শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১

তীব্র দাবদাহে ওষুধ শিল্পে নতুন সংকট

অধিকাংশ ফার্মেসিতে সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ হচ্ছে না ওষুধ
আব্দুস সালাম আরিফ, পটুয়াখালী
  ১৬ মে ২০২৪, ০০:০০
তীব্র দাবদাহে ওষুধ শিল্পে নতুন সংকট

তীব্র দাবদাহে জীবনরক্ষাকারী উপাদান ওষুধ সংরক্ষণ ও বিপণন নিয়ে সংকট তৈরি হচ্ছে। অধিকাংশ ওষুধ ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করার কথা থাকলেও সাম্প্রতিক সময় ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে হাতেগোনা দুই একটি ফার্মেসি ছাড়া পটুয়াখালী জেলার অধিকাংশ ওষুধের দোকানেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে দীর্ঘদিন অধিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করায় ওষুধের গুণগতমান নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে সাধারণ মানুষ।

বর্তমানে শিশুদের জন্য সব থেকে বেশি ব্যবহৃত একটি অ্যান্টিবায়োটিক হচ্ছে সেফ-৩। স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালের সেফিক্সিম গ্রম্নপের এই ওষুধের নির্দেশিকায় লেখা আছে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সংরক্ষণ করুন। একইভাবে ঠান্ডা কাশি কিংবা এলার্জির জন্য বহুল প্রচলিত ওষুধ ফেক্সো। এই ওষুধের সিরাপের গায়ে লেখা আছে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সংরক্ষণ করুন। এভাবে নবজাতদের জন্য বহুল ব্যবহৃত ওষুধ ফাইটোমেনাজিওন গ্রম্নপের কে-ওয়ান। যার গায়েও লেখা রয়েছে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সংরক্ষণের কথা। এমনিভাবে সব ওষুধের নির্দেশিকায় লেখা রয়েছে কোন ওষুধ কোন তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে। তবে পটুয়াখালীতে অধিকাংশ দোকানেই সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।

এদিকে গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে পটুয়াখালী জেলা এবং এর আশপাশের এলাকায় ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়ায় তাপমাত্রা বিরাজ করছে। অধিকাংশ ওষুধ যেখানে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সংরক্ষণ করার কথা সেখানে এই দীর্ঘ সময় অধিক তাপমাত্রায় সংরক্ষলের ফলে ওষুধের গুণগত মানে কি ধরনের প্রভাব পড়ল সে বিষয়েও ভাবিয়ে তুলছে জেলার সচেতন মহলকে।

পটুয়াখালী শহরের কলেজ রোড এলাকার বাসিন্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, 'আমি পরিবারের জন্য চেষ্টা করি সুপরিচিত দোকান থেকেই ওষুধ কেনার। আগে চিন্তা করতাম ওষুধের কোনো ভেজাল আছে কিনা। তবে এখন নতুন করে ভাবতে হচ্ছে আমি যে ওষুধ কিনে আনছি সেটি কীভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষে প্রচারণার পাশাপাশি ওষুধ ব্যবসায়ীদেরও সচেতন করতে হবে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা নিয়ে কাজ করতে হবে।'

পটুয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম কবির হাসান বলেন, 'সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণ ও বিপণনের ব্যবস্থা না করলে ওষুধের গুণগতমান নষ্ট হয়ে থাকে। এ বিষয় এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে তা মানুষের জন্য নতুন একটি সংকট সৃষ্টি করতে পারে।'

তবে পটুয়াখালী ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক সিকদার কামরুল ইসলাম বলেন, 'ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে এ নিয়ে কাজ করছে, ইতোমধ্যে ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ একটি নির্দেশনা জারি করেছে। এ ছাড়া ওষুধের দোকানগুলোতে যেন তাপমাত্রা মাপার মেশিন থাকে সে জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া যাদের সম্ভব হয় তারা যেন এখনই এসি সংযোজন করেন এবং যাদের সামর্থ্য নেই তারা ফার্মেসিতে অধিক ফ্যানের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন সুযোগ সৃষ্টি করে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলা হয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে