বোদায় সুপারির খোল দিয়ে তৈরি হচ্ছে আকর্ষণীয় তৈজসপত্র

প্রকাশ | ১৬ মে ২০২৪, ০০:০০

বোদা (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ে বোদায় সুপারি গাছের ঝরে পড়া পাতার খোল দিয়ে ওয়ানটাইম পেস্নট, বাটি, চামচসহ তৈজসপত্র তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন উদ্যোক্তা নুরল আলম সেলিম। স্বাস্থ্যকর হওয়ায় বাজারে অন্যান্য পেস্নটের তুলনায় এগুলোর চাহিদাও বেশি। সুপারি গাছের খোল গ্রামে খুবই সহজলভ্য। সাধারণত জ্বালানি হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। তবে এই খোল দিয়েই পস্নাস্টিকের বিকল্প হিসেবে উপজেলার শিমুলতলীতে নান্দনিক তৈজসপত্র তৈরি করা হচ্ছে। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রথমে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ২ টাকা পিস করে সুপারি গাছের খোল সংগ্রহ করা হয়। খোলগুলোকে নিমপাতা ও লেবুর রস যুক্ত পানি দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে রোদে শুকিয়ে নেওয়া হয়। এরপর পাতার খোল ছাঁচের মেশিনে বসিয়ে তাপ এবং চাপ প্রয়োগ করে নানা আকৃতি দেওয়া হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই গোলাকার বাটি, গোলাকার পেস্নট, চৌকোণা পেস্নট, লাভ পেস্নট, চামুস, ট্রেসহ ৮ ধরনের জিনিস প্রস্তুত করা হচ্ছে। বর্তমানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, রেস্টুরেন্ট, দোকানে পস্নাস্টিকের পরিবর্তে সুপারি গাছের খোল দিয়ে তৈরি জিনিসের ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান এর প্রস্ততকারকরা। গত বছরের অক্টোবর মাসে শুরু হওয়া এ কারখানায় দৈনিক ১০০০-১২০০ পিস পেস্নট, বাটিসহ ৮ ধরনের তৈজসপত্র উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি পিস পেস্নট, বাটি ৭-১৫ টাকায় বিক্রি করা হয়। স্থানীয় সুপারি বাগানের মালিক হাসিবুল জানান, তার প্রায় এক একর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছে। আগে সুপারির বাগানের পাতা পড়ে গিয়ে নিচেই নষ্ট হতো। কিন্তু এখন কারখানা হওয়ায় ঝরে পড়া সুপারির খোলের মূল্য হয়েছে। কারখানার শ্রমিক কাবলু জানান, কারখানাটি হওয়ায় তার মতো অনেকের চাকরি হয়েছে। এমন কারখানা জেলায় আরও হলে অনেক বেকারের কাজের সুযোগ হবে। ইকো বিডি গ্রীণের পরিচালক ফরিদুল আলম হিরু বলেন, 'আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পস্ন্যাস্টিকের পেস্নট ব্যবহার করে থাকি, যেগুলো ঠিকমতো ধরাও যায় না। দেখা যায়, খাবার পড়ে যায়। কিন্তু তার তুলনায় আমাদের বানানো পেস্নটগুলো শক্ত, সুন্দর ও সহজে পরিবহনযোগ্য। সবচেয়ে ভালো দিক হলো এটি ব্যবহারের পর ফেলে দিলে এটি পঁচে জৈবসার হয়। পস্নাস্টিকের থেকে দাম একটু বেশি হলেও পরিবেশ সুরক্ষায় এর বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে উপজেলার নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির জানান, এটা নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। সুপারির খোল দিয়ে তৈরি তৈজসপত্রের দেশ ছাড়া বিদেশেও চাহিদা রয়েছে। এসব পণ্য বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।