দুলাভাইকে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ছয় বছর আত্মগোপনে থাকার পর চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে শুক্রবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার দুপুরে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ত্রিনাথ সাহা। মিজানুর রহমান উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের বাকগ্রামের মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে। তিনি আদালতের রায়ের পর থেকে নিজের নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন ছদ্মবেশে আত্মগোপনে ছিলেন।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দর থানা এলাকায় আলকরা ইউনিয়নের ধোপাখিলা গ্রামের মৃত ইউসুফ ভূঁইয়ার ছেলে ইকবাল আহাম্মদ ভূঁইয়া স্ত্রী সুফিয়া আক্তার রিয়া ও শ্যালক মিজানুর রহমানসহ পাশাপাশি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ইকবাল পেশায় গাড়িচালক। তার জমানো অর্থ স্ত্রী ও শ্যালকের কাছে জমা ছিল। ২০০৮ সালে ইকবাল গ্রামের বাড়িতে ঘর নির্মাণের জন্য জমানো অর্থ স্ত্রী ও শ্যালকের কাছে চাইলে তাদের বিরোধ শুরু হয়। ওই বছরের ৩ অক্টোবর ইকবালকে চট্টগ্রামের ভাড়া বাসায় স্ত্রী রিয়া ও শ্যালক মিজানুর কৌশলে হত্যা করে। পরদিন ৪ অক্টোবর সকালে একটি মাইক্রোবাসে লাশ গ্রামের বাড়ি এলাকার রাস্তার ওপর ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্বজনরা লাশ পেয়ে দেখে শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় ইকবালের ভাই একরাম হোসেন বাদী হয়ে স্ত্রী সুফিয়া আক্তার রিয়া ও শ্যালক মিজানুর রহমানকে আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৯ সালে মিজানুর গ্রেপ্তার হন। ২০১২ সালে তিনি জামিনে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যান। ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন। এরপর থেকে তিনি নিজের নাম মিজানুর রহমান থেকে আবদুল কাদের পরিচয় দিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার গভীর রাতে ফেনী সদর একটি বাড়ি থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি ত্রিনাথ সাহা বলেন, মিজানুরের বিরুদ্ধে আদালতের সাজা পরোয়ানা থানায় আসার পর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তিনি নিজের নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন বসবাস করে আসছিলেন। পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তা শুক্রবার গভীর রাতে তাকে ফেনী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার শেষে শনিবার আদালতে সোপর্দ করেছে।