শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১

দাবদাহ-মাঠে পাকা ধান:প্রার্থীদের বড় চ্যালেঞ্জ ভোটারদের কেন্দ্রে আনা

ঝিনাইদহ সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন
তারেক মাহমুদ, ঝিনাইদহ
  ০৫ মে ২০২৪, ০০:০০
দাবদাহ-মাঠে পাকা ধান:প্রার্থীদের বড় চ্যালেঞ্জ ভোটারদের কেন্দ্রে আনা

প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৮ মে। ঝিনাইদহের ৬ উপজেলার মধ্যে এদিন সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। তবে, নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে এলেও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে কোনো উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। প্রার্থী ও সমর্থকরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাইকিংসহ পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে ভোটার এলাকা। সাধারণ ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ নেই।

ভোটারদের অনেকেই বলছেন, তীব্র দাবদাহ ও ধান গোছানোর কাজে ব্যস্ত থাকায় সাধারণ মানুষ ভোট নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। আবার অনেকে বলছেন, দেশের বৃহৎ দুটি দল বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বয়কট করায় একদলীয় এমন নির্বাচনে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না মানুষ। এমন অবস্থায় ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিত করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে প্রার্থীদের- বলছিলেন ভোটাররা। প্রার্থীরা বলছেন, কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় ভোট এলে মানুষের মধ্যে উৎসব-উদ্দীপনা কাজ করত। কিন্তু এখন তা আর নেই। দীর্ঘসময় ধরে একদলীয় ভোট প্রথা প্রচলন হওয়ায় এখন আর ভোট নিয়ে সাধারণ মানুষের মাথাব্যথা নেই।

ঝিনাইদহ শহরে আবুল কালাম আজাদ নামে এক ভোটার বলেন, 'আমি এই শহরের মানুষ। বেসরকারি একটি কোম্পানিতে ছোট্ট চাকরি করি। আমার এসব নিয়ে ভেবে লাভ কি? বাজারের জিনিসপত্রের দাম তারা কমাতে পারে না। তাদের নিয়ে না ভেবে নিজের পরিবার নিয়ে ভাবলে কাজে লাগবে। সংসদ নির্বাচনে দেখেছি ভোট করতে গিয়ে সাধারণ মানুষ হামলা মামলার শিকার হয়েছে।' ভোটের তিক্ত অভিজ্ঞতায় ক্ষোভ আর হতাশা প্রকাশ করেন এ ভোটার।

এদিকে ২৩ এপ্রিল প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ঝিনাইদহ ও কালীগঞ্জ শহরের মোড়ে মোড়ে পোস্টার ঝুলছে। নিচ দিয়ে কর্মব্যস্ত হাজার হাজার মানুষ ছুটে চললেও তাদের সময় নেই পোস্টারে দিকে এক নজর তাকিয়ে দেখার।

ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানায় এলাকার সহিদুল ইসলাম বলেন, ভোট আনন্দের জিনিস, কিন্তু বর্তমানে কোনো আনন্দ নেই। এক সময় নির্বাচন এলে শহর থেকে গ্রামের পাড়া-মহলস্নায় আনন্দ-উৎসব চলত। মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকানে হাট-বাজারে সব স্থানে ভোটের গল্প হতো। এখন আর এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। তার ধারণা, ভোটের মাঠে অধিকাংশ ভোটাররা যাবে না। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীক দেয়নি ঠিক আছে। তবে যারা ভোটে অংশগ্রহণ করছে সবাই তাদের দলের লোক। যার কারণে ভোটে কোনো প্রাণ নেই।

আসন্ন নির্বাচনে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ১৭ ইউনিয়নে মোট ভোট কেন্দ্র ১৬৫টি। মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৯০ হাজার ৯২৮। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা জেএম রশীদুল আলম, দলের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মাসুম, সদর উপজেলা আ'লীগের সভাপতি গোলাম ছরওয়ার খাঁন সউদ, যুবলীগ নেতা নুর এ আলম বিপস্নব এবং জেলা আ'লীগের ধর্ম-বিষয়ক সম্পাদক এসএম আনিচুর রহমান খোকা।

কালীগঞ্জ উপজেলার ১১ ইউনিয়নে মোট ভোট কেন্দ্র ৯১টি। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪৪ হাজার ৯২৪। এখানে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন ৫ জন। তারা হলেন- যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শিবলী নোমানী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল, উপজেলা আ'লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান মতি, কাস্টভাঙ্গা ইউনিয়ন আ'লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শমশের এবং জাতীয় শ্রমিক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সহ-সভাপতি ইমদাদুল হক সোহাগ।

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ বলেন, এই সরকারের আমলে সব ভোটের কদর কমে গেছে। ভোটাররা মাঠে যায় না। একতরফা ডামি নির্বাচন হয়। মানুষের কল্যাণ তো নয়ই, দেশের গণতন্ত্র ও অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত করাই সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্য।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী জেএম রশীদুল আলম জানান, ভোটারদের সমর্থন ভালো পাচ্ছি। তবে যে পরিমাণ রোদ সঙ্গে গরম বাতাস কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে