উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিলের প্রার্থিতা বাতিল

প্রকাশ | ১৬ মে ২০২৪, ০০:০০

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট জামিল হাসান দুর্জয়ের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এতথ্য জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি বলেন, বারবার আচরণবিধি ভঙ্গ করায় গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী জামিল হাসানের প্রার্থিতা বাতিল করেছে কমিশন। প্রার্থীর শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত দেয়। এর আগে জামিল হাসানকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, 'ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আপনি ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী। আপনি গত ২১ এপ্রিল শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ও চত্বরের বাইরে আনুমানিক বেলা ১১টা ১০ মিনিটে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে শোডাউনসহ মিছিল করেন। এতে আইনশৃঙ্খলা ভঙের সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় আপনাকে ২১ এপ্রিল কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে আপনি নির্বাচনে আচরণবিধি মেনে চলার অঙ্গীকারপূর্বক ক্ষমা প্রার্থনা করেন। পরে আপনি ২৭ এপ্রিল বিকাল ৫টায় গাজীপুর সদর উপজেলাধীন বাঘের বাজার এলাকায় সারাহ গার্ডেনে প্রতীক বরাদ্দের আগে আনুমানিক ৪০০ জন কর্মী-সমর্থক নিয়ে জনসভা করার চেষ্টা করেন। ওই বিষয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ইসতিয়াক মজনুন ইশতি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে আপনার উপস্থিতিতে আপনার সমর্থক আক্তার হোসেনকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আপনি ৭ মে আনুমানিক বেলা ১২টার সময় আনুমানিক এক হাজার কর্মী-সমর্থক নিয়ে শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নগর হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গেটের সামনে উত্তর দিকে মসজিদ মার্কেট এলাকায় বিশাল প্যান্ডেল করে বিনা অনুমতিতে জনসভাসহ দুপুরের খাবারের আয়োজন করেন, যা উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৭(খ), ৭(গ) এবং ১৭(খ) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাইখা সুলতানা পুনরায় একই স্থানে বিনা অনুমতিতে সভা আয়োজন এবং জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করার অভিযোগ পান। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আয়োজনস্থলে আপনাকে বক্তব্যরত অবস্থায় এবং আপনার প্রায় এক হাজার কর্মী-সমর্থকসহ দেখতে পান। পরে উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর ৭ (খ), ৭ (গ) এবং দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৩ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে আয়োজকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হলে আপনি এবং আপনার সমর্থকসহ সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়াসহ হুমকি দেন। তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে আপনিসহ আপনার কর্মী সমর্থকরা হুমকি দেওয়াসহ অশোভন আচরণ করে মিছিল করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে দেখেন, যা উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি ৭, বিধি ১১, বিধি ১৮ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশসহ এ বিধিমালায় বর্ণিত দন্ড দেওয়ার পরও নির্বাচনী আচরণ মেনে চলছেন না, যা একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন পরিচালনার জন্য অন্তরায়। আরও বলা হয়, ওপরের বিষয়ে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আপনার প্রার্থিতা কেন বাতিল করা হবে না এবং আইনানুগ অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে না, এ বিষয়ে আগামী ১৫ মে বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশনে আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে জামিল হাসান দুর্জয়ের নির্বাচনে কাজ করা ব্যারিস্টার আশরাফুল আলম সজিব বলেন, 'প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে মর্মে ইসির কাছ থেকে স্বাক্ষরিতপত্র এখনো আমরা পাইনি। সেটা পেলে আইন মেনে আদালতে আপিল করা হবে।