আজকের যায়যায়দিন

বাংলাদেশে সুনীল অর্থনীতির বিকাশ ও সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, 'সুনীল অর্থনীতির বিকাশের পথে অন্যতম বাধা সামুদ্রিক দূষণ। বিস্তীর্ণ সমুদ্রে চলাচলকারী দেশি-বিদেশি জাহাজের দূষণ বন্ধ করতে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করা অপরিহার্য। স্যাটেলাইট, রাডারসহ প্রযুক্তিভিত্তিক নজরদারির মাধ্যমে দূষণ বন্ধ করতে না পারলে দেশের সুনীল অর্থনীতির বিকাশের স্বপ্ন বাধাগ্রস্ত হবে। শুধু বঙ্গোপসাগরের তলদেশে নয়, সমুদ্রতটের বালুরাশিতে প্রচুর পরিমাণে তেজস্ক্রিয় পদার্থ রয়েছে। যেমন 'মনোজাইট' নামক মূল্যবান খনিজ রয়েছে, যা পারমাণবিক চুলিস্নতে ব্যবহারের উপযোগী। সামুদ্রিক জলসীমায় চলাচলকারী নৌযানগুলো যেন তেল দূষণ না ঘটায়, এর জন্য মোবাইল কোর্ট, বন্দর কর্তৃপক্ষ, কোস্ট গার্ড ও নৌবাহিনীকে কঠোর অভিযান চালাতে হবে এবং এর সমান্তরালে দূষণের বিপর্যয় ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে।

তিনি বলেন, 'পরিবেশ দূষণ শুধু জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করছে না, মানুষের মধ্যে প্রাণঘাতী ক্যানসারও ছড়িয়ে পড়ছে। দুনিয়াজুড়ে পস্নাস্টিক-পলিথিন উৎপাদনে জড়িত কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের দূষণ সামুদ্রিক সম্পদকে ধ্বংস করছে। বহু দেশে কর্পোরেট শক্তির পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যকলাপে সুনীল অর্থনীতি বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সামুদ্রিক মাছে ভারী ধাতব পদার্থও পাওয়া যাচ্ছে, ফলে সামুদ্রিক মাছ খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। সব শহর-নগরের বর্জ্য পদার্থের চূড়ান্ত গন্তব্য নদ-নদী হয়ে সাগর-মহাসাগর। কাজেই বর্জ্যের বিজ্ঞানসম্মত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে রিসাইক্লিং নীতিকে কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।'

সেমিনারে অংশ নেন বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বিভিন্ন কৃষি ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বিএসটিআই, পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ বেতারের কর্মকর্তা এবং নৌবাহিনী কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের পরিচালক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম, জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির পরিচালক ড. মোঃ নুরুজ্জামান এবং 'বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ মেরিটাইম রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট' এর লে. কমান্ডার মো. সাইফুল ইসলাম। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি