শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১

ডিমলায় প্রচন্ড দাবদাহে চরম বিপাকে খেটেখাওয়া শ্রমিক

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
  ১৫ মে ২০২৪, ০০:০০
ডিমলায় প্রচন্ড দাবদাহে চরম বিপাকে খেটেখাওয়া শ্রমিক

নীলফামারীর ডিমলায় অনাবৃষ্টির কারণে প্রচন্ড দাবদাহের সঙ্গে নেসকো'র সীমাহীন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে খেটেখাওয়া শ্রমিক শ্রেণির মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। চলমান দাবদাহের কারণে অনেকে হিটস্ট্রোক করে মৃতু্যবরণ করেছেন।

ডিমলায় গত কয়েক সপ্তাহ থেকে চলছে প্রচন্ড দাবদাহ। বিভিন্ন ফসলিজমি পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। অনেকেই শ্যালোমেশিন ও গভীর নলকূপ দিয়ে ফসল বাঁচাতে জমিতে পানি জমিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। তবে এতে ডিজেলের দাম বেশি হওয়ায় কুলিয়ে উঠতে পারছেন না বেশিরভাগ মানুষ। প্রখর রোদে নিত্যান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না।

ডিমলা আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক বাবুল হোসেনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার এ উপজেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.২ ডিগ্রি। ডিমলা সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দাবদাহের কারণে এবং অতিরিক্ত গরমে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন বয়সি শত শত মানুষ হাসপাতালে ভিড় করছেন। দিন দিন হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।

ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাশেদুজ্জামান বলেন, চলমান প্রচন্ড দাবদাহের কারণে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। রোগীর সখ্যাও বাড়ছে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা রোগীদের যথাসাধ্য চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি। ডিমলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সব সময় সজাগ রয়েছে।

এদিকে বৃষ্টির আশায় মাঠে-ময়দানে, মসজিদে ইস্তিস্কার নামাজ আদায় করছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। শহরের পাকা সড়কগুলো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কোথাও কোথাও সড়কের পিচ গলে গেছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নলকূপে পানি কম উঠছে। কোনো কোনো নলকূপে পানি বেরই হচ্ছে না। গরমে মানুষ একটু স্বস্তি পেতে বিভিন্ন প্রকার শরবত, আখের রস, ঠান্ডা পানির দিকে ঝুঁকছেন।

এদিকে সারাদিন রাত নেসকো'র বিদু্যতের লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। কিন্তু এর কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বিষিয়ে তুলেছে জনজীবন। অটোচালক আলম জানান, প্রচন্ড রোদে মানুষ বের হচ্ছেন না। ফলে ভাড়া কমে গেছে। তাছাড়া রোদে অটো পামচার হচ্ছে বেশি। রিকশাচালক মশিয়ার রহমান জানান, গত এক সপ্তাহে তার রিকশার চাকা পামচার হয়েছে তিনবার। অতিরিক্ত গরমে টায়ার টিকছে না। ব্যসায়ীরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসে থাকলেও ক্রেতাশূন্য বাজার।

নীলফামারী জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি শাহনওয়াজ হোসেন শানু বলেন, দাবদাহ অব্যাহত থাকায় যাত্রী কমে গেছে। ফলে আয় কমেছে। জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আলি জানান, তীব্র দাবদাহের কারণে বাসে দেখা দিয়েছে যাত্রী সংকট। ফলে নির্ধারিত চলাচলের টিপ অমিট করতে হচ্ছে। যার কারণে শ্রমিকরা অর্থনৈতিক সংকটে কষ্টে দিন পার করছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে