প্রখর রোদে কাজের পর 'কৃষক সেডেই' শান্তি
প্রকাশ | ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
'প্রচন্ড রোদ মাথায় নিয়ে সকাল থেকেই ক্ষেতে কাজ শুরু করতে হয়। তীব্র গরমে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিটস্ট্রোকে মানুষ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারপরও পরিবারের জীবন-জীবিকার কথা ভেবে প্রচন্ড তাপদাহে কাজ করতে হয়। কারণ আমরা কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। আর এতদিন আমাদের বিশ্রামাগারের কথা কেউ চিন্তা করেনি। এখন সরকার কৃষক সেড নির্মাণ করে দিয়েছে। প্রখর রোদে ক্ষেত-খামারে কাজ করার পর এখানেই একটু প্রশান্তির পরশ পাই। বিশ্রাম নিয়ে ক্লান্তি দূর হয়। তারপর আবার মাঠে নামতে পারি।'
কথাগুলো বলছিলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বালাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ভরতরায় (৫২)। শুধু তিনি নন, ওই গ্রামের পূবের বিলে একটি কৃষক সেড নির্মাণ করায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন অর্ধশত কৃষক। কারণ কাঠফাঁটা রোদে কাজের পর এখানেই তারা বিশ্রাম নিতে পারছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও সহযোগিতায় পূবেরবিলে দুইশতাংশ জমিতে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে কৃষক সেড। এখানে রয়েছে একটি কক্ষ ও চারদিকে বসার পাকা বেঞ্চ। সেই সঙ্গে রয়েছে নামাজ আদায়ের জায়গা, টিউবওয়েল, খাবারপানি ও টয়লেট। ২৫ ফিট লম্বা ও ২৫ ফিট চওড়া কৃষক সেডটি নির্মাণ করেছে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। এ ঘরের পাকা বেঞ্চসহ ফ্লোর দিয়ে প্রায় একশ' কৃষক একসঙ্গে বিশ্রাম নিতে পারেন। এছাড়া কৃষিযন্ত্র কাজ শেষে সেখানে নিরাপদে রাখতে পারছেন।
বালাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সুভাষ মন্ডল বলেন, 'পূবেরবিলে আমার দেড় বিঘা জমি আছে। এখানে প্রতিনিয়তই আমাদের কাজ করতে হয়। প্রচন্ড রোদে কাজ করতে কষ্ট হয়ে যায়। এখানে আমাদের বিশ্রামের কোন জায়গা ছিল না। সরকার কৃষক সেড নির্মাণ করায় আমরা বিশ্রাম নিতে পারছি। আগে মাঠে কাজ করে ক্লান্ত হয়ে বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম নিতাম। ক্ষেতে ওই দিন পূনরায় আসা হত না। এখন সেডে খাবার খেয়ে বিশ্রাম নেই। তারপর আবার ক্ষেতে কাজ করতে পারি।'
ওই বিলের সবজি চাষি আতর আলী বলেন, 'শুধু বিশ্রাম নয়, ঝড়বৃষ্টিতে এ সেডে আশ্রয় নিতে পারব। এখানে প্রয়োজনীয় কৃষিযন্ত্রপাতিও রাখাসহ খাবার পানি, টিউবওয়েল ও টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে। সেডটি কৃষকবান্ধব সেডে পরিনত হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।'
টুঙ্গিপাড়া কৃষি অফিসার রাকিবুল ইসলাম বলেন, পুবেরবিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পৈত্রিক জমি রয়েছে। সেটি পরিদর্শনের পর তিনি এখানে একটি কৃষক সেড নির্মাণের নির্দেশ দেন। পরে তার সহযোগিতায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস কৃষক সেড নির্মাণ করা হয়েছে। এতে কৃষকদের কর্মঘন্টা বৃদ্ধি পেয়েছে ও তারা উপকৃত হচ্ছেন। তাই কৃষক সেড প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি অনন্য উদ্যোগ।