামে সঞ্চয়পত্র আছে ১০ লাখ টাকার।
পাঁচজনের মধ্যে সবচেয়ে গরিব প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকে লড়ছেন ফজলুর রহমান। তিনি এলএলবি'র ছাত্র বলে লিখেছেন হলফনামায়। নিজেকে বিএনপির সমর্থক বলে দাবি করেছেন। তিনি হলফনামায় নিজেকে পলস্নী চিকিৎসক লিখেছেন। তার হলফনামায় বার্ষিক আয়, নগদ টাকা এবং ব্যাংকে সঞ্চয়ের ঘর একেবারে শূন্য। একটি চৌচালা টিনের ঘর থাকলেও জায়গাজমি নেই। নামমাত্র ইলেকট্রনিকসামগ্রী আর সামান্য কিছু আসবাব পেয়েছেন উপহার হিসেবে। তবে তার কৃষি ব্যাংকে ঋণ আছে দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা, আর একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প বাবদ ঋণ আছে ৭০ হাজার টাকা।