চুয়াডাঙ্গায় কন্যাশিশু হত্যায় মায়ের স্বীকারোক্তি

প্রকাশ | ০৭ মে ২০২৪, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, চুয়াডাঙ্গা
২৯ ফেব্রম্নয়ারি ২০২৪। সকাল আনুমানিক ৯টা। আট বছরের বয়সের মাইশা খাতুন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ভোগাইল বগাদি গ্রামে নানা বাড়িতে মোবাইল চার্জারের তার গলায় জড়িয়ে বিদু্যৎস্পৃষ্ট হয়েছে- এমন ইতিহাস নিয়ে স্বজনরা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে তাকে। এরপর সকাল ১০টায় হাসপাতালে মৃতু্য হয় শিশুটির। তারপর মৃত মাইশার মা পপি খাতুন বিদু্যৎস্পৃষ্ট হয়ে তার মেয়ের মৃতু্য হয়েছে এমন তথ্য সংবলিত একটি লিখিত অভিযোগ করলে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি ওইদিনই রাতে একটি অপমৃতু্যর মামলা রুজু করেন। মামলা নম্বর- ১৪। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আতিকুর রহমান জুয়েল রানা তদন্তকালে শিশুটির মৃতু্য বিষয়ে ঘটনাস্থল থেকে নানা ধরনের নেতিবাচক তথ্য পান। তাই মেয়েটির দুর্ঘটনামূলক স্বাভাবিক মৃতু্য নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। মরদেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও ডাক্তার উলেস্নখ করেন শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। অতঃপর শিশুটির নানা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে আলমডাঙ্গা থানায় এটি হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। মামলা নম্বর- ০১, তারিখ ০৩/০৫/২০২৪ খ্রি। এরপর ৫ এপ্রিল সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন। এ সময় শিশু মাইশার মা পপি খাতুনের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসেন। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি স্বেচ্ছায় এই হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেন। কেন এই হত্যাকান্ড ঘটানো হলো? তার কোনো সহযোগী ছিল কিনা?- এসব জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিজেই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন। পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান জানান, তদন্তে নিহত মাইশার মা পপি খাতুনেরর বৈবাহিক জীবন, অতঃপর বিবাহ বিচ্ছেদ এবং পরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে- যা এই হত্যাকান্ডের নেপথ্যে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। গ্রেপ্তার পপি আদালতে স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। নিহত মাইশা খাতুন (৮) কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের সাইফুল ইসলামের কন্যা। সোমবার সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস বিফ্রিংয়ে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি তুলে ধরেন পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান।