দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

প্রচারণায় মুখর জনপদ, আছে সংঘাতের শঙ্কা

প্রার্থী বাছাইয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ

প্রকাশ | ১৯ মে ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
_

আগামী ২১ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট নিয়ে ইতোমধ্যে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা। প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের দিন-রাত প্রচারণায় মুখর এলাকা। নানা প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে ভোট প্রার্থনায় নেমেছেন প্রার্থীরা। দুপুর দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্রচার মাইকে নানা প্রতিশ্রম্নতি ও উন্নয়নের আশ্বাস দিয়ে স্ব স্ব প্রতীকে ভোট চাওয়া হচ্ছে। কণ্ঠ শিল্পীদের দিয়ে বিভিন্ন সুরে অনেক প্রার্থী নির্বাচনী গান বানিয়ে তা বাজাচ্ছেন গ্রাম-গ্রামান্তরে। প্রচন্ড দাবদাহের মধ্যে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোট প্রার্থনা করছেন। তবে বেশ কিছু এলাকায় আধিপত্য বিস্তার জয়লাভের জন্য প্রার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান নিতে দেখা গেছে। আবার কিছু এলাকায় হয়েছে সংঘাত। সে সব এলাকায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন ভোটার ও প্রার্থীরা। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত- মহম্মদপুর (মাগুরা) থেকে আমাদের প্রতিনিধি এস আর এ হান্নান জানিয়েছে, প্রচার-প্রচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মাগুরার মহম্মদপুরের জনপদ। নির্বাচন ঘিরে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ১৭ প্রার্থী ও তাদের নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সাত, ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশ গ্রহণ করছেন ৭ জন। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান (আনারস), উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কবিরুজ্জামান কবির (শালিক), প্রকৌশলী আনিসুল ইসলাম হান্নান (হেলিকপ্টার), উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেবী নাজনীন (কাপ-পিরিচ), অধ্যক্ষ আবু আব্দুলস্নাহেল কাফী (দোয়াত কলম), দীঘা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা জাফর সাদিক (ঘোড়া) এবং যুবলীগ নেতা কাজী আনিসুর রহমান তৈমুর (মোটর সাইকেল)। নির্বাচনে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যার যার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টিসহ অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা ভোটে অংশ গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়েছেন বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান নির্বাচন করছেন আনারস প্রতীক নিয়ে। পেশায় তিনি আইনজীবী। দীর্ঘকাল ধরে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। গ্রাম পর্যায়ে তার রয়েছে কর্মী-সমর্থক। প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসেবে এবার তিনি বাজিমাৎ করতে চান। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কবিরুজ্জামান কবির নির্বাচন করছেন শালিক প্রতীক নিয়ে। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী এবং উপজেলায় নতুন মুখ। অধিকাংশ সময়ই তিনি থেকেছেন উপজেলার বাইরে। ফলে বেশিরভাগ মানুষের কাছেই তিনি অপরিচিত। তিনিও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। প্রকৌশলী আনিসুল ইসলাম হান্নান নির্বাচন করছেন হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে। তরুণ সমাজসেবক এই প্রার্থী তফসিলের বেশ আগে থেকেই ভোটের মাঠে নেমেছেন। রাজনৈতিক কোনো পদ-পরিচয় নেই তার। তিনিও মসনদ জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেবী নাজনীন নির্বাচন করছেন কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে। পাঁচ বছর তিনি ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একমাত্র নারী প্রার্থী হিসেবে তিনি অপর ছয় প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন বলে আশা করছেন। অধ্যক্ষ আবু আব্দুলস্নাহেল কাফী নির্বাচন করছেন দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে। বিগত উপজেলা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করে বিজয়ী হন। বিগত পাঁচ বছরে তার জনবিচ্ছিন্নতার কারণে এই নির্বাচনে তিনি কতটুকু সাড়া পাবেন সেই হিসেব-নিকেশ করছেন ভোটাররা। তবে তিনি জয়ের বিষয়ে আশাবাদী। দীঘা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা জাফর সাদিক (ঘোড়া) এবং