বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া টহল ফাঁড়িসংলগ্ন লতিফের ছিলা এলাকায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ওই এলাকা আগামী দু-তিন দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। সোমবার বেলা ১১টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশাসন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী আনুষ্ঠানিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দেন।
তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সবার সার্বিক সহযোগিতায় বনের আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। তবে, বনের আগুন ভিন্ন ধরনের। আগুন আবার জ্বলে উঠতে পারে। তাপপ্রবাহ চলছে। নিচে অক্সিজেন কম থাকা ও ওপরে বাতাস থাকায় আগুন জ্বলে উঠলে তা ছড়িয়ে পড়ে দ্রম্নত। তাই জেলা প্রশাসন, বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের স্থানীয় ইউনিটের সমন্বয়ে আরও দু-তিন পর্যবেক্ষণ করা হবে।
তিনি বলেন, বনের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। এটি সাধারণ কোনো আগুন নয়। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। এ কাজে সব সংস্থা থেকে সহযোগিতা পেয়েছি। সবাই মিলে একযোগে কাজ করে আগুন শতভাগ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তীক্ষ্নভাবে পর্যবেক্ষণ করছি, চারদিকে নজর রাখা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের মোংলা স্টেশন কর্মকর্তা মো. কায়মুজ্জামান জানান, সুন্দরবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে আরও দুই দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ধোঁয়ার কুন্ডলী দেখলে সেখানে দ্রম্নত পানি দেওয়া হবে।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষণ মিহির কুমার দো বলেন, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সোমবার ভোর থেকে তৃতীয় দফায় কাজ শুরু করা হয়। এখন আর কোথাও আগুন এমনকি ধোঁয়াও বের হচ্ছে না। কাজেই আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে যেহেতু বনের আগুন তাই বনবিভাগের পক্ষ থেকে আরও কয়েক দিন এই এলাকা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এই অগ্নিকান্ডে এখন পর্যন্ত কোনো বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।
এদিকে, প্রধান বন সংরক্ষক আমির হুসাইন চৌধুরী রোববার রাতে খুলনায় প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, আগুন লাগা বনের এই স্থানটিতে প্রাকৃতিকভাবে পরিবর্তন এসেছে। সে কারণে জীববৈচিত্র্যের কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে সেই বিষয় নির্ধারণ, আগুন নিয়ন্ত্রণের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য খুলনা অঞ্চলের সংরক্ষককে প্রধান করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ গবেষকদের নিয়ে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। যারা আগামী দশ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।