গৌরীপুরে জয়িতা পুরস্কারপ্রাপ্ত সফল মা রেজিয়া খাতুন

প্রকাশ | ১৩ মে ২০২৪, ০০:০০

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
রেজিয়া খাতুন। ৭০-এর কোটা ছুঁইছুঁই করছে। উচ্চ বিদ্যালয়ের গন্ডি অতিক্রম করতে পারেননি তিনি। এর আগেই ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার অচিন্তপুর ইউনিয়নের আব্দুল হাকিম ফকিরের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায় তার। তিনি ৬ সন্তানের মা। সংসার জীবনের যাত্রা যখন শুরু ঠিক সেই সময়ে স্বামীহারা হন রেজিয়া খাতুন। নিজে লেখাপড়া করতে না পারলেও কঠিন জীবন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে চার মেয়ে আর দুই ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেন। একজন বিসিএস অফিসারসহ ৬ জনই সরকারি কর্মকর্তা। স্বামীর কৃষি আর অকৃষি জমির পরিমাণ মাত্র ৪৮ শতক। দরিদ্র শ্রেণির কৃষক ছিলেন আব্দুল হাকিম ফকির। আর্থিক অবস্থাও ছিল সংকটাপন্ন। ঠিক সেই সময়ে স্ত্রী রেজিয়া ও ৬ সন্তানকে রেখে চিরবিদায় নেন তিনি। সঙ্গীহারা হলেও পথহারা হননি মা রেজিয়া। কঠোর পরিশ্রম, বুদ্ধিমত্তা আর সাহসিকতার সঙ্গে হাল ধরেন সংসারের। সংসারের অন্ধকার দূর করতে কুপিবাতির আলোয় তৈরি করেন এক বিস্ময়কর আলোর জগৎ। সেই আলো আজ চারদিকে আলো দিচ্ছে। স্বামীহারা রেজিয়া তার মেধা আর মননে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এলাকায়। এই আলোর জগতে বেড়ে ওঠা বড় ছেলে মোহাম্মদ রায়হান উদ্দিন ফকির। পিভিএমএস (বার) সহকারী পরিচালক বিসিএস (আনসার) সদরদপ্তর, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কর্মরত আছেন। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পাড়া দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মেয়ে শাহনাজ পারভীন। ছোট ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান ফকির ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে কর্মরত। দ্বিতীয় কন্যা মনিরা পারুল উপজেলার রাইশিমুল দাখিল মাদ্রাসায়, তৃতীয় কন্যা সোনিয়া শান্তনা সিংরাউন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আর চতুর্থ কন্যা তানিয়া লিপি বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর গৌরীপুর উপজেলার প্রশিক্ষক পদে কর্মরত আছেন। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন উপলক্ষে গৌরীপুর উপজেলায় ২০২৩ সালে জয়িতা পুরস্কার পান তিনি। উলেস্নখিত বছরের ৯ ডিসেম্বর জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় তাকে সংবর্ধিত করা হয়।