যুবলীগ নেতা কাজী আনিসুর রহমান তৈমূর (মোটর সাইকেল) প্রচার-প্রচারণায় রয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ঈদুল শেখ (চশমা), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সুজন শিকদার (তালা), মাহবুবুর রহমান (মাইক), সাংবাদিক আশরাফুল আলম সাগর (টিউবওয়েল) এবং মুজিবর রহমান (টিয়া পাখি) জয়ের লক্ষ্যে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান স্বপ্না রাণী বিশ্বাস (কলস), শামীমা হাসান পলি (হাঁস), শিল্পী সামাদ (ফুটবল), মুনমুন খাঁন (সেলাই মেশিন) এবং রাহেলা বেগম (পদ্মফুল) জয়লাভ করার লক্ষ্যে দিন-রাত ভোটারপানে ছুটছেন। আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে আমাদের প্রতিনিধি হান্নান খাদেম জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় চেয়ারম্যন পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যন (পুরুষ) পদে ৪ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যন পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন ভূইয়া (আনারস), মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনির হোসেন (ঘোড়া), সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বোরহান উদ্দিন (দোয়াত কলম)। ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ (মাইক), পৌর যুবলীগের সদস্য জুয়েল রানা (টিউবওয়েল), মনিয়ন্দ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাজিদুল ইসলাম (চশমা) ও আওয়ামী লীগ কর্মী গোলাম মোস্তফা (তালা)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান পিয়ারা আক্তার (হাঁস), আওয়ামী লীগ সমর্থক তানজিনা আক্তার (ফুটবল), যুবলীগ কর্মী রোকসানা আক্তার (কলস) ও সাবেক ইউপি সদস্য বীনা আক্তার (পদ্মফুল)। তবে চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ বোরহান উদ্দিন প্রতীক বরাদ্দের পর ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। প্রার্থীরা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এদিকে, যতই ভোটের দিন এগিয়ে আসছে ততই জমে উঠছে ভোটের লড়াই। প্রার্থীরা সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিরামহীন গণসংযোগ ও প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। চেষ্টা করছেন ভোটারদের মন জয় করতে। নিজ নিজ প্রতীকে ভোট চাচ্ছেন। নাওয়া খাওয়ার যেন ফুরসত নেই। প্রার্থীদের পাশাপাশি তাদের কর্মী সমর্থকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিজ প্রার্থীর সমর্থনে ভোটাদের কাছে ভোট চাইছেন। করছেন উঠান বৈঠক, সভা-সমাবেশ। শহর থেকে গ্রামীন জনপদে প্রার্থীদের রঙিন ও সাদাকালো পোষ্টার শোভা পাচ্ছে। হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) থেকে আমাদের প্রতিনিধি বোরহান উদ্দিন জানান, হাটহাজারীতে প্রচারণার নির্বাচনী আচরণবিধিতে নির্ধারিত সময় বেঁধে দিলেও অনেকেই তা মানছেন না। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই অনিয়ম বাড়ছে। এদিকে তেমন অভিযান নেই প্রশাসনের। ফলে নিয়ম লঙ্ঘনের সারি দীর্ঘতর হচ্ছে। এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ত্রিমুখী লড়াই হবে। দলীয় প্রতীক না থাকা স্বত্ত্বেও সরকার দলীয় প্রার্থী ছাড়া বিএনপি, ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্টসহ কোনো দলই অংশগ্রহণ করছে না। ফলে নিজেদের ভেতরই চলবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নেওয়া তিনজনই হেভিওয়েট প্রার্থী। তিন প্রার্থীরই রয়েছে আলাদা কর্মী সমর্থক। কে হতে পারেন বিজয়ী আলাদা করে বলতে পারছেন না কেউ। যদিও প্রত্যেক প্রার্থীই বিজয়ী হবেন বলে জানান দিচ্ছেন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন মোটর সাইকেল নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম রাশেদুল আলম। তিনি উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি। ঘোড়া নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান ও আনারস প্রতীক নিয়ে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইউনুস গনি চৌধুরী। এদিকে এসএম রাশেদুল আলমকে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম সমর্থন দেয়ায় তার সমর্থিত নেতাকর্মী এবং জেলা ও উপজেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা তার জন্য কাজ করছেন। অন্যদিকে দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে উপজেলায় রাজনীতি করা সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমানের রয়েছে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী। উপজেলা থেকে শুরু করে প্রতিটা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে