শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
কারপেটিং উঠে বেহাল জুলধা-ডাঙ্গারচর সড়ক

গৌরীপুর-হোমনা সড়কে যানজটের বিষফোঁড়া কড়িকান্দি বাজার

তিতাস (কুমিলস্না) প্রতিনিধি
  ০৩ মে ২০২৪, ০০:০০
গৌরীপুর-হোমনা সড়কে যানজটের বিষফোঁড়া কড়িকান্দি বাজার

কুমিলস্নার গৌরীপুর-হোমনা সড়কের যানজটের বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে তিতাসের কড়িকান্দি বাজার। অস্থায়ী স্ট্যান্ড এবং ফুটপাথ দখল করায় এ দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। বিষয়টি একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় উত্থাপন করা হলেও প্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। ফলে অবৈধ স্থাপনার দোকানিদের বিরুদ্ধে পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠছে।

সরেজমিন দেখা যায়, গৌরীপুর-হোমনা সড়কের কড়িকান্দি বাজারের উভয়পাশে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে ফলফলাদির ব্যবসা করে আসছে। এসব দোকনের সামনের দিকে পাঁচ থেকে সাত ফুট দখল করে ছামিয়ানা টানা আছে। দোকানের পাশাপাশি রাস্তা দখল করে ছামিয়ানা টাঙানো অংশে পণ্যের পশরা সাজানো হয়েছে। অনেক দোকানের সামনে মূল সড়কে দাঁড়িয়ে ক্রেতাদের পণ্য কিনতে হচ্ছে। বিভিন্ন স্থাপনা এবং কলাকান্দি ও আলীরগাঁও স্ট্যান্ড থাকায় এখানে প্রতিদিন যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে এ সড়কে চলাচলকৃত যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

এ পথের সিএনজি চালক দেলোয়ার হোসেন ও আব্দুল মমিন জানান, পিচঢালা সড়ক থেকে নামা যায় না, যাত্রী নামাতে গিয়ে পেছনের গাড়িকে সাইড দিতে হয়, দোকানের সামনে একটু গাড়ি থামালে দোকানের লোকজন মারার জন্য তেড়ে আসে।

যাত্রী হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকা শাহজালাল ও ফয়সাল আহমেদ বলেন, জনগণের রাস্তা দখল করে দোকান নির্মাণ করা বৈআইনি। প্রতিটি দোকানের মালিক তার নিজস্ব দোকানের পাশাপাশি দোকানের সামনের অংশ ভাড়া দিয়ে জনগণের চলাচলের ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে।

রাস্তা দখল করে থাকা দোকানের মালিক আনোয়ার হোসেন জানান, 'সিএনজি চালক সিএনজি লাগিয়ে আমার তেলপালটি ছিদ্র করে ফেলেছে। বছরখানেক আগে জুয়েল মোলস্নার কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা দিয়ে জায়গাটি ভাড়া নিয়েছি।'

মো. জুয়েল মোলস্না বলেন, 'জায়গাটিতে আমি নিজেই ব্যবসা করছি। যদি কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে আমি বিষয়টি দেখব।'

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, 'আমি একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক মিটিংয়ে কড়িকান্দি বাজারের অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকানের বিষয়টি আলোচনা করেছি। যারা দোকান দিয়েছে তাদের আমরা অনুরোধ করেছি দোকান সরিয়ে নিতে। না নিলে আমরা তাদের উচ্ছেদের ব্যবস্থা করব।'

কর্ণফুলী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা-ডাঙ্গারচর গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের কারপেটিং ওঠে বেহাল হয়ে পড়েছে। প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার এসড়ক সংস্কার কখন হয়েছে মনে নেই কারো। প্রতিদিন ট্রাক-মিনি ট্রাক ছাড়াও শতশত গাড়ি চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। সড়কের সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। জুলধা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের প্রায় ২০ হাজার মানুষের যাতায়াতের এ সড়ক ১০ বছর পূর্বে কারপেটিং করা হলেও সংস্কার হয়নি কখনো। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের কারপেটিং উঠে গেছে অনেক আগেই। বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দে ভরে গেছে। ছোট-বড় গর্তের ভেতর দিয়ে হেলেদুলে চলছে ট্রাক-মিনি ট্রাক, সাইকেল, মোটর সাইকেল, ইজিবাইক, ভ্যান-রিকশা, সিএনজিসহ ছোট-বড় অসংখ্য যানবাহন। এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন যাত্রীরা।

জানা যায়, জুলধা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ডাঙ্গারচর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটারজুড়ে এ সড়ক ৮-১০ বছর আগে পিচের কাজ করেছে, এরপর কখনো সংস্কার হয়নি। এখন পুরো সড়কের কারপেটিং উঠে শুধুই খানাখন্দক। সড়কের মাঝে রয়েছে বড়-বড় গর্ত। গাড়ি ও মানুষ চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে উঠলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা ও পটিয়া, উপজেলার হাজারো মানুষ ১১ নম্বর ঘাট দিয়ে চট্টগ্রাম শাহ্‌ আমানত বিমানবন্দরে যাতায়াত করেন প্রতিদিন। এ ছাড়া ডাঙ্গারচর ও এর আশপাশে গড়ে ওঠেছে অসংখ্য মিল কারখানা। এসব মিল কারখানার ভারী যানবাহন চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। যে কারণে প্রায় সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় ছোটখাট যানবাহনকে।

ডাঙ্গারচর এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম হৃদয় বলেন, ইউনিয়নের প্রধান সড়ক জুলধা-ডাঙ্গারচর সড়ক। দীর্ঘদিন এভাবে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকার পরও কোনো জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারের সড়ক সংশ্লিষ্ট কারো নজরে না আসার বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক।

কর্ণফুলী উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম বলেন, এ সড়কের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে, দুই পাশে মাটির কাজের পর কারপেটিং কাজ শুরু হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে