আগামীকাল ২১ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের প্রচার রোববার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। আর এ নির্বাচন ঘিরে শেষ মুহূর্তে প্রার্থীরা বিরামহীন গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রত্যেক প্রার্থীর, কর্মী ও সমর্থকরা প্রচার-প্রচারণা ও প্রতীকসংবলিত হ্যান্ডবিল বিতরণে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘোরেন। নিজ প্রার্থীর গুণকীর্তনে চায়ের স্টল, ভ্যানস্ট্যান্ড ও জনবহুল স্থান মুখরিত হয়ে উঠছে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে চেষ্টা করেন প্রার্থী ও কর্মীরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত সংবাদ-
গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি জানান, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বেশ জমে উঠেছে। প্রচারণার শেষ দিন রোববার সকাল থেকে গ্রামেগঞ্জে চলে মাইকিং। দুপুরের পরে নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রার্থীরা গণসংযোগে ছুটে চলেন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে। তবে প্রার্থীরা সাধারণ মানুষের কাছে দোয়া ও ভোট প্রার্থনার বদলে জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাকর্মীদের ম্যানেজের চেষ্টা করছেন গভীর রাত পর্যন্ত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে চলে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। তবে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোটগ্রহণ হবে বলে জানিয়েছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রীতম সাহা।
জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আটজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সবাই প্রচার-প্রচারণা শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত তিনজন চেয়ারম্যান ও একজন ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। প্রচার প্রচারণার মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো প্রার্থীদের নিয়ে উপজেলাজুড়েই চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। সরে দাঁড়ানো প্রার্থীদের কর্মী সর্মথকরা অন্য প্রার্থীদের কাছে চলে যাওয়ায় ভোটের মাঠে দেখা দিয়েছে নতুন মোড়।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো প্রার্থী সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শাহিদুজ্জামান খোকনের সহধর্মিণী লাইলা আরজুমান বানু শিলা, গাংনী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন, অ্যাডভোকেট এ কে এম শফিকুল আলম। সব শেষে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রেজাউল করিম প্রতীক (চশমা) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে অপর এক প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
বর্তমানে গাংনী উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক (আনারস), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুল (হেলিকপ্টার), জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (সদ্য বহিষ্কৃত) জুলফিকার আলী ভুট্টো (কই মাছ), উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল হক জুয়েল (ঘোড়া), মুকুল আহমেদ (শালিক পাখি) প্রতীক নিয়ে পাঁচজন প্রার্থী গণসংযোগ করছেন। সবাই নিজেদের জনপ্রিয় নেতা হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং জয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন।
পর্যায়ক্রমে তিনজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পরেই দেখা গেছে উপজেলার ৯ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মধ্যে সাতজন চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেকের (আনারস) প্রতীকের পক্ষে ভোটের মাঠে নেমেছেন। এ ছাড়াও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো প্রার্থী যুবলীগ সভাপতি মোশারফ হোসেন ও সাবেক গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম এমএ খালেকেরে পক্ষে নির্বাচনে ভোট প্রার্থনা ও প্রচারণা চালান।
অন্য দিকে গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক মকলেছুর রহমানের পক্ষে নির্বাচনে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক এমপি মকবুল হোসেন, বর্তমান পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মজিরুল ইসলাম। এ ছাড়াও সাবেক এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন ও চেয়ারম্যান সিন্ডিকেট বিরোধী নেতা ও চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো অ্যাডভোকেট কে এম শফিকুল আলম মৌন সমর্থন দেওয়ায় তাদের নেতাকর্মী সমর্থক মকলেছুর রহমান মুকুলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এ দিকে বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ খালেকের পক্ষে ইউপি চেয়ারম্যানরা সমর্থন জানানোর পর সর্বত্র নানা সমালোচনা দেখা দিয়েছে। অভিযোগ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যানরা এমএ খালেকের পক্ষ নিয়েছেন। ফলে ভোটাররা অনেকেই বেকে বসেছেন।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রার্থীরা জনপ্রতিনিধি আর দলীয় নেতাকর্মীদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। কোনো ভোটারের কাছে ভোট চাচ্ছেন না। প্রার্থীরা মনে করছেন, জনপ্রতিনিধিরাই তাদের ভোট পাইয়ে দেবে। ভোটাররা আরও জানান, আগে নির্বাচনের সময় বাজার ঘাটে ও দোকানে প্রার্থীরা এসে ভোট প্রার্থনা করতেন। এখন সেটি হচ্ছে না। প্রার্থীদের ভরসা এখন জনপ্রতিনিধিরা।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রীতম সাহা জানান, অফিসিয়ালভাবে কোনো প্রার্থীর বসার সুযোগ নেই। চেয়ারম্যান পদে আট, ভাইস চেয়ারম্যান তিন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তিনজনের জন্যই ব্যালট পেপার চলে এসেছে। এখন আমরা সব প্রতীকেরই ভোটগ্রহণ করব।
দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাচন ঘিরে শেষ মুহূর্তে প্রার্থীরা বিরামহীন গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে চালান নানা কৌশল ও শ্রম্নতিমধুর বক্তব্য। সবমিলিয়ে গণসংযোগ ও প্রচারণায় যেন কোনো প্রার্থীর দম ফেলার ফুসরত নেই।
দুপচাঁচিয়ায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজনসহ মোট ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফজলুল হক প্রামাণিক (আনারস প্রতীক), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আহম্মেদুর রহমান বিপস্নব (মোটরসাইকেল), বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবা নাসরিন রূপা (কাপ পিরিচ)। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী- দুপচাঁচিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান মহলদার (তালা), আবু বক্কর সিদ্দিক আলম (টিউবওয়েল), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আলী খান আঙ্গুর (উড়োজাহাজ), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাহমিদা আক্তার ফারজানা (হাঁস), খাতিজা আক্তার রিতা (প্রজাপতি) ও উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত মহিলাবিষয়ক সম্পাদক সখিনা বেগম (ফুটবল)।
সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও ইউএনও জান্নাত আরা তিথি জানান, ৫৭টি কেন্দ্রে ৫৭ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৪০২ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও ৮০৪ জন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ ও আনসার সদস্যের পাশাপাশি বিজিবি এবংর্ যাবের টহল টিম দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়াও এ উপজেলায় আটজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করছেন।
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি জানান, ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচনী আলোচনা-সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠছে চারদিক। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্র এখন নির্বাচনকেন্দ্রিক আলোচনা। কার অবস্থা এখন পর্যন্ত কেমন- এ নিয়ে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে চলে তর্ক-বিতর্ক। যুক্তি, পাল্টা যুক্তিও চলে গভীর রাত পর্যন্ত। নির্ঘুম রাতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও এলাকায়-এলাকায় গিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন। এক কথায় জমে উঠেছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
তবে নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ, দলীয় প্রতীক কিংবা রাজনৈতিক সংশ্লেষ না থাকলেও আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো কর্মী-সমর্থক প্রার্থী হিসেবে না থাকায় নির্বাচনী উত্তাপ খানিকটা কম। এক শ্রেণির ভোটারও নির্বাচন নিয়ে তেমন মাথা ঘামাচ্ছেন না।
জানা গেছে, বোয়ালমারীতে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ছয়জন। প্রত্যেকের মনোনয়নপত্রই বৈধ ঘোষিত হয়েছে। তারা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া, বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মৃধা মিলন, চতুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা শরীফ মো. সেলিমুজ্জামান লিটু, জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মৃধা লিটন ও ব্যবসায়ী হিরু মুন্সী।
চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া একজন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। পরপর তিনবারের নির্বাচিত এ চেয়ারম্যানের প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডেই রয়েছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক। তিনি সহজেই এবারের নির্বাচনে জয়লাভ করবেন বলে তার কর্মী সমর্থকরা মনে করছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম বাকের ইদ্রিস বলেন, মানুষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আর শান্তিপ্রিয় নেতা চায়। এদিক দিয়ে এম এম মোশাররফ হোসেন মুসা মিয়া একজন যোগ্য নেতা। এবার মুসা মিয়া বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন বলে আশা করছি।
