শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১

অনাবৃষ্টি আর জাগের পানি সংকটে গাংনীতে কমেছে পাটের আবাদ

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি
  ১৫ মে ২০২৪, ০০:০০
অনাবৃষ্টি আর জাগের পানি সংকটে গাংনীতে কমেছে পাটের আবাদ

ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, অনাবৃষ্টি আর পাট পচানোর পানি সংকটের কারণে পাটের আবাদ কমেছে মেহেরপুরের গাংনীতে। চলতি বছরে পাটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চাষিদের দাবি, প্রতি বছর পাট চাষে এক রকম লোকসান গুণতে হয়। বাধ্য হয়ে অন্য ফসল আবাদ করছেন তারা। তবে কৃষি অফিস বলছে, পাট চাষে চাষিদেরকে উদ্বুদ্ধ করতে দেওয়া হচ্ছে প্রণোদনা ও বিকল্প পদ্ধতিতে পাট পচানোর পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যনুযায়ী, কৃষি নির্ভরশীল এ উপজেলায় চাষিদের অর্থনৈতিক ফসল হিসেবে বিবেচিত সোনালী আঁশ পাট। চলতি বছরে গাংনীতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১২ হাজার হেক্টর। আর পাট চাষ করা হয়েছে ৮ হাজার হেক্টর, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ২০০ হেক্টর কম। চাষিরা জেআরও ৫২৪, বি জে আর আই তোষাপাট-৮, ভারতীয় কৃষি কল্যাণ, মহারাষ্ট্র ও চাকা জাতের পাট আবাদ করে থাকেন।

চাষিরা জানান, গেল বছর অনাবৃষ্টি থাকলেও তেমন তাপদাহ ছিল না। তাই সেচ দিয়ে পাট চাষ করেছেন চাষিরা। কিন্তু পাট জাগ দেওয়ার মতো পানির ব্যবস্থা ছিল না। অনেকেই কাদামাটি দিয়ে পাট জাগ দেওয়ায় পাটের মান নষ্ট হওয়ায় ন্যায্য মূল্য বঞ্চিত হন। চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টির সঙ্গে যোগ হয় তীব্র তাপদাহ। ফলে অনেকেই পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। উপরন্তু পাট পচানোর জন্য কোনো উন্মুক্ত জলাশয় না থাকায় চাষিরা পাট চাষ করতে অনীহা প্রকাশ করছেন। অনেকেই খাল বিল সংস্কার ও দখল হয়ে যাওয়া জলাশয় উন্মুক্ত ঘোষণা করার আহ্বান জানান।

গাংনীর পলাশীপাড়ার পাটচাষি জুলফিকার আলী জানান, প্রতিবছর চাষিরা এ পাট আবাদ করে মোটা অংকের টাকা আয় করেন। কিন্তু পানি সংকটের কারণে চাষিদের পাট পচাতে সইতে হয় নানা বিড়ম্বনা। অনেকেই খালে বিলে পানি না পেয়ে বাড়ির পাশে গর্তে সামান্য পানি দিয়ে পাট পচাতে দেন। এতে এক দিকে যেমন চাষিদের খরচ বেড়ে যায় তেমনি পাটের রং নষ্ট হয়। ফলে পাটের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন।

পাটচাষি করমদি গ্রামের জীবন হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টিতে পাট বপন করার সময় সেচ দিতে হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রচন্ড তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে পাট ক্ষেত নষ্ট হয়। বপনের দেড় মাস পার হলেও পাট উচ্চতায় বৃদ্ধি পায়নি। আর যারা সেচ দিয়ে আবাদ করছেন তারা পাট পচানো নিয়ে বেশ চিন্তিত। চাষিদের দাবি, হাজা মজা খাল বিল সংস্কার করে পানি প্রবাহ ঠিক রাখলে পাট পচানো সম্ভব। চাষিরা উন্মুক্ত জলাশয়ে পাট জাগ দিতে পারলে পাট চাষ বৃদ্ধি পাবে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে পাটের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। অনাবৃষ্টির কারণে অনেকেই পাট বীজ বপন করতে পারেনি। আর যারা আবাদ করেছেন পানির অভাবে পাটগাছ বাড়েনি। অন্যদিকে পাট পচানো নিয়েও চাষিরা নানা বিড়ম্বনায় পড়েন। তবুও চাষিদের প্রণোদনাসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। বিকল্প পদ্ধতিতে দেওয়া হচ্ছে পাট পচানোর পরামর্শ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে