দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন

ভোটার উপস্থিতি কম অধিকাংশ কেন্দ্র ফাঁকা নারী ভোটারের উপস্থিতি বেশি টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জে এক ঘণ্টায় পড়েছে একটি করে ভোট

প্রকাশ | ২২ মে ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে মঙ্গলবার ১৫৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুই-একটি বিশৃঙ্খল ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। কেন্দ্রগুলো দিনের অধিকাংশ সময় ফাঁকা ছিল। এদিকে টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর ও সিরাজগঞ্জের উলস্নাপাড়ায় এক ঘণ্টায় মাত্র একটি করে ভোট পড়ে। এছাড়া উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট- সিলেট অফিস জানায়, সিলেটের তিন উপজেলায় (কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট) দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম চলে। কোনো সংঘাত-সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি। ভোটকেন্দ্রে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। সরেজমিনে কোম্পানিগঞ্জের কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৮টা থেকে ভোটাররা ভোট দিতে আসেন। ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। নির্ধারিত সময়েই ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এই কেন্দ্রের ভোটার সাইফুল ইসলাম বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারছি। ভোট দিতে এসে পরিচিত অনেকের সঙ্গেই দেখা হয়ে ভালো লাগছে। কেন্দ্রে নারী ভোটারের উপস্থিতি ভালো। এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে পুলিশসহ বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এড়াতে তারা প্রস্তুত রয়েছেন। বিভিন্ন কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরব উপস্থিতি রয়েছে। জৈন্তাপুর ইউএনও উম্মে সালিক রুমাইয়া জানান, জৈন্তাপুরে ৪৬টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ চলে। ২৯টি কেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে তুলনামূলক বেশি। কোম্পানীগঞ্জ ইউএনও সুনজিত কুমার চন্দ জানান, ভোটাররা উপজেলায় ৪০টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে ৭ থেকে ৮টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গোয়াইনঘাট ইউএনও তৌহিদুল ইসলাম জানান, ২৬টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। এবং গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ৫১টি কেন্দ্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর ও কালকিনি প্রতিনিধি জানান, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেশির ভাগ ভোট কেন্দ্রগুলো দিনের অধিকাংশ সময় ফাঁকা ছিল। যতটুকু ভোট পড়েছে তা ছিল শান্তিপূর্ণ। কোথাও কোনো বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম থাকায় নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বসে থেকে অলস সময় পার করেছেন। জানা গেছে, কালকিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। সকাল ১০টার দিকে দড়িচর লক্ষ্ণিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের সামনে চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুজ্জামান সরদার ও তার সমর্থকদের লাঞ্ছিত করে মোটর সাইকেল প্রার্থী তৌফিকুজ্জামান শাহিনের সমর্থকরা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। এছাড়া কোথাও বড় ধরনের বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। লাইনে দাঁড়িয়ে কাউকে ভোট দিতে দেখা যায়নি। উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার এক লাখ ৮৫ হাজার ১০২ জন ভোটার ছিল। কেন্দ্র ছিল ৭৩টি। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোনা জানান, নেত্রকোনায় মঙ্গলবার নেত্রকোনা সদর, বারহাট্রা ও পূর্বধলা উপজেলায় উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা শহরের আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নাগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাটলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আবু আব্বাছ ডিগ্রি কলেজ, কাকলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খতিবনগুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কিছুটা কম। নির্বাচন চলাকালে কোথাও কোনো অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি। জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ, পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ, জেলা আনসার ও ভিডিপির কমান্ড্যান্ট গোলাম মৌলাহ তুহিনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। স্টাফ রিপোর্টার, টাঙ্গাইল জানান, টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নেই ভোটের উৎসব। বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। কোনো কেন্দ্রে ঘণ্টায় একটি, আবার কোনো কেন্দ্রে ১০টি ভোট পড়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের মোবারক মাহমুদ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, পুরো কেন্দ্র ফাঁকা। ভোটকেন্দ্রে কোনো প্রার্থীরই এজেন্ট নেই। এ সময় ওই কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা জানান, এক ঘণ্টায় একটি ভোট পড়েছে। ভোটার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা জানান, কোনো কোনো প্রার্থীর এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখানোর কারণে তারা কেন্দ্রে আসতে ভয় পাচ্ছেন। স্থানীয়রা লোকজন জানান, এখন ধান কাটার মৌসুম। যে কোনো সময় বৃষ্টি-বাদল শুরু হতে পারে- তাই ধানকাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। এজন্য ভোটার উপস্থিতি কম। এদিকে ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. জহুরুল ইসলাম জানান, ভোটার উপস্থিতি কম। এছাড়া কোনো কোনো প্রার্থীর এজেন্ট অনুপস্থিত রয়েছেন। তবে এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে কিনা তা তিনি জানেন না। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার তিন হাজার ২০০ জন। প্রসঙ্গত, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে কালিহাতী, ভূঞাপুর ও ঘাটাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী জানান, নীলফামারীর জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ ও সৈয়দপুরে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম দেখা গেছে। কোন কোন কেন্দ্রে একেবারেই নেই। ফলে অনেক কেন্দ্রে দুই ঘন্টায় মাত্র ৫-৬টি ভোট পড়েছে। এসব কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ১০ টায় গিয়ে ভোটার শূন্য দেখা গেছে। সৈয়দপুর পৌর এলাকার অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতির চিত্র এমনই। একই অবস্থা উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নের। এরমধ্যে সৈয়দপুর শহরের আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে সরেজমিনে গেলে প্রিজাইডিং অফিসার সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের প্রভাষক সাকেরুজ্জামান জানান, দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে একজন ভোটারও ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৬৪৫ জন। একই উপজেলার নয়াবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আনসার ভিডিপি সদস্য, পুলিশ ও পুলিং এজেন্ট ও অন্যান্য কর্মকর্তা ছাড়া ভোটার নেই। এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সৈয়দপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক কামরুল হাসান জানান, সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২৬ ভোট পড়েছে। এদিকে, শহরের প্রাণকেন্দ্র সৈয়দপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, এই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৪৮৪ জন। এর মধ্যে দুই ঘন্টায় ভোট পড়েছে ১০০। অন্যদিকে, ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ হাজার ৯৫০ ভোটারের মধ্যে ৯ জন ভোট দিয়েছেন। এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, মানুষ কাজে ব্যস্ত থাকায় এমনটি হয়েছে। মহিলা কলেজ কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬০টি ভোট পড়েছে। এখানে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৫০৯ জন। উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসার মাহফুজার রহমান বলেন, আসলে সকালে শহরের লোকজন বাজার সদাই করা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। একারণে এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে। জেলা রিটানিং কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরেপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, বিজিবি মাঠে কাজ করছে।' পুলিশ সুপার গোলাম সবুর বলেন, জেলার তিন উপজেলা নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে বড় কোন অঘটন ছাড়াই শেষ হলো দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ভোট শেষে চলছে গণনা। প্রতীক্ষা এখন ফলাফলের। ঠাকুরগাঁওয়ে দুইটি উপজেলায় ২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরমধ্যে সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩জন এবং মহিলা ভাইস চেয়াম্যান পদে ২জনসহ মোট ৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। রাণীশংকৈলে ১২ জন প্রার্থী। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন। সদর উপজেলায় ১৮৫টি ভোট কেন্দ্র ও ১৪৫৩ বুথে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ১৭৫ জন। রাণীশংকৈলে ৬৬ ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার রয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩ ৯১ জন। সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, দ্বিতীয় ধাপে সিরাজগঞ্জের উলস্নাপাড়া ও তাড়াশ উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। তবে ভোটার উপস্থিতি অনেকটাই কম। সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত এই এক ঘণ্টায় উলস্নাপাড়া উপজেলার উলস্নাপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রের ১০নং বুথে এক ঘণ্টায় একটি ভোট পড়েছে। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়। ওই কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার সরকারি আকবর আলী কলেজের প্রভাষক আহসান কবির এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবেই চলছে, তবে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম। যার কারণে এ রকম ভোট পড়েছে। উলেস্নখ্য, ওই ভোট কেন্দ্রের মোট ভোটারের সংখ্যা ৪ হাজার ৯২৬ জন, বুথ রয়েছে ১৫টি। নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানান, মঙ্গলবার সকালে নিয়ামতপুর সদর ইউনিয়নের বাসুদেপপুর সপ্রাবি ও বাসুদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সাধারণ মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে খুশি সাধারণ ভোটাররা। এছাড়া উপজেলার কয়েকটি ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে আসছেন। উপজেলার বাসুদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুলালি নামের এক ভোটার বলেন, 'সকালে সংসারের কাজ সেরে ভোট কেন্দ্রে এসেছি। এসেই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে পরিবারের সবাই মিলে ভোট দিতে এসেছি।' মলিস্নকা বর্মণ নামের আরেক ভোটার বলেন, 'ভোটকেন্দ্রে কোনো সমস্যা নেই। কেউ কোন জোর করেনি, নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।' প্রিজাইডিং অফিসার সুজন আলী ও কমন কুমার সরকার বলেন, সকাল থেকেই ভোটারের ভিড় করছেন কেন্দ্রে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি আরও বাড়ে। উলেস্নখ্য, নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ছয়জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি জানান, শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হলো ফরিদপুরের সালথা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার ৫০টি কেন্দ্রে চলে এই ভোটগ্রহণ। সূত্রে জানা গেছে, সালথা উপজেলার ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৪২ হাজার ১৪৮ জন। উপজেলার ৫০টি কেন্দ্রে ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে দু'জন এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিকাল সাড়ে ৪টায় সালথা ইউএনও ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার আনিছুর রহমান বালী বলেন, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেদিয়ে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সালথা উপজেলার ৫০টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। শার্শা (যশোর) প্রতিনিধি জানান, যশোরের সীমান্তবর্তী উপজেলা শার্শায় নির্বাচনে ৩৭টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা বাড়তে থাকে। যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ার্দার সাংবাদিকদের জানান, এই উপজেলায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়েছে। কোথাও কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কেউ বিশৃঙ্খলা ঘটানোর চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসক আবরাউল হাছান মজুমদার জানান, সকালে ভোটারের উপস্থিতি কম থাকলেও দুপুরের পর ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ে। উপজেলা নির্বাচনে এই প্রথম ইভিএমে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। তাই দেরি হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে চলছে। শার্শা ইউএনও ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ চলছে। শার্শা উপজেলা নির্বাচনে ১১টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৯ হাজার ১১১ জন। ১০২ ভোটকেন্দ্রে ৮১৪টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হয়। রাজস্থলী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি জানান, রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দু'জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উপজেলা সহকারী নির্বাচন কর্মকর্তা অনীক বড়ুয়া বলেন, উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে ১৪টি ভোটকেন্দ্রে ৬৪টি বুথে সর্বমোট ২০ হাজার ৮৬৮ জন ভোটার রয়েছেন। মোট ২০৬ জন প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং সহকারী পোলিং অফিসার নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেন। রাজস্থলী উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও ইউএনও সজীব কান্তি রুদ্র জানান, প্রতিটি ইউনিয়নে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট এবং প্রতিটি কেন্দ্রে পুলিশ আনসার মোতায়েনের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি টহল দিচ্ছে। এদিকে সকাল ৮টায় কুইক্যা ছড়ি সরকারি প্রাথমিক কেন্দ্রে দেখা যায়, ভোটারের উপস্থিতি নেই বললে চলে। সকাল সাড়ে ৮টায় ইসলামপুর স্কুল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় সেখানেও ভোটার উপস্থিতি কম। এ সময় ভোট দিতে আসা প্যারালাইসিস রোগী মাইকো খিয়াং বলেন, 'ভোট দিতে এসে খুব ভালো লাগছে।' এ সময় কথা হয় ভোট দিতে আসা ৯০ বছর বয়সি ছালমা বেগমের সঙ্গে। তিনিও বলেন, ভোট দিতে এসে খুব ভালো লেগেছে। এদিকে সকাল সাড়ে ৯টায় ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কেন্দ্রে এসে দেখা যায়, মহিলাদের লাইনে কিছুটা ভিড়। তবে পুরুষ লাইনে ভোটার কম। এদিকে পাহাড়ি অধু্যষিত এলাকা লংগদু, চুষাকপাড়া ও নারাইছড়ি কেন্দ্রে সকাল হতে মহিলা ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।