চতুল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা শরীফ মো. সেলিমুজ্জামান লিটুরও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার বিশেষ করে যুবক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তিনি এবারের নির্বাচনে জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবেন বলে তার কর্মী সমর্থকদের আশা। এ ব্যাপারে যুবলীগ নেতা আল মামুন রনি বলেন, নির্বাচনে শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটুর জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। ভোটারদের কাছে গেলে দারুন সাড়া পাচ্ছি।
আরেক প্রার্থী জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মৃধা লিটন উপজেলায় বেশ পরিচিত মুখ। তিনি এর আগের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হলেও ভালো ভোট পেয়েছিলেন। এবারও তিনি শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবেন বলে তার সমর্থকরা মনে করছেন।
এ ছাড়া বর্তমান উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজারও উপজেলার শেখর, রূপাপাত ইউনিয়নে নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মৃধা মিলনও নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবেন বলে তার অনুসারীরা মনে করছেন। তবে চেয়ারম্যান পদে একজন প্রার্থীর ভোটের মাঠের অবস্থা আশানুরূপ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ওই প্রার্থী নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারেন কিংবা নির্বাচন থেকে সরে যেতে পারেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
বোয়ালমারী উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন চারজন। প্রার্থীরা হলেন- সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য রাহাদুল আকতার তপন, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এম শাফিউলস্নাহ্ সাফি, মো. শফিকুল হক টিপন মিয়া ও আসাদুজ্জামান পরশ সিকদার। তবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন পাঁচজন।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান রেখা পারভীন, মণিকা রাজবংশী, শাহনাজ বেগম, পারভীন রহমান, ঝর্ণা বেগম ও কাজী সালমা শাহিন।
বেলাবো (নরসিংদী) প্রতিনিধি জানান, নরসিংদীর বেলবোতে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। জয়ের আশায় ভোটারদের দ্বারে দ্বার ভোট চেয়ে বেড়াচ্ছেন পাড়া-মহলস্নায়। উপজেলার আটটি ইউনিয়নে বইছে উৎসবের আমেজ। ফেস্টুন ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো উপজেলা।
উপজেলায় ৬৩টি কেন্দ্রে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৮৭ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। চেয়ারম্যান পদে ৭, ভাইস চেয়ারম্যান ৮ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
শেষদিকে ভোটারদের মন জয় করতে বিভিন্ন এলাকায় জনসংযোগ করেছেন প্রার্থীরা। প্রচারণায় নতুন সমাজ থেকে সন্ত্রাস, মাদক নির্মূল, বাল্যবিয়ে, দারিদ্র্য দূরীকর এবং স্মার্ট উপজেলা বিনির্মাণসহ নানা সুবিধা নিশ্চিতের প্রতিশ্রম্নতি দেন প্রার্থীরা। আচরণবিধি লঙ্ঘণের কিছু অভিযোগ থাকলেও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সব প্রার্থী। ভোটাররা বলছেন সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকেই নির্বাচিত করতে চান তারা।
উপজেলা নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রতিটি ইউনিয়নের একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাবের কথা জানিয়েছেন ইউএনও আব্দুল করিম। তিনি বলেন, পুলিশ, বিজিবি, আনসারসহ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
বেলাব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত।
রাজস্থলী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি জানান, রাজস্থলীতে চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। গত ২ মে প্রতীক বরাদ্দের পর রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।
উপজেলার ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন, ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, প্রার্থীরা কেউ উঠান বৈঠক, আবার কেউ কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন এবং নানা প্রতিশ্রম্নতি দিচ্ছেন। এ সময় তারা রাজস্থলীকে একটি মডেল উপজেলা এবং অসাম্প্রদায়িক উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে সবার কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন।
এ সময় কথা হয় আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী উবাচ মারমার সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রচারণায় যেখানে যাচ্ছেন, সেখানে প্রচুর জনগণের সাড়া পাচ্ছেন। একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী তিনি।
দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি ভোটারদের কাছে ছুটে চলেছেন। সাড়াও পাচ্ছেন অনেক। তারও আশা বিজয়ী হবেন।
রাজস্থলী ও চন্দ্রঘোনা থানার ওসি বলেন, কোনোরকম সহিংসতা ছাড়া প্রার্থীরা প্রচারনা চালিয়েছেন। একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পুলিশ মাঠে কাজ করছেন।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও সজীব কান্তি রুদ্র বলেন, এ পর্যন্ত কোনো প্রার্থী কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি। একটি সুন্দর পরিবেশে প্রার্থীরা তাদের প্রচারনা চালিয়েছেন।