রোববার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১
টাকা দিলে মিলছে চলার পারমিট

পটুয়াখালী-ঢাকা মহাসড়কে শ্রমিক কল্যাণের নামে চাঁদাবাজি

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
  ১৭ মে ২০২৪, ০০:০০
পটুয়াখালী-ঢাকা মহাসড়কে শ্রমিক কল্যাণের নামে চাঁদাবাজি

পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কে নির্দিষ্ট একটি রুট ব্যবহার করে বছরের পর বছর একটি শ্রমিক সংগঠনের নাম দিয়ে অটোরিকশা থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে। শ্রমিকদের কল্যাণে সংগঠনটি প্রতি মাসে তিন লক্ষাধিক টাকা চাঁদা তুললেও বাস্তবে শ্রমিকদের কল্যাণে এই অর্থ ব্যয় করার কোন নজির নেই। আর চাঁদা দিয়ে মহাসড়কে এসব অবৈধ যানবাহন চলাচল করায় প্রতি নিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরগুলোতে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পায়নি অটোরিকশা মালিক ও শ্রমিকরা।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। তবে এই সড়কের 'পটুয়াখালী লাউকাঠী সেতু থেকে লেবুখালী পর্যন্ত' সড়কে নিয়মিত তিন চাকার ব্যটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে। আর এতে করে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এই রুটে চলাচলের অনুমতি পেতে প্রতিটি অটোরিকশাকে প্রতি মাসে গুণতে হয় এক হাজার টাকা।

বাংলাদেশ অটোরিকশা শ্রমিকলীগ নামে একটি সংগঠনের নাম দিয়ে এই টাকা তুলে প্রতি মাসে অটোরিকশাগুলোকে একটি নির্দিষ্ট স্টিকার লাগিয়ে দিচ্ছে। নির্দিষ্ট স্টিকার ছাড়া কোনো অটোরিকশা এই রুটে চলাচল করতে পারে না। পুরো বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হলেও, এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেও কোনো প্রতিকার মেলে না। তাইতো এ বিষয় এখন আর কথা বলতেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না ভুক্তভোগীরা।

তবে সম্প্রতি এ নিয়ে গত ২৭ মার্চ পটুয়াখালী জেলা শ্রমিকরীগের তৎকালীন সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন, জেলা রিকশা চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং জাতীয় রিকশা-ভ্যান শ্রমিক লীগের সভাপতি ফারুক ফকির এক সঙ্গে পুলিশ সুপার বরাবর একটি অভিযোগ প্রদান করেন। তবে মার্চ মাসে অভিযোগ দিলেও এপিল এবং মে মাসেও স্ট্রিকার দিয়ে চাঁদা তোলা অব্যাহত রয়েছে।

তবে অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে পটুয়াখালী অটোরিকশা শ্রমিকলীগ সভাপতি গনি হাওলাদার বলেন, ডিসি এসপি স্যারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই আমরা এই সড়কে অটো রিকশা চালাচ্ছি। সংগঠন পরিচালনার করতে ব্যয় হয়। বিভিন্ন সময় আমাদের সদস্যরা দুর্ঘটনায় আহত হয় তাদের চিকিৎসাসহ পরিবারকে সহযোগিতা করতে হয় এসব কারণে সদস্যদের কাছ থেকে আমরা কিছু চাঁদা নেই।'

পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহাসড়কে অটোরিকশা চালচল বন্ধ করতে আমরা বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করছি। কেউ যদি কোনো অটোরিকশা চালকের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা সংগ্রহ করে তবে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।' তবে পুলিশ সুপার কোনো শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে এ বিষয় কোন অভিযোগ পাননি বলে জানান তিনি।

গত ১০ বছরেই এই সিন্ডিকেট অটোরিকশা মালিক ও চালকদের কাছ থেকেই অন্তত তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর ফলে হাইকোর্ট এবং সরকারের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও ব্যস্ততম গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়কটি শতাধিক অবৈধ অটোরিকশা দাপিয়ে রেড়াচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে