জমি দখলের অভিযোগ 'ষড়যন্ত্র' দাবি
এবার কুমিলস্নার সেই চেয়ারম্যানের পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশ | ০৭ মে ২০২৪, ০০:০০
স্টাফ রিপোর্টার, কুমিলস্না
কুমিলস্না সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর ইউনিয়নের গাবতলী গ্রামে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ফসলি জমি জবরদখল করে রাখার অভিযোগকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করা হয়েছে। জমি দখলের অভিযোগে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি পরিবারের সংবাদ সম্মেলনের দুইদিন পরই পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলার বিজয়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তানভীর হোসেন পারভেজ।
সোমবার বিজয়পুর ইউনিয়নের গাবতলী গ্রামের মসজিদের সামনে স্থানীয় এলাকাবাসী ও বিজয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন চেয়ারম্যান। এতে তিনি দাবি করেছেন- ফসলি জমি দখলের যে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে করা হয়েছে সেটি ছিল ষড়যন্ত্রমূলক। চেয়ারম্যান তানভীর হোসেন পারভেজ উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ-বিষয়ক সম্পাদকের পদে রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় এলাকাবাসী, কয়েকজন ইউপি মেম্বার, রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ শতাধিক ব্যক্তি ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যান পারভেজ বলেন, 'ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতি সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। নৌকা প্রতীক নিয়ে ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর বিজয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। ২০২৩ সাল থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ-বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছি। গত ৪ মে আমার নিজ গ্রামের বাসিন্দা সিলেট থেকে আসা কাঞ্চন মিয়া ও তার ছেলে মনির হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনেন। তারা বলেছেন- আমি নাকি তাদের কৃষিজমি জবরদখল করে রেখেছি ১০ বছর ধরে। আমার রাজনৈতিক শত্রম্ন থাকতেই পারে। তাই বলে এতো নিচুমানের মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ আনা হবে- সেটা আমি ভাবতেই পারি না।' তিনি বলেন, 'তাদের দাবি অনুযায়ী ১০ বছর ধরে আমি তাদের জমি বেদখল করে রেখেছি। কিন্তু আমি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব নিয়েছি ১ বছর ৪ মাস আগে। এর আগে ছিলাম প্রবাসে। তাহলে আমি চেয়ারম্যান হিসেবে কীভাবে দীর্ঘ ১০ বছর জোরপূর্বক জমি দখল করে রেখেছি?'
চেয়ারম্যান পারভেজ বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ আনা হয় কাঞ্চন মিয়ার ছেলে মো. সুমনকে নিজস্ব লোক দ্বারা তুলে নিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি। তার ছেলেকে পুলিশের সোপর্দ করার ঘটনা সত্যি। কিন্তু সেটা আমার লোকজন দ্বারা- তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। গত ৩-৪ মাসে এলাকার অনেকের মোটর সাইকেল চুরি হয়। গত ১৫ এপ্রিল জানতে পারি স্থানীয়রা মোটর বাইক চোর চক্রের ৪ সদস্যকে আটক করে মারধর করছে। পরে আমি এবং আমার পরিষদের দুইজন মেম্বার অলিউর রহমান ও রুই দাস পালকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। চোরদের জনতার রোষানল থেকে বাঁচিয়ে আমাদের হেফাজতে নেই। এরপর পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যায়। যেখানে আমি গিয়ে চোরদের জীবন রক্ষা করেছি জনতার হাত থেকে, সেখানে আমার বিরুদ্ধেই মিথ্যাচার করা হচ্ছে। আমি এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।'
চেয়ারম্যানের বড়ভাই মোতাব্বির হোসেন নাসির বলেন, 'যেই জমি জবরদখলের কথা তারা বলছেন ওই জমি অনেক বছর আগেই ক্রয় সূত্রে মালিক হয়েছেন স্থানীয় ইকবাল হোসেন ও আবদুর রবগংসহ মোট ৩২ জন। ওই ৩২ জনের দুইজন হলাম আমি এবং চেয়ারম্যান তানভীর হোসেন পারভেজ। কিন্তু কাগজপত্র না থাকার পরও তারা ওই জমি নিজেদের দাবি করে মিথ্যাচার করছে।'
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান ও তার ভাইয়ের দাবির প্রসঙ্গে অভিযোগকারী মনির হোসেন বলেন, 'আমরা কোনো মিথ্যাচার করিনি। বরং চেয়ারম্যানই এখন মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। পুরো জমির মালিক আমরা; আমাদের সব কাগজপত্র রয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার চাই।'