রয়েছে তার বিশাল দলীয় কমিটি। প্রতিটা প্রচারণায় গণজোয়ার সৃষ্টি হয় তার। আরেকদিকে বিরোধী দলীয় উপনেতা স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে পরিচিত ইউনুস গনি চৌধুরীর রয়েছে আলাদা কর্মী সমর্থক। উপজেলা আওয়ামী লীগ, উপজেলা ও পৌরসভা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ একটি অংশ রয়েছে তার প্রচারণায়। একইসঙ্গে সাংসদের সিংহভাগ সমর্থকরা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন উত্তর জেলার এ নেতাকে। শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রচার প্রচারণায় কোন দাঙ্গা হাঙ্গামার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভোটারদের সমর্থন নিতে প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে দুর্ণীতি সন্ত্রাস চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলছেন। এদিকে সাধারণ ভোটাররা আশঙ্ক্ষা করছেন যেহেতু সবাই সরকার দলীয় এক পরিবারের প্রতিদ্বন্দ্বী, সেহেতু প্রত্যেকে চেষ্টা করবেন ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারে। এর ফলে ছোট বড় যে কোন সংঘাত ঘটবে নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে। আর এ শঙ্কায় ভোটারদের উপস্থিতি হতে পারে একেবারে নগন্য। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বৈদ্যতিক বাল্ব নিয়ে উত্তর জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ খালেদ চৌধুরী, সাবেক শিক্ষক নেতা তালা প্রতীকে অশোক কুমার নাথ, চশমা প্রতীকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ও টিউবওয়েল প্রতীকে ব্যারিস্টার আশরাফ উদ্দীন। তবে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আলোচনায় এম এ খালেদ চৌধুরী ও অশোক কুমার নাথ। এ ছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান কলস প্রতীক নিয়ে মোক্তার বেগম মুক্তা, ফুটবল প্রতীকে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাজেদা বেগম, হাঁস ও প্রজাপতি প্রতীকে সাবেক দুই ইউপি সদস্য শারমিন ইকবাল ও বিবি ফাতেমা শিল্পী।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) থেকে আমাদের প্রতিনিধি বাবরুল হাসান বাবলু জানান, ইউনিয়নের ভোটকে গুরুত্ব দিয়ে ভোটের হিসেব কষছেন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। জেলার হাওড় উপজেলা তাহিরপুরে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬ চেয়ারম্যান প্রার্থী। প্রার্থীদের অনেকেই ভোটের মাঠে ইউনিয়নের ভোটকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ভোটের হিসেব মিলাতে চেষ্টা করছেন। প্রার্থীরা মনে করছেন নিজ ইউনিয়ন থেকে যদি তারা বেশি ভোট নিয়ে বের হতে পারেন তাহলে বিজয় অনেকটা সুনিশ্চিত। 
শ্রীপুর উত্তরে প্রার্থী রয়েছেন দুইজন। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন খান (কাপ পিরিচ) ও ইংল্যান্ড প্রবাসী মিঠু রঞ্জন পাল (হেলিকাপ্টার)। তাহিরপুর সদরে রয়েছেন দুইজন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি আলী মর্তুজা (ঘোড়া) ও সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন (দোয়াত কলম)। বাদাঘাট ইউনিয়নে প্রার্থী রয়েছেন একজন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন (আনারস)। বড়দল উত্তর ইউনিয়নেও প্রার্থী একজন, ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম (মোটর সাইকেল)। তাছাড়া শ্রীপুর দক্ষিণ, বালিজুরী এবং বড়দল দক্ষিণে কোনো প্রার্থী নেই। 
আগামী ১৯ মে মধ্য রাত থেকে প্রচার প্রচারণা বন্ধ। তাই শেষ সময়ে রাত দিন একাকার করে প্রার্থী ও তার সমর্থকরা এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়ন তথা উপজেলার সর্বত্র প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ভোটার দের। 
তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় ৭টি ইউনিয়ন রয়েছে। তার মধ্যে শ্রীপুর উত্তর, বাদাঘাট ও বড়দল উত্তর ইউনিয়নে ভোট বেশি। তাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ তিন ইউনিয়নের ভোটের হিসেবকে গুরুত্ব দিয়ে মাঠে কাজ করছেন প্রার্থীরা।
তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘আমি সাধারণ মানুষজনদের নিয়ে রাজনীতি করি। সাধারণ মানুষজনও আমার পাশে আছে। ভোটের মাধ্যমে আশা করি এ ভালোবাসা প্রকাশ পাবে।’
বড়দল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ভোটকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ভোটের হিসেব নিকেশ করছি। সেই সঙ্গে অন্যান্য ইউনিয়নের সাধারণ ভোটাররাও আমার সঙ্গে রয়েছে। 
