চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন বৈরাগ ইউনিয়নের উত্তর বন্দর দেয়াং পাহাড়ে চট্টগ্রাম বন্দরের পুরাতন সিগন্যাল অফিস দখলে চলছে মহোৎসব। স্থানীয় প্রভাবশালীরা শতাধিক শ্রমিক নিয়ে রাতভর পাহাড় কেটে নির্মাণ করছেন বসতঘর। এভাবে দখল করে নিচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরের পুরাতন সিগন্যাল অফিস ভবন ও পাহাড়ের বিশাল এলাকা। তবে এলাকায় গিয়ে জানতে চাইলে দায়ভার কেউ না নিয়ে একে অপরের ওপর দোষ চাপাতে ব্যস্ত তারা।
স্থানীয়রা জানান, প্রভাবশীল দুই থেকে তিনজন ব্যক্তি এসব কাজ করছেন। এতে পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি পাহাড় ধসে প্রাণহানির সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
জানা গেছে, ব্রিটিশ শাসনকালীন আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের উত্তর বন্দর দেয়াং পাহাড়ে তৎকালীন চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ চলাচল ও নিয়ন্ত্রণের জন্য পাহাড়ের চুড়ায় একটি সিগন্যাল অফিস নির্মাণ করেন। সেখান থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হতো বন্দরের জাহাজ চলাচল। পরে এসব হারিয়ে গেলেও ব্রিটিশ আমলের ওই ভবন এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছে স্ব-গৌরবে। ওই এলাকা এখনো চট্টগ্রাম বন্দরের মালিকানাধীন এবং বন্দরের একজন নিরাপত্তা কর্মীও রয়েছেন। কুরিয়ান ইপিজেড (কেইপিজেড) নির্মাণের সময় বন্দরের ওই জায়গা দখলের বাইরে রাখা হয়। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে ওই পাহাড়ের ঢালে নির্মাণ করা হচ্ছে টিনের বসতঘর। এজন্য শতাধিক শ্রমিক নিয়ে রাতভর চলে পাহাড় কাটা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, বন্দরের নিযুক্ত নিরাপত্তা কর্মী আক্তার কামাল, রাশেদ নুরসহ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এখানে পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করছেন। তবে রাশেদ নুর এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। অন্যদিকে আবদুল খান পাহাড় কাটার বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ করেছেন বলে জানান। এভাবে চলে একে অপরের প্রতি দোষ চাপানোর প্রবণতা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরের স্টেট অফিসার শিহাব উদ্দিন বলেন, 'আনোয়ারায় দেয়াং পাহাড়ে বন্দরের জায়গা দখল করে ৬০টি ঘর নির্মাণের খবর শুনেছি। কয়েক দিনের মধ্যে বন্দরের ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ওই জায়গা উদ্ধার এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।'
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইশতিয়াক ইমন বলেন, সরকারি জমি দখল ও পাহাড় কাটার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষকে জাননো হয়েছে।