মাছুয়াঘোনা হ্যাচারিতে জরাজীর্ণ টিন

হালদায় নমুনা ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মাছ

প্রকাশ | ০৮ মে ২০২৪, ০০:০০

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
হালদায় সংগ্রহ করা মাছের ডিম থেকে রেনু উৎপাদনের জরাজীর্ণ মাছুয়াঘোনা হ্যাচারি -যাযাদি
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র ও বঙ্গবন্ধু মৎস্য হ্যারিটেজ হালদা নদীতে নমুনা ডিম ছেড়েছে মা মাছ। মঙ্গলবার সকালে ভাটা ও দুপুর জোয়ারের সময় নদীর কয়েকটি পয়েন্টে নৌকাপ্রতি ৫০০/৬০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করেন। সংগ্রহকারীরা এটাকে নমুনা ডিম বলে উলেস্নখ করলেও পরিবেশ পেলে রাতে পুরোদমে ছাড়তে পারে বলে জানান তারা। তবে নদীতে জাল, বাঁশের ভোরকা, বালতিসহ যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে নদীতেই অবস্থান করবেন কয়েকশ' ডিম সংগ্রহকারী। মঙ্গলবার দুপুর একটার দিকে ডিম সংগ্রহকারী মো. হোছেন যায়যায়দিনকে বলেন, ভোর সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার দিকে মদুনাঘাট ফাঁড়ির মুখে কয়েকজন ডিম সংগ্রহকারী অল্প পরিমাণ ডিম সংগ্রহ করেন। খবর পেয়ে শতাধিক নদীতে নামলেও আর পাওয়া যায়নি। তবে দুপুরে জোয়ারের সময় কাটাখালী মুখসহ কয়েকটি পয়েন্টে আবারও নমুনা ডিম পাওয়া যায়। তবে পরিমাণ সকালের চেয়ে অনেক খানি বেড়েছে। ডিম সংগ্রহকারী শফিক, আব্দুল কাদের, সোহেল, আব্দুল কাইয়ুম, দুলাল জানান, যদি বজ্রসহ বৃষ্টি হয় উজানের পানি নামে তাহলে মা মাছ পুরোদমে ডিম ছেড়ে দিতে পারে। এদিকে সকাল ৬টার দিকে হালদা নদীর রাউজান অংশের মইশকরম এলাকার চইল্যাখালিতে ডিম সংগ্রহকারী পাকিরাম দাশ, হরিরঞ্জন দাশ, সন্তোষ দাশ, সুজিত দাশ এবং সুনিলদাশ ১১ টি নৌকার মাধ্যমে ডিম সংগ্রহ করেন। প্রতিটি নৌকায় গড়ে দুই থেকে আড়াই বালতি করে ডিম সংগ্রহ করেছেন বলে জানান হালদা গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ৬ থেকে ১০ মে পর্যন্ত হালদায় ডিম ছাড়ার অমাবস্যার জোঁ চলছে। নিউজটি করা অব্দি নদীতে হাটহাজারী ও রাউজানের কয়েকশ' ডিম সংগ্রহকারী নদীতে ডিম সংগ্রহ করছেন। তবে ডিম ছাড়ার মৌসুমে ডিম সংগ্রহের পর পাকা ও মাটির কুয়ায় সরকারি ও বেসরকারিভাবে উৎপাদিত রেণুর পরিমাণের সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। সরকারিভাবে হ্যাচারির তথ্য পাওয়া গেলেও বেসরকারিভাবে সঠিক পরিমাণ পাওয়া যায় না। ডিম ও রেণুর পরিমাণ নির্ধারণ কল্পে মৎস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে যে তথ্য দেওয়া হয় প্রকৃত ডিম সংগ্রহকারীদের তথ্যের সঙ্গে অমিল পাওয়া যায়। দেখা যায়, সরকারিভাবে হ্যাচারির কুয়ার চেয়ে বেসরকারিভাবে মাটির কুয়াকে প্রাধান্য দেওয়া হয় বেশি। ডিম ও রেণুর পরিমাণ সঠিক নির্ধারণে অনেকেই কমিটিতে স্থানীয় প্রতিনিধিদের রাখার দাবি জানিয়েছেন। এদিকে মাছুয়াঘোনা হ্যাচারি, শাহ মাদারি ও মদুনাঘাট হ্যাচারির কুয়া কোনো মতে সংস্কার হলেও সবচেয়ে বেশি ডিম সংগ্রহকারীর ভিড় মাছুয়াঘোনা হ্যাচারির জরাজীর্ণ টিন পরিবর্তন করা হয়নি। সরেজমিনে দেখা গেছে, টিনের অনেক জায়গায় ছোটবড় ফুটোর সৃষ্টি হয়েছে। ডিম সংগ্রহকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যেখানে সরকার হালদাকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন সেখানে মৌসুমের আগে ডিম থেকে রেণু উৎপাদনের হ্যাচারিগুলো সংস্কার হয় ধীরগতিতে। তাও জোঁ চলাবস্থায়। বার বার বলার পরও হ্যাচারির জরাজীর্ণ টিন পরিবর্তন করা হয়নি। জানতে চাইলে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফারুক মায়েদুজ্জামান বলেন, 'এ বিষয়ে পিডি স্যারের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তিনি বলেছেন, এ বছর বরাদ্দ নেই আগামী বছর নতুন প্রকল্পের কাজ করা হবে।'