জরিপের তথ্য

দরিদ্রতম ২০% পরিবার পায় না স্বাস্থ্যসেবা

বাংলাদেশে সরকারি সুবিধা জনসংখ্যার চাহিদা অনুযায়ী বণ্টন করা হয়নি। দেশের ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ সর্বাধিক দরিদ্র এবং ২০ দশমিক ১ শতাংশ জনগণ দরিদ্র

প্রকাশ | ২০ মে ২০২৪, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
ম যাযাদি রিপোর্ট সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ৭০ দশমিক ৫ শতাংশ নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার। এ কারণে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানান হয়রানির কারণে এসব মানুষ তালিকায় নামও লেখাতে পারে না। এমনকি দেশের দরিদ্রতম ২০ শতাংশ পরিবার মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবাগুলোর সরকারি সুবিধার ২০ শতাংশও ভোগ করতে পারে না। রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এসডিজি অ্যাকশন অ্যালায়েন্স নামের একটি সংগঠন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এসডিজি অ্যাকশন অ্যালায়েন্স ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা, ওষুধ এবং চিকিৎসাসেবাসহ এসডিজির প্রাসঙ্গিক সূচকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নোয়াখালী, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল জেলার মোট ৬০০ জন নাগরিকের ওপর জরিপ পরিচালনা করে। এই জরিপে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সুক্ষায় ন্যায়সঙ্গত কিছু বিষয় ওঠে আসে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশে সরকারি সুবিধা জনসংখ্যার চাহিদা অনুযায়ী বণ্টন করা হয়নি। সবচেয়ে ধনী ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ধনী ২১ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়া দেশের ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ সর্বাধিক দরিদ্র এবং ২০ দশমিক ১ শতাংশ জনগণ দরিদ্র। দরিদ্রতম ২০ শতাংশ পরিবার মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবাগুলোর সরকারি সুবিধার ২০ শতাংশও ভোগ করতে পারে না। আলোচকরা বলেন, প্রত্যন্ত গ্রামে এবং দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় সুবিধাবঞ্চিত এবং প্রান্তিক গোষ্ঠী খুব কমই মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে থাকে। কমিউনিটি পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবায় প্রান্তিক মানুষের অভিজ্ঞতা অপর্যাপ্ত, পেশাগত দক্ষতাসম্পন্ন চিকিৎসকের অভাব এবং চিকিৎসা ব্যয়ের চাপ ও আর্থিক সংকট অন্যতম। এ ছাড়া চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় ওষুধের ঘাটতি, চিকিৎসকের অনিয়মিত উপস্থিতি। স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের দূরত্ব এবং দুর্বল যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত সমস্যা অন্যতম। সংবাদ সম্মেলনে আলোচকরা আরও বলেন, প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা পেতে যেসব প্রতিবন্ধকতা উঠে এসেছে, তা এখনই মোকাবিলা করতে হবে। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য বিরাজমান বৈষম্য দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ্য নিতে হবে। এমনকি সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্য অবকাঠামো, চিকিৎসার মান বৃদ্ধি করতে হবে। কর্মজোটের আহ্বায়ক এনআরডিএস নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়াল বলেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্য সত্ত্বেও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। স্বাস্থ্যসেবার ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন সূচকে ব্যাপক অগ্রগতি হলেও গরিব ও প্রান্তিক মানুষসহ সাধারণ জনগণ বৈষম্যের স্বীকার। গ্রামপর্যায়ে সরকারি কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ বাড়ানোসহ নতুন জনমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নের দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাওয়ার ক্ষেত্রে ধনী ও দরিদ্র মানুষের বৈষম্য, সরকারের ২০৩২ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চতকরণের ঘোষণা পূরণের অঙ্গীকারকে দুর্বল করবে। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বন্ধনের নির্বাহী পরিচালক আমিসুজ্জামান মিলন। তিনি বলেন, সরকারি বরাদ্দ বিশ্লেষণ করে দাবি করা হয়, দরিদ্র জনসংখ্যার চাহিদা পূরণের জন্য সরকারের সম্পদ বরাদ্দ অপর্যাপ্ত, স্বাস্থ্য খাতে পর্যাপ্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করতে অবিলম্বে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশের কম ব্যয় করে, যা বৈশ্বিক গড় ৫ দশমিক ৯ শতাংশের চেয়ে অনেক কম।