নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দীঘলিয়া ইউনিয়নের লুটিয়া গ্রামে গত ১৩ জানুয়ারি কৃষক ওলিয়ার রহমান মোল্যা (৭১) খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে লুটিয়া গ্রামে বাড়িঘর ভাঙচুর, লুট এবং মাছের ঘের লুটপাটের মহোৎসব শুরু হয়েছে। এসব ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় লোহাগড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও এলাকায় মানুষের মধ্যে ভাঙচুর ও লুটপাট আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশের কোনো পদক্ষেপেই আতঙ্কগ্রস্ত মানুষজন আশ্বস্ত হতে পারছে না। অনেকেই ভয় ও আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া হয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, গত ১৩ জানুয়ারি উপজেলার দীঘলিয়া ইউনিয়নের চর দীঘলিয়া গ্রামে ওলিয়ার রহমান নামের একজন বৃদ্ধ খুন হন। খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৩ মার্চ চরমাওলী গ্রামের মৃত জাকু মোল্যার ছেলে যুবদল নেতা ইসলাম মোল্যার নেতৃত্বে একই গ্রামের ২০-২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী হ্যামার, লোহার রড, রামদা, সড়কি, বলস্নম নিয়ে লুটিয়া গ্রামের মোস্তফা কামাল ওরফে উকিলের পাকাবাড়ি ও শাফি খানের আধাপাকা বাড়ি লুটপাট করে ভেঙে দেয়। এ ঘটনায় ওই দুই পরিবারের প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
এরপর ওই একই সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে ২১ এপ্রিল রাতে জিকু বিশ্বাসের আধাপাকা টিনের ঘর লুটপাট শেষে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। এরপর ২৪ এপ্রিল রাতে নড়াইল জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য ফিরোজ শেখের বসতবাড়িতে লুটপাট ও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এতে ইউপি সদস্য ফিরোজ শেখের কমপক্ষে ১০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত ইউপি সদস্য ফিরোজ শেখ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, 'চরমাওলী গ্রামের মৃত জাকু মোল্যার ছেলে যুবদল নেতা ইসলাম মোল্যার নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী আমার বাড়িসহ আরও তিনটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট ও ভাঙচুর করে। অব্যাহত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে ওই এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয় ও আতঙ্কে অনেকেই বাড়িঘরে ফিরতে পারছেন না। এসব মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ওসি কাঞ্চন রায় বলেন, এসব ঘটনায় থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। আসামিরা পালিয়ে থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ওই এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বন্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে।