শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১

তিস্তায় পানি না থাকায় চলে না নৌকা

স্কুল ড্রেসে হাঁটু পানি ভেঙে নদী পার হয় শিক্ষার্থীরা
ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি
  ১২ মে ২০২৪, ০০:০০
তিস্তায় পানি না থাকায় নীলফামারীর ডিমলা অংশে পায়ে হেঁটে নদী পার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা -যাযাদি

ভারত পানি না দেওয়ায় খরস্রোতা তিস্তা নদীতে স্বাভাবিক পানি প্রবাহটুকুও নেই। পানি না থাকার কারণে আর চালানো যাচ্ছে না নৌকা। ফলে স্কুল ড্রেস পরেই তিস্তার হাঁটু পানি ভেঙে পায়ে হেঁটেই নদী পার হচ্ছে চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। এতে বেশি বিপাকে পড়েছে নারী শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, মৌসুমি বৃষ্টির অভাবে সৃষ্ট তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্টের পাশাপাশি তিস্তা নদীতে মাছ ধরে, নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন এমন মানুষজন তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে কর্মহীন অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। নৌকার মাঝি কিয়ামুদ্দিন-(৫০) বলেন, তিস্তায় পানি না থাকায় নদী পারাপারে এখন আর নৌকা চালানো যায় না। তিস্তার বর্তমান হাঁটু এবং কোমড় পানি লোকজন হেঁটে পার হয়ে থাকেন। ডিমলা উপজেলার কিসামত ছাতনাই গ্রামের আজর উদ্দিন-(৪৫) বলেন, নদীতে পানি কম থাকায় মাছই পাওয়া যায় না, তাই মাছ মারতে নদীতে কেউ আসে না।

নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার দোহল পাড়া আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী দশম শ্রেণির মাহামুদা, অষ্টম শ্রেণির ঝরনা, সপ্তম শ্রেণির আঞ্জু বলে, নদীতে পানি নাই বলে নৌকা চলে না, তাই আমরা এভাবেই হাঁটু কোমড় পানি ভেঙে নদী পার হয়ে স্কুলে এসে ভেজা কাপড় পরেই ক্লাস করি। আমাদের সবার বাড়ি নদীর ওপারে কিসামত ছাতনাই চরে।

উপজেলার পূর্বছাতনাই গ্রামের নুর আলম-(৬০) বলেন, কিসামত ছাতনাই গ্রামে কোনো স্কুল না থাকায় চরের বাচ্চাগুলো অনেক কষ্ট করে স্কুলে আসা-যাওয়া করে।

এলাকার সচেতন ব্যক্তিদের মতে, খরা মৌসুমে ভারত গজলডোবা ব্যারাজের মধ্যে পানি আটকিয়ে রাখায় তিস্তা নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহটুকুও আর নেই। এর কারণে তিস্তা নদীর বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর।

তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও, সংগ্রাম পরিষদের নেতারা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় জলবায়ুর পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীবনজীবিকা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার উপক্রম।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া পত্তর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলার মতে, শনিবার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ ছিল প্রায় ৬০০০ হাজার কিউসেক। পাউবো'র সেচের আওতায় এ বছর ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। বোরো মৌসুমে কোথাও কোনো পানির সমস্যা হয়নি। তিস্তা নদী এলাকার সমস্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিস্তা নদীর প্রায় ৩০ কিলোমিটার ডানতীর বাঁধ নষ্ট হয়ে গেছে, এসব বাঁধ মেরামতের জন্য উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে