নারীর ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অপরাজিতা রিজিয়া পারভিন

প্রকাশ | ২২ মে ২০২৪, ০০:০০

মিহানুর রহমান মিঠু, বাগেরহাট সদর
আমাদের সমাজ এখনো পুরোপুরি নারীবান্ধব নয়। 'নারী-পুরুষ সমান অধিকার' ট্যাগলাইন হাতে নিয়ে এখনো নারীদের হাঁটতে হয় তার অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের জাঁতাকলে বহু নারীই নিজেকে গুটিয়ে নেন এক কোনে। কিন্তু কেউ আবার শত প্রতিবন্ধকতা ঠেলে সোচ্চার হন অধিকার আদায়ে, ছিনিয়ে আনেন সফলতা নামের সোনার হরিণ। তেমনি এক লড়াকু নারী অপরাজিতা রিজিয়া পারভিন। বর্তমানে বাগেরহাট সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি ১৯৭৬ সালে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের চিত্রা গ্রামের এক রক্ষণশীল নিম্নমধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে তিনি নিজস্ব চিন্তাচেতনা ব্যাপক পরিবর্তন করেন। নিজেকে একজন উন্নয়নকর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে সচেষ্ট হন। নারী-পুরুষের সমতায় বিশ্বাস করেন এবং নারী ও শিশুসহ সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করতে ভালোবাসেন। বর্তমানে রাষ্ট্রের স্থানীয় সরকার কাঠামোর মধ্যম স্তরে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদ আইন ২০১৯-এর ৭ (১) (ণ) ধারা অনুযায়ী 'বিশিষ্ট সমাজকর্মী'র মনোনয়ন দিয়ে জারীকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ৬৪ জনের মধ্যে ২৮ নং তালিকাভুক্ত বাগেরহাট জেলার সমাজকর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। নারীর ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকারের জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাট জেলায় ২০১৮ সালে বাগেরহাট জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য শ্রেষ্ঠ জয়িতা অ্যাওয়াড অর্জন করেন। ২০১৯ সালে খুলনার রূপান্তর নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের কার্যক্রম শুরু করেন। তখন রূপান্তর সুইজারল্যান্ডের আর্থিক সহযোগিতায় ও হেভেটাস ইন্টার কো-অপরেশনের নেতৃত্বে মাঠ পর্যায়ে অপরাজিতা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কার্যক্রম শুরু হয়। এছাড়া তিনি গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশের ৯০বি অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে সব রাজনৈতিক দলের কমিটিতে কমপক্ষে ৩৩% নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত না হওয়ায় এর মেয়াদ ২০২০ থেকে ২০৩০ সাল করার দাবিতে নারীনেত্রীদের নিয়ে মানববন্ধন করেছেন। বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা জাতীয়তাবাদী দল ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকসহ সংসদ সদস্যদের স্মারকলিপি দিয়েছেন। রাজনৈতিক দলের সব কমিটিতে ৩৩% নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য এডভোকেসি কর্মসূচি চলমান রেখেছেন। অপরাজিতাদের নিয়ে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইন চলমান রেখেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ১০ উদ্যোগের অন্যতম নারীর ক্ষমতায়ন। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আইন ২০৩০ সালের মধ্যে সব রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩% নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি, তিনি নারীদের উপজেলা পরিষদে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছেন। বাগেরহাট জেলা ও উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি এবং বাগেরহাট জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা বিভাগীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সভাপতি হিসেবে আমি এখন আরও সাফল্যের সঙ্গে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে পারছি। আগামীতেও পারব ইনশাআলস্নাহ।