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খান বলেন, ‘নিজ ইউনিয়নের পাশাপাশি আরও ৬ ইউনিয়নের সাধারণ ভোটাররা আমাকে ভালোবাসে। সে হিসেবে নির্বাচনে ভোটাররা আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে সে আশা করছি।’ 
শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে এমএ জাফর লিটন জানান, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ১৫ জন প্রার্থী। প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রতিটি প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ লাভলু (কাপ-পিরিচ), উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম (টেলিফোন) ও শাহজাদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র হালিমুল হক মিরু (আনারস) প্রতীকের মধ্যে ত্রি-মুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। 
আর ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মারুফ হোসেন সুনাম (চশমা), শাহজাদপুর পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোবহান শেখ সজল মিন্টের (টিউবওয়েল) মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এছাড়াও  ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌসুমী খান বাবলা (হাঁস) ও লাবণী খাতুনের (কলস) মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পাওয়া গেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিএনপি-জামায়াত বর্জন করায় আর ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হওয়ায় ভোটকেন্দ্রে ভোটার নিয়ে আসাই প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের জন্য। 
শাহজাদপুরে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল হামিদ লাভলু (কাপ পিরিচ), সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম (টেলিফোন), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুস্তাক আহমেদ (কৈ মাছ), সাবেক পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরু (আনারস), উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইউনুস আলী (ঘোড়া), সমাজসেবক গোলাম সাকলাইন সেলিম (হেলিকপ্টার), অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির (মোটর সাইকেল) ও ইসমাঈল হোসেন সুমন (দোয়াত কলম)। 
ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মারুফ হোসেন সুনাম (চশমা), পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোবহান শেখ সজল মিন্ট (টিউবওয়েল), পল্লী বিদ্যুতের ডিরেক্টর ফারুক সরকার (মাইক), ও সাইফুল ইসলাম প্রিন্স (তালা)। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৌসুমী খান বাবলা (হাঁস), লাবনী খাতুন (কলস) ও রুমী খাতুন প্রিয়া (ফুটবল)। 
শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি সঞ্জয় সূত্রধর জানান, মানিকগঞ্জের শিবালয়ে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন হেভিওয়েট প্রার্থী। এর মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রেজাউর রহমান খান জানু (আনারস)। অপরজন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম খান (দোয়াত কলম)। আরেকজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন খান পান্নু (মোটর সাইকেল)। প্রার্থী ও সমর্থকরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৬৫কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। কয়েকটি নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনার কারনে ভোটার উপস্থিতি কম হবে বলে স্থানীয় সচেতন ভোটাররা আশংকা করছেন। 
এ ব্যাপারে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রেজাউর রহমান খান জানু বলেন, ‘সাধারণ জনগনের পাশে থাকায় জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে বলে শতভাগ আশা করছি।’ জেলা আওয়মী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম খান বলেন, ‘আমি মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি, জনগন আমাকে নির্বাচিত করবেন।’ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোবারক হোসেন পান্নু খান বলেন, ‘নতুন মুখ হিসেবে আমি ভোটারদের সাড়া পাচ্ছি, আশা করি জনগন আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।’
শিবালয় থানার ওসি আব্দুর রউফ সরকার বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে বিপুল সংখ্যক পুলিশ প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন নিয়োজিত থাকবেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার বেলাল হোসেন বলেন, ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারবেন। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা নেই।