জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলাতে বোরো ফসলের মাঠে এখন পাকা ধানের সোনালি হাসি। উজ্জ্বল রোদে সেই হাসি আরও ঝলমল করে উঠছে। অধিকাংশ মাঠেই কাস্তে নিয়ে ধান কাটার উৎসবে নেমে পড়েছেন কৃষক। আবহাওয়া ও অনুকূল থাকায় এবারও ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এতে কৃষকের মন ভরছে ঠিকই কিন্তু বেশিক্ষণ তাদের পক্ষে সেই খুশি ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ তাদের উৎপাদন খরচ উঠবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এজন্য কৃষক যাতে ধানের ন্যায্যমূল্য পায়, তা নিশ্চিত করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন কৃষকরা।
মাঠ পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলা পৌর সদরসহ পাঁচটি ইউনিয়নে বোরো ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। অপেক্ষাকৃত নিচু জমিগুলো থেকে ধান কাটা শুরু করেছে কৃষক। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, পুরোদমে ধানকাটা মাড়াই শুরু করতে আরও সপ্তাহখানেক লাগবে।
উপজেলার বোরো ধানের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় অধিকাংশ বোরো জমির ধান পেকে সোনালি রঙে শোভা ছড়িয়েছে। পাকা ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক-শ্রমিক। শ্রমিকের পাশাপাশি ধান কাটায় ব্যবহার হচ্ছে আধুনিক যন্ত্র কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন ও রিপার মেশিন।
কৃষকরা জানান, এবার প্রতি বিঘা বোরো চাষে সাড়ে ১৩ হাজার থেকে প্রায় ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে এবার উৎপাদন ভালো হয়েছে। কিন্তু উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে চিন্তা এখনো কাটেনি। এলাকায় শ্রমিক সংকট রয়েছে। এখনো দেশের অন্য স্থান থেকে শ্রমিকরা এসে পৌঁছাননি। আবার শ্রমিক পেলেও দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত মজুরি। সবে মাত্র ক্ষেতলাল উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে ধান কেটে ঘরে তুলতে শুরু করেছে কৃষক।
রেজাউল করিম বলেন, যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশানুরূপ ধানের ফলন ঘরে তোলা সম্ভব হবে। সে হিসেবে বিঘাপ্রতি ২৪ থেকে ২৬ মণ ধান হতে পারে। আর প্রকৃতি যদি বিরূপ আচরণ করে সে ক্ষেত্রে কী হবে তা মহান সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন।
তিনি আরও বলেন, কৃষকের সবকিছু নির্ভর করবে ধানের বাজার মূল্যের ওপর। ভালো ফলনের পাশাপাশি বাজার মূল্য সন্তোষজনক হলে উৎপাদন খরচ উঠবে। আর তা নাহলে কৃষকরা লোকসানে পড়বেন। তবে এবার ধান কাটার শুরুতেই ধানের দাম ভালো পেয়ে কৃষকরা খুশি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষিবিদ জাহিদুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১০ হাজার ৫১৬ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে ৫ থেকে ৭ শতাংশ। এখনো পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়নি তবে আগামী সপ্তাহ থেকে আশা করা যায়। কৃষকরা খুশি এবার ধানের ফলন ও দাম পেয